প্রাকৃতিক প্রতিভার কারণেই এগিয়েছে আফগানিস্তান: রশিদ

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে কিছুদিন আগেও ছিল না কোনো মাঠ, কোনো সুবিধা।

তালেবান রাজত্বে তখন সব ধরণের খেলাই নিষিদ্ধ ছিল আফগানিস্তানে। কি মনে করে ক্রিকেটের প্রতি সদয় হয় তারা। গঠিত হয় আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু তখন খেলার কোনো মাঠও ছিল না তাদের। অলিগলিতে টেনিস বলে ক্রিকেট খেলাই ছিল সর্বোচ্চ। সেই দলটি আজ বিশ্ব ক্রিকেটে দাপটের সঙ্গেই লড়াই করছে। মূলত সহজাত প্রাকৃতিক প্রতিভা ছিল বলে কোনো সুবিধা না পেয়েও এতো দূর আসতে পেরেছেন বলে জানান আফগানিস্তান দলের টি-টোয়েন্টি সংস্করণের অধিনায়ক রশিদ খান।

কদিন আগেই বাংলাদেশের মাটিতে এসে টাইগারদের ওয়ানডে সিরিজে হারিয়ে দিয়েছে আফগানরা। অথচ এই সংস্করণে বরাবরই ভালো খেলে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে তো ২০১৫ সালের পর সিরিজ হেরেছে খুবই কম। সেই দলটিকে প্রথম দুই ম্যাচে দাপটের সঙ্গে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশের হুঙ্কার দিয়েছিল তারা। যদিও শেষ ম্যাচে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। এবার আফগানদের মিশন টি-টোয়েন্টি সিরিজে। যে সংস্করণে দারুণ একটি দল আফগানিস্তান।

বারবারই ঘুরে আসে সেই এক প্রসঙ্গ। এতো অল্প সুবিধা পাওয়ার পরও কীভাবে এগিয়ে গেলো আফগানিস্তান? রশিদের ভাষায়, 'আফগানিস্তানে আমাদের অনেক সহজাত প্রাকৃতিক প্রতিভা রয়েছে এবং এটা আমাদের আরও বিশেষ করে তোলে। একটি ছোট বাচ্চা অবস্থায় যখন আপনি ক্রিকেট খেলা শুরু করেন, তখন মৌলিক বিষয়গুলি শিখতে চান এবং আপনি ধীরে ধীরে আরও ভালো হতে শুরু করেন। কিন্তু আপনি যদি তরুণ হন এবং ক্রিকেটে ভালো হন এবং ভালো দক্ষতা ও স্বাভাবিক প্রতিভা থাকে এবং আপনি সেসব নিয়ে কাজ করেন তাহলে আপনি সেরাটা খেলতে পারবেন।'

প্রাকৃতিকভাবে প্রতিভাবান খেলোয়াড় তৈরি হয় বলেই দলটি দ্রুতি এগিয়েছে বলে মনে করেন রশিদ, 'হোমে আমাদের তেমন সুবিধা নেই। আমরা তেমন ঘরোয়া ক্রিকেটও করি না যা অনেক তরুণ তারকা তৈরি করবে। তবে ভালো কথা হলো আমাদের প্রাকৃতিক প্রতিভা আছে। তারা আফগানিস্তানকে এই পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আপনি যদি ১০/১৫ বছর আগের তাকান যখন অন্য সিনিয়ররা ক্রিকেট খেলতে শুরু করেছিল, তখন আমাদের কোনো সুবিধাও ছিল না, কোনো মাঠও ছিল না। আফগানিস্তানে কোনো ঘাসের মাঠ ছিল না, এমনকি কোনো টার্ফ উইকেটও না। সিমেন্টের উইকেটেও খেলেনি। তারা লড়াই করেছিল। কিন্তু একটাই জিনিস (প্রাকৃতিক প্রতিভা) ছিল যা আফগানিস্তানকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে গিয়েছে।'

'তাদের সেই দক্ষতা এবং সেই প্রতিভা ছিল। তারা টেনিস বল থেকে খেলোয়াড়দের এনে সরাসরি সেই উচ্চস্তরে খেলাতেন। তবে তাদের মনে দৃঢ়তা ছিল তারা দলের জন্য সেরাটা দিতে সক্ষম। তাদের ধৈর্য ছিল। আমি মনে করি এটা এমন কিছু যা এই স্তরে আফগানিস্তানের খেলোয়াড়দের আরও বিশেষ করে তুলেছে,' যোগ করেন রশিদ।

তবে বর্তমানে অনেক এগিয়েছে দেশটির সুযোগ সুবিধা। ঘরোয়া ক্রিকেটও আয়োজন করছে দলটি। তাতে তারা আরও এগিয়ে যাবে বলে বিশ্বাস করেন রশিদ, 'এখন আমরা ভালো সুযোগ-সুবিধা পেয়েছি। কোচ এবং আশেপাশের সমস্ত জিনিস পাওয়ার সুযোগ পেয়েছি যেখানে আপনি নিজেদের দেখাশোনা করতে পারেন এবং ভালো খেলোয়াড় হতে পারেন। যখন আমরা আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগ ফিরে পাব, তখন আমাদের ঘরোয়া কাঠামো ভালো হবে, এটা ভিন্ন স্তরের ক্রিকেট হতে চলেছে। বিভিন্ন ধরনের খেলোয়াড় আসবে। অনেক প্রাকৃতিক প্রতিভা রয়েছে এবং আপনাকে তাদের পালিশ করতে হবে। এমন সুযোগ দিতে হবে যেখানে তারা তাদের প্রতিভা প্রদর্শন করতে পারে।'

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago