এশিয়া কাপ ২০২৩

ভারতের কাছে রেকর্ড ব্যবধানে হারল কুলদীপে ঘায়েল পাকিস্তান

ছবি: এএফপি

বিরাট কোহলি ও কেএল রাহুলের অপরাজিত জোড়া সেঞ্চুরিতে রেকর্ড পুঁজি পেল ভারত। বিশাল লক্ষ্যের পেছনে ছুটে কখনোই সম্ভাবনা জাগাতে পারল না পাকিস্তান। ভারতীয় পেসারদের শুরুর তোপের পর কুলদীপ যাদবের স্পিনে তারা ঘায়েল হলো। পাকিস্তানিরা পেল ওয়ানডেতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে রানের হিসাবে সবচেয়ে বড় হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা।

কলম্বোয় এশিয়া কাপের সুপার ফোরে রিজার্ভ ডেতে গড়ানো বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে সোমবার ২২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতেছে ভারত। তাদের ছুঁড়ে দেওয়া ৩৫৭ রানের জবাবে ৩২ ওভার খেলে পাকিস্তান থামে মাত্র ১২৮ রানে। হারিস রউফ ও নাসিম শাহ চোটের কারণে ব্যাটিংয়ে নামেননি। তাই দলটির ৮ উইকেট পড়ার পরই একপেশে লড়াইয়ের ইতি ঘটে।

এই সংস্করণে দুই দলের সাক্ষাতে রান ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড এতদিন ছিল পাকিস্তানের দখলে। ২০১৭ সালে ওভালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে তারা ভারতকে হারিয়েছিল ১৮০ রানে। ছয় বছরের ব্যবধানে সেটাকে ছাড়িয়ে গেল এবারের ম্যাচের ফল।

পাকিস্তানের ব্যাটিংকে গুঁড়িয়ে একে একে টানা ৫ উইকেট নেন কুলদীপ। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ৫ উইকেট পেলেন তিনি। ৮ ওভারে তার খরচা ২৫ রান। কুলদীপের কাজটা সহজ করে দিয়েছিলেন ভারতের পেসাররা। ইনিংসের ১২ ওভারের মধ্যে তারা প্রতিপক্ষের তিন ব্যাটিং স্তম্ভকে সাজঘরে পাঠান। ইমাম উল হক স্লিপে ক্যাচ দেন জাসপ্রিত বুমরাহর বলে। সুইংয়ে অধিনায়ক বাবর আজমকে বোল্ড করেন হার্দিক পান্ডিয়া। মোহাম্মদ রিজওয়ানও উইকেটের পেছনে শিকার হন শার্দুল ঠাকুরের।

৪৭ রানে ৩ উইকেট হারানোর ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি পাকিস্তান। তাদের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৭ রান করেন ফখর জামান। ধুঁকতে ধুঁকতে ৫০ বল খেলেন তিনি। এছাড়া, আগা সালমান ও ইফতিখার আহমেদ উভয়ের ব্যাট থেকেই আসে ২৩ রান।

আগের দিনের ২৪.১ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৭ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিল ভারত। এদিনও বৃষ্টি বাগড়া দেওয়ায় খেলা শুরু হতে প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরি হয়। পরবর্তীতে পাকিস্তানের ইনিংসের মাঝপথেও আবহাওয়া ছিল বিরূপ। ফলে আরেক দফা খেলা বন্ধ ছিল এক ঘণ্টার বেশি সময়।

টস হেরে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৫৬ রান তোলে ভারত। ওয়ানডেতে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে এটাই কারও সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। এর আগেও একবার পাকিস্তানিদের বিপক্ষে একই সংখ্যক রান করেছিল ভারতীয়রা। ওই ম্যাচটি হয়েছিল ভারতের মাটিতে, ২০০৫ সালে।

আগের দিন ভারতের দুই ওপেনার শুবমান গিল ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা করেছিলেন জোড়া ফিফটি। তাদের গড়ে দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে এদিন মারমুখী ব্যাটিং করেন কোহলি ও রাহুল। তাদের ওপর তেমন কোনো চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি পাকিস্তান, তুলে নিতে পারেনি কোনো উইকেট। তৃতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ২৩৩ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহ পাইয়ে দেন তারা। ১৯৪ বলে গড়া এই জুটিটি এশিয়া কাপের ইতিহাসে যে কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি।

৯৪ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ১২২ রানের ইনিংস খেলেন ম্যাচসেরা কোহলি। ৫৫ বলে হাফসেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর উত্তাল হয়ে ওঠে তার ব্যাট। তিনি তিন অঙ্কের ম্যাজিকাল ফিগারে পৌঁছান ৮৪ বলে। সেঞ্চুরির পথে ওয়ানডেতে দ্রুততম ১৩ হাজার রানের রেকর্ডও নিজের করে নেন এই ডানহাতি তারকা ব্যাটার। এই সংস্করণে এটি কোহলির ৪৭তম সেঞ্চুরি। তার সামনে আছেন কেবল একজন। ৪৬৩ ম্যাচে রেকর্ড ৪৯টি সেঞ্চুরি রয়েছে কোহলির স্বদেশি কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারের।

একাদশে ফিরেই ব্যাট হাতে দারুণ পারফর্ম করেন রাহুল। এটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। ৬০ বলে ফিফটি করার পর তিনি শতরানে পৌঁছান ঠিক ১০০ বলে। শেষ পর্যন্ত ১০৬ বলে ১১১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তার ইনিংসে ছিল ১২ চার ও ২ ছক্কা।

Comments

The Daily Star  | English

CA terms trade deal with US ‘a decisive diplomatic victory’

"Our negotiators have demonstrated remarkable strategic skill,” said Yunus

2h ago