দুটি ইস্যু নিয়ে সংশয়

বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে অস্বস্তিতে বিসিবি

সোমবার দিন পার হয়েছে নানা গুঞ্জন আর নাটকীয়তায়। ছুটি কাটিয়ে ফিরেই মধ্যরাতে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বাসায় যান প্রধান কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে, সেখানে উপস্থিত ছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল

বুধবারই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাওয়ার কথা বাংলাদেশ দলের। শুক্রবার গৌহাটিতে অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়ে যাবে সাকিব আল হাসানদের বিশ্বকাপ মিশন। অথচ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দল ঘোষণার ব্যাপারে কোন নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি।

সোমবার দিন পার হয়েছে নানা গুঞ্জন আর নাটকীয়তায়। ছুটি কাটিয়ে ফিরেই মধ্যরাতে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বাসায় যান প্রধান কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে, সেখানে উপস্থিত ছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও।

কি আলাপ হয়েছে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায়নি। তবে দল সংক্রান্ত আলাপই যে হয়েছে তা অনুমেয়। জানা গেছে মূলত দুটি ইস্যু নিয়েই সংশয় কাটাতে পারছে না টিম ম্যানেজমেন্ট। একমত হতে পারছে না সব পক্ষ।

প্রথমটি অবশ্যই তামিম ইকবালের চোট। পীঠের চোট কাটিয়ে লম্বা সময় পর ফিরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ওয়ানডে খেলেন তিনি। বৃষ্টিতে এক ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ার পরেরটিতে ব্যাটিং করেন অভিজ্ঞ ওপেনার। খেলেন ৪৪ রানের ইনিংস। তবে ওইদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে জানান, ব্যাটিং উপভোগ করলেও অস্বস্তিও বোধ করেছেন। তার চোটের যে ধরণ তাতে টানা খেলার নিশ্চয়তাও দিতে পারছেন না তামিম।

অস্বস্তি বোধ করায় তৃতীয় ওয়ানডে থেকে ছুটি নিয়ে নেন সাবেক অধিনায়ক। কোচ ও অধিনায়ক চান বিশ্বকাপে পুরো ফিট স্কোয়াড। কিন্তু তামিমের ব্যাপারে কেউই এই নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।

জানা গেছে, নিজের অবস্থান তামিমও নির্বাচকদের জানিয়েছেন। তার চোট যেকোনো সময় গুরুতর  হতে পারে এটা পরিষ্কার করেছেন তিনি। এই জায়গাতেই তৈরি হয়েছে জটিলতা।

দল ঘোষণায় দেরির দ্বিতীয় কারণ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। জায়গা হারানোর পর লম্বা সময় পেরিয়ে নিউজিল্যান্ড সিরিজে ফেরেন তিনিও। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭৬ বলে করেন ৪৯ রান। যদিও দল হেরে যায় ৮৬ রানে। রান পাওয়ায় মাহমুদউল্লাহকে দলে রাখর প্রবল চাপ আছে।

তবে তাকে দলে রাখতে গেলে তিন তরুণের যেকোনো একজনকে বাদ দিতে হবে। তামিম যেহেতু চোট নিয়ে সংশয় কাটাতে পারছেন না, ব্যাকআপ ওপেনার একজন প্রয়োজন। তানজিদ হাসান তামিমের জায়গায় তাই মাহমুদউল্লাহকে রাখার সুযোগ কম।

এছাড়া আছে দুটি জায়গা। বাংলাদেশ যদি একজন পেসার কম নিয়ে যায় তাহলে মাহমুদউল্লাহর জায়গা হয়ে যায়। কিন্তু লম্বা বিশ্বকাপে কেবল চার পেসার নিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে। বাংলাদেশ দলে কোন পেস অলরাউন্ডারও নেই। প্রায় সব ম্যাচেই নামতে হবে অন্তত তিন পেসার নিয়ে। চোট এড়াতে ৯ ম্যাচে পেসারদেরও খেলাতে হবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে। একজন পেসার কম রাখলে টুর্নামেন্টের মাঝপথে তৈরি হতে পারে নতুন সংকট। 

আরেকটি বিকল্প হচ্ছে অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার শেখ মেহেদীকে না নিয়ে মাহমুদউল্লাহকে নেওয়া। এখানে মুশকিল হচ্ছে মেহেদীর বোলিং গত এশিয়া কাপ থেকেই বেশ কার্যকর। মাহমুদউল্লাহ আবার বল হাতে তেমন ধারালো নন। মেহেদীকে বাদ দিলে ৬ষ্ঠ বোলিং অপশনের ঘাটতি থেকে যাবে একাদশে।

তাওহিদ হৃদয় পাঁচ, মুশফিকুর রহিম ছয় আর মেহেদী হাসান মিরাজ সাতে খেললে একাদশে মাহমুদউল্লাহর জায়গা পাওয়া কঠিন। সেক্ষেত্রে তার বয়সের একজনকে বদলি ফিল্ডার হিসেবে বিবেচনা করাও শক্ত। এসব বিষয়ে কীভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে চলছে অনেক বিস্তর আলোচনা।

মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডে চলাকালীন বিশ্বকাপের দল দেওয়া হতে পারে। তার আগে হতে পারে আরও সভা। বিশ্বকাপ যাত্রার একদিন আগেও এমন অনিশ্চয়তা তাই বিসিবির জন্য চরম অস্বস্তির। এই ব্যাপারে দল সংশ্লিষ্ট কেউ মন্তব্য করতেও রাজী হননি। 

Comments