বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টেস্ট

নিউজিল্যান্ডের ৩ উইকেট তুলে শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ পৌঁছে গেল শক্ত অবস্থানে। শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সিলেট টেস্টে জয় পাওয়ার লক্ষ্য পূরণে তারা এখন দারুণ অবস্থানে।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

৩৩২ রান তাড়া করতে নামা নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের প্রথম ওভারেই আঘাত করলেন শরিফুল ইসলাম। উল্লাসের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিলেন তাইজুল ইসলাম। তিনি ফেরালেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান কেইন উইলিয়ামসনকে। ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এই উইকেটের পর হেনরি নিকোলসকেও মেহেদী হাসান মিরাজ টিকতে না দিলে বাংলাদেশ পৌঁছে গেল শক্ত অবস্থানে। শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সিলেট টেস্টে জয় পাওয়ার লক্ষ্য পূরণে তারা এখন দারুণ অবস্থানে।

শুক্রবার ম্যাচের চতুর্থ দিনের চা বিরতি পর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭ ওভারে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩৭ রান। ক্রিজে আছেন ওপেনার ডেভন কনওয়ে ৫১ বলে ১৮ রানে। পাঁচে নামা ড্যারিল মিচেল খেলছেন ১৩ বলে ৬ রানে। জয়ের জন্য বাংলাদেশের চাই ৭ উইকেট। সফরকারীদের করতে হবে আরও ২৯৫ রান। এই সমীকরণ মেলানো ভীষণ কঠিন তাদের জন্য। কারণ, টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে ২৫০ রানের বেশি তাড়া করে জেতার রেকর্ড তাদের আছে স্রেফ চারটি। তার একটি অবশ্য বাংলাদেশের বিপক্ষে।

স্কোরবোর্ডে কোনো রান জমা হওয়ার আগেই নিউজিল্যান্ড হারায় উইকেট। শরিফুলের অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরের বলে টম ল্যাথাম খোঁচা মেরে ক্যাচ দেন উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে। বলাই বাহুল্য, ডাক মেরে ফেরেন ল্যাথাম। দশম ওভারে বিপজ্জনক উইলিয়ামসনকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল। শেষ মুহূর্তে রিভিউ নিয়েছিলেন উইলিয়ামসন। কিন্তু কাজ হয়নি, বরং তা নষ্ট হয়। ২৪ বলে ১১ রানে থামেন তিনি। ত্রয়োদশ ওভারে নিকোলস শিকার হন অফ স্পিনার মিরাজের। সুইপের চেষ্টায় গড়বড় করে শর্ট ফাইন লেগে নাঈম হাসানের তালুবন্দি হন নিকোলস। ৮ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ২ রান।

এর আগে দ্বিতীয় সেশনের শুরুর দিকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস থামে ৩৩৮ রানে। মিরাজ সাতে নেমে ঠিক ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন। ৭৬ বলের ইনিংসে তিনি মারেন ৫ চার। তার ফিফটি ছাড়াও আগের দিন সেঞ্চুরি করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি ১৯৮ বলে খেলেন ১০৫ রানের ইনিংস। অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম এদিন সকালের সেশনে হাফসেঞ্চুরি করে থামেন ১১৬ বলে ৬৭ রানে।

এই দফায় বাংলাদেশের ১০ উইকেটের সাতটিই নেন নিউজিল্যান্ডের স্পিনাররা। সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিতে এজাজ প্যাটেলের খরচা ১৪৮ রান। ইশ সোধি দুটি ও গ্লেন ফিলিপস একটি উইকেট শিকার করেন। এদিন সকাল থেকেই টার্নের দেখা মিলছে উইকেটে। আগের দিনের চেয়ে উইকেটও তুলনামূলক বেশি স্পিনবান্ধব দেখাচ্ছে।

৩ উইকেটে ২১২ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় ৭ উইকেটে ৩০৮ রান নিয়ে। এরপর আর ৩০ রান যোগ করতে পারে শান্তর দল। সেশনের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট প্রাপ্তির উল্লাসে মাতে নিউজিল্যান্ড। সোধির গুগলি করে বাড়তি বাউন্স। কাট করতে গিয়ে সুবিধা করতে পারেননি নাঈম। শর্ট লেগে ক্যাচ লুফে নেন ল্যাথাম। ১১ বলে ৪ রান আসে নাঈমের ব্যাট থেকে।

পরের ওভারে তাইজুলও সাজঘরে ফিরে যান। এজাজের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে বড় শট খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু টাইমিং হয়নি ঠিকঠাক। মিড অনে ক্যাচ তালুবন্দি করেন নিকোলস। ৬ বল খেলে রানের খাতা শূন্যই থেকে যায় তাইজুলের।

একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের বিদায় নিতে দেখছিলেন মিরাজ। দলের ৯ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর তিনি ফিফটি স্পর্শ করেন ৭৬ বলেন। এরপর আর কোনো বল মোকাবিলায় সুযোগ পাননি। এজাজকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পড হন শরিফুল। ৭ বলে ১০ রান করে শরিফুল আউট হলে বাংলাদেশের ইনিংসের ইতি ঘটে।

Comments