ঘুরে দাঁড়াতে বাংলাদেশের দেখানো পথে হাঁটবে ‘সুপার মোটিভেটেড’ নিউজিল্যান্ড
লম্বা সময় ধরে দেশের বাইরে নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা। বিশ্বকাপের জন্য প্রায় দুই মাস থাকতে হয়েছে ভারতে। সেখান থেকে টেস্ট সিরিজ খেলতে তারা এসেছেন বাংলাদেশে। 'হোম সিকনেসে' তাই প্রবলভাবে কাবু করার কথা। বাংলাদেশের কাছে প্রথম টেস্টে বিধ্বস্ত হওয়ার সঙ্গে এর সম্পর্কও খুঁজতে পারেন কেউ কেউ। তবে বাড়ি ফেরার আগের এই সময়টা বরং ঘুরে দাঁড়ানোর একটা বাড়তি প্রেরণা দেখছেন ইশ সোধি। তারমতে লম্বা ভ্রমণের শেষটা রাঙাতে দলের সবাই 'সুপার মোটিভেটেড'। আর ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজে নিচ্ছেন বাংলাদেশ দল থেকেই!
সিলেট টেস্টে প্রথম ইনিংস পর্যন্ত টানটান লড়াইয়ে থাকলেও পরের ইনিংসে আর পেরে উঠেনি কিউইরা। কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে তাদের ১৫০ রানের বড় ব্যবধানে বিধ্বস্ত করে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
বড় হার নিয়ে ঢাকায় ফেরার পর সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলনে আসে ব্ল্যাক ক্যাপসরা। প্রস্তুতিতে নামার আগে দলের ভাবনা জানাতে ক্যামেরার সামনে আসেন লেগ স্পিনার সোধি। তিনি জানান, এই কন্ডিশনে কীভাবে ব্যাটিং-বোলিং করতে হয় তা শিখছেন বাংলাদেশের কাছ থেকেই, 'সিলেটে প্রথম টেস্ট হেরে পরাজিত দল নিয়ে আসা কঠিন। কিন্তু টেস্ট যত এগুচ্ছিল আমরা ছন্দ পাচ্ছিলাম। আমি অনেকদিন টেস্ট খেলি না। কাজেই এই কন্ডিশনে কাজটা কঠিন। বাংলাদেশ যেভাবে খেলেছে আমাদের বিধ্বস্ত করে দিয়েছে। তারা আমাদের দেখিয়েছে এইসব কন্ডিশনে সফল হওয়ার পথ আসলে কেমন। আশা করছি এই পথ অনুসরণ করব পরের ম্যাচে।'
গত কয়েক মাস ধরে সাদা বলের ক্রিকেটে ভালো সময়ই কেটেছে নিউজিল্যান্ডের। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশে এসে ওয়ানডে সিরিজ জিতে গিয়েছে তারা। বিশ্বকাপের শুরু থেকেই দলটি ছিল উজ্জীবিত। প্রথম চার ম্যাচে পায় টানা জয়। পরে পথ হারালেও ঠিকই সেমিতে জায়গা করে নেয়। সেমিতে গিয়ে অবশ্য আর পারেনি।
সোধি, রাচিন রবীন্দ্রের মতন কয়েকজন বিশ্বকাপের বেশ আগে থেকেই দলের সঙ্গে ঘুরছেন। বিশ্বকাপের পরও ঠাসা সূচির কবলে তারা। লম্বা এই সফর ঢাকা টেস্ট দিয়েই শেষ হতে চলেছে। শেষটা হচ্ছে বলেই দলের খেলোয়াড়দের বাড়তি প্রেরণা পেতে দেখছেন তিনি, 'ভালোভাবে শেষ করতে পারা হবে খুব সুন্দর। আপনি জানেন অনেক অনেক দিন ধরে আমরা ঘরের বাইরে। গত ছয় মাস বেশ সফলতা ছিলো। অনেক আবেগময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। উত্থান-পতন রোলার কোস্টারের মতন ছিলো। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়া, সেখানে হারা। যে পরিমাণ সময় সবাই পরিবার ও বন্ধুদের থেকে দূরে থেকেছে সেই অবস্থায় শক্তভাবে শেষ করতে পারা হবে দারুণ। আমার মনে হয় ছেলেরা সুপার মোটিভেটেড।'
সোমবার টিম হোটেল থেকে মাঠে যাওয়ার পথে কিউই ক্রিকেটারদের আলোচনার বিষয় ছিল মিরপুরে ঘুরে দাঁড়ানো আর জয় নিয়ে দেশে ফেরা, 'হোটেল থেকে বাসে করে মাঠে আসার পথে আলোচনা শুরু হয়েছে যে কীভাবে এই কন্ডিশনে ভালো করা যায়। প্রতিপক্ষ তাদের হোম কন্ডিশনে কতটা ভালো গত টেস্টে দেখা গেছে। কাজেই সবাই খুব অনুপ্রাণিত ঘুরে দাঁড়াতে। আশা করছি এখান থেকে যাওয়ার আগে ট্রিট পাব। তারপর ফিরে গিয়ে চেনা ঘ্রাণ নেব। নিউজিল্যান্ডের চমৎকার আবহাওয়ায় দ্রুতই ফিরে যাব।'
মিরপুরে সোধির আছে বড় সাফল্য। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৯ রানে ৬ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। উইকেটটা একটু হলেও চেনা তার। তবে টেস্ট সব মিলিয়ে বাইশগজ কেমন থাকবে সেই ধারণা নিতে আরেকটু অপেক্ষার পক্ষে এই লেগ স্পিনার, 'কন্ডিশনটা আমাদের বুঝতে হবে। এটা টার্ন করে কি করে না। এখানে আগ্রাসী হবো না রক্ষণাত্মক থাকব এটা বুঝতে হবে। দ্বিতীয় টেস্টের জন্য মুখিয়ে আছি। তার আগে দুদিন খুব ভালো অনুশীলনের সুযোগ থাকছে।'
'আমার মনে হয় বাতাসে আর্দ্রতা এখানে বেশি। জানি না বৃষ্টি হবে কিনা। কিন্তু মনে হচ্ছে সারফেস আরেকটু নরম থাকবে। ঘাস একটু বেশি থাকতে পারে। আগামী দুদিনে আরও ভালো করে বোঝার চেষ্টা করব।'
Comments