আর্শদিপ-আবেশের তোপে বিধ্বস্ত দক্ষিণ আফ্রিকা
এক ঝাঁক তারকা খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দিয়ে এবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যায় ভারত। আর সে কারণেই হয়তো দলে জায়গা মিলে আর্শদিপ সিং ও আবেশ খানের। আর সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগান এ দুই পেসার। শুরু থেকেই রীতিমতো রুদ্ররূপে আবির্ভাব হন আর্শদিপ। বল হাতে পেয়ে তোপ দাগান আবেশও। তাতে সে অর্থে লড়াইয়ের পুঁজিও পায়নি প্রোটিয়ারা। সাদামাটা লক্ষ্য সহজেই পেরিয়ে যায় ভারতীয় দল।
রোববার জোহানেসবার্গের দ্য ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৭.৩ ওভারে মাত্র ১১৬ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে এটাই সর্বনিম্ন রান তাদের। জবাবে ২০০ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে লোকেশ রাহুলের দল।
ভারতের জয়ের মূলনায়ক আর্শদিপ, আর পার্শ্ব নায়ক আবেশ। আর্শদিপ ছাঁটাই করেন প্রোটিয়াদের টপ অর্ডার। মিডল অর্ডার ধসাতেও রাখেন ভূমিকা। প্রথম চারটি শিকারই তার। শেষ পর্যন্ত ১০ ওভার বল করে ৩৭ রানের খরচায় পান ৫টি উইকেট। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এদিন প্রথম উইকেটের দেখা পান এই পেসার। ৮ ওভার বল করে ২৭ রানের বিনিময়ে ৪টি উইকেট নেন আবেশ। অপর উইকেটটি পান কুলদিপ যাদব।
এদিন টস জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকাই। আগে ব্যাটিং বেছে নেন প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। কিন্তু ব্যাটারদের ব্যর্থতায় বুমেরাং হয় তার সিদ্ধান্ত। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই বল হাতে নিয়ে জোড়া ধাক্কা দেন আর্শদিপ। রিজা হ্যান্ডরিকস ও রাসি ফন ডার ডুসেন কেউই খুলতে পারেননি রানের খাতা। ফলে শুরুতেই বড় চাপে পড়ে স্বাগতিকরা।
কার্যত সেই চাপ থেকে আর উতরে উঠতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। অধিনায়ক মার্করামকে নিয়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার টনি ডি জর্জি। সেটও হয়ে গিয়েছিলেন এ দুই ব্যাটার। ৩৯ রানের জুটিও গড়েন। কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারেননি কেউই। টনিকে উইকেটরক্ষক রাহুলের ক্যাচে পরিণত করে এ জুটি ভাঙেন আর্শদিপ।
পরের ওভারে ফিরে পাঁচ নম্বরে নামা হেনরিক ক্লাসেনকেও বোল্ড করে প্রোটিয়াদের বড় বিপদে ফেলে দেন আর্শদিপ। সে বিপদ আরও বাড়ান মার্করাম। আবেশ খানের করা ঠিক পরের ওভারের প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে যান প্রোটিয়া অধিনায়ক। পরের বলে উইয়ান মুল্ডারকেও এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন আবেশ। ফলে দলীয় ৬২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা।
তবে ভাগ্যের আর পরিবর্তন হয়নি। নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট পড়েছে। আন্দিল ফেলাকায়ায়ো কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা চালান। মূলত তার ব্যাটেই একশ রান পার করতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। সর্বোচ্চ ৩৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে । এছাড়া ২৮ রান করেন টনি। এ দুই ব্যাটার ছাড়া দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন কেবল মার্করাম (১২)।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ব্যক্তিগত ৫ রানে ওপেনার রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে হারায় বাংলাদেশ। এরপর শ্রেয়াস আইয়ারকে নিয়ে দলের হাল ধরেন সাই সুদর্শন। ৮৮ রানের জুটিতে দলের জয় এক প্রকার নিশ্চিতই করে ফেলেন দুই ব্যাটার। তবে জয় থেকে ছয় রান দূরে থাকতে ফেলাকায়ায়োর শিকার হন শ্রেয়াস। পয়েন্টে ডেভিড মিলারের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন তিনি। এরপর বাকি কাজ তিলক ভার্মাকে নিয়ে শেষ করেন সুদর্শন।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন সুদর্শন। ৪৩ বলে ৯টি চারের সাহায্যে এই রান করেন তিনি। ৪৫ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫২ রান করেন শ্রেয়াস।
Comments