রাবাদার তোপের পর রাহুলের প্রতিরোধ
দিনের শুরুটা ছিল কেবলই দক্ষিণ আফ্রিকার। নন্দ্রে বার্গারকে নিয়ে ভারতীয় শিবিরে তোপ দাগান পেসার কাগিসো রাবাদা। তাতে বড় চাপেই পড়ে গিয়েছিল সফরকারী দলটি। তবে উইকেটরক্ষক-ব্যাটার লোকেশ রাহুলের ব্যাটে লড়াই চালিয়েছে রোহিত শর্মার দল।
মঙ্গলবার সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্টস পার্কে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষে ৮ উইকেটে ২০৮ রান তুলেছে ভারত। বাজে আবহাওয়ার কারণে প্রথম দিনে খেলা হয়েছে কেবল ৫৯ ওভার।
সকালে আউটফিল্ড ভিজা থাকায় নির্ধারিত সময়ে টস অনুষ্ঠিত হয়নি। আধা ঘণ্টা দেরিতে হয় টস। আর টস ভাগ্য যায় স্বাগতিকদের পক্ষে। ভারতীয়দের ব্যাটিংয়ে পাঠায় প্রোটিয়ারা। মেঘলা আবহাওয়ায় শুরু থেকেই দারুণ সুইং আদায় করে নেন পেসাররা। ব্রেক থ্রু তুলে নিতেও খুব একটা সময় লাগেনি। ১৪ বলে ৫ রানে আউট হয়ে যান অধিনায়ক রোহিত। রাবাদার বলে পুল করতে গিয়ে সীমানায় বার্গারের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই নিয়ে ১৩ বার রোহিতকে আউট করলেন রাবাদা।
হতাশ করেন যশস্বী জসওয়ালও। ইতিবাচকভাবে শুরু করলেও বার্গারের বলে উইকেটরক্ষক কাইল ভেরেইনের গ্লাভসে ধরা পড়েন। ৩৭ বলে ১৭ রান করেন যশস্বী। পরের ওভারে ফিরে শুবমান গিলকেও তুলে নেন বার্গার। গিলের গ্লাভস ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে গেলেও আম্পায়ার শুরুতে আউট দেননি। রিভিউ নিয়ে সাফল্য পায় প্রোটিয়ারা। ২৪ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত।
এরপর কিছুটা ভাগ্যের ছোঁয়া পায় ভারত। শ্রেয়াস আইয়ার ও বিরাট কোহলি দুই ব্যাটারই জীবন পান। রাবাদার বলে শ্রেয়াসের ক্যাচ ছাড়েন মার্কো ইয়ানসেন। আর বার্গারের বলে কোহলির ক্যাচ মিস করেন টনি ডি'জর্জি। এই জীবন কাজে লাগিয়ে জুটি গড়ে তোলেন এ দুই ব্যাটার।
চতুর্থ উইকেটে ৬৮ রানের জুটি গড়েন কোহলি ও শ্রেয়াস। এই জুটি ভাঙেন রাবাদা। লাঞ্চের পর ফিরে শ্রেয়াসকে বোল্ড করে দেন এই পেসার। ৫০ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩১ রান করেন শ্রেয়াস। শ্রেয়াসের বিদায়ের পর উইকেটে নামেন রাহুল। কিন্তু এরমধ্যেই বড় ধাক্কা খায় ভারত। কোহলিকে উইকেটরক্ষকের ক্যাচে পরিণত করেন রাবাদা। ৬৪ বলে ৩৮ রান করেন কোহলি। ফলে বড় চাপে পড়ে যায় সফরকারীরা।
খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রবিচন্দ্রন অশ্বিনও। রাবাদার চতুর্থ শিকারে পরিণত হন তিনি। অতিরিক্ত ফিল্ডার মাল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ব্যক্তিগত ৮ রানে। পরে শার্দুল ঠাকুরকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন রাহুল। ৪৩ রানের জুটিও গড়েন। কিন্তু রাবাদার বলে এলগারের হাতে ধরা পড়েন শার্দুল। শেষ হয় ৩৩ বলে ২৪ রানের ইনিংস। ফাইফার তুলে নেওয়ার পাশাপাশি তিন সংস্করণ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫০০ উইকেটের মাইলফলকও ছুঁয়ে ফেলেন রাবাদা।
এরপর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জাসপ্রিত বুমরাহও। লেজের এই ব্যাটার ১৯ বল খেললেও ১ রান করেন ইয়ানসেনের বলে বোল্ড হয়ে যান। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন রাহুল। আলোক স্বল্পতায় দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে ৭০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ১০৫ বলে ১০টি চার ও ২টি ছক্কায় এই রান করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। তার সঙ্গী মোহাম্মদ সিরাজ অবশ্য রানের খাতা খুলতে পারেননি।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ৪৪ রানের খরচায় ৫টি উইকেট পান রাবাদা। ৫০ রানের বিনিময়ে ২টি শিকার বার্গারের। একটি উইকেট পান ইয়ানসেন।
Comments