শাহাদাত-নজিবউল্লাহর ব্যাটে জয়ে শুরু চট্টগ্রামের
জাকির হাসানের ফিফটিতে লড়াকু পুঁজিই পেয়েছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। বোলারদের সৌজন্যে শুরুটাও ভালো করেছিল তারা। তবে শাহাদাত হোসেন দিপু ও নজিবউল্লাহ জাদরানের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে সেই পুঁজি হয়ে যায় মামুলী। ফলে দারুণ এক জয়ে আসর শুরু করল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যলেঞ্জার্স। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২ উইকেটে ১৭৭ রান করে সিলেট। জবাবে ৯ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছায় চট্টগ্রাম।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে অবশ্য শুরুটা ভালো হয়নি চট্টগ্রামের। ব্যক্তিগত ২ রানেই তানজিদ হাসানকে সাজঘরে ফেরান রিচার্ড এনগাভারা। তিন নম্বরে নেমে আরেক ওপেনার আভিস্কা ফার্নান্ডোর সঙ্গে দলের হাল ধরেন ইমরানউজ্জামান। ৪৩ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। এই জুটি ভাঙেন নাজমুল ইসলাম অপু। আভিস্কাকে বোল্ড করে দেন তিনি। ২৩ বলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৯ রান করেন এই লঙ্কান ওপেনার।
এরপর বল হাতে নিয়ে প্রথম বলেই ইমরানকে আউট করে চট্টগ্রামকে চাপে ফেলে দেন সিলেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে মিড উইকেট সীমানায় ক্যাচ দেন ইয়াসির আলীর হাতে। এরপর শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে দলের হাল ধরেন আফগান ক্রিকেটার নজিবউল্লাহ জাদরান। শুরুতে দেখে শুনে ইনিংস মেরামত করে ধীরে ধীরে চড়াও হতে থাকেন এ দুই ব্যাটার।
তবে এ দুই ব্যাটারকেই ফেরানোর সুযোগ ছিল আগেই। ব্যক্তিগত ১৮ রানে ফিরতে পারতেন শাহাদাত। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সহজ ক্যাচ তুলে দিলেও ধরতে পারেননি তাজিম সাকিব। আর ব্যক্তিগত
২৬ রানে বোলার বেনি হাওয়েলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। সে সুযোগ লুফে নিতে পারেননি এই অলরাউন্ডারও। শেষ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন ১২১ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তারা।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬১ রানে ইনিংস খেলেন অপরাজিত থাকেন নজিবউল্লাহ। ৩০ বলে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কায় এই রান করেন তিনি। শাহাদাত খেলেন হার না মানা ৫৭ রানের ইনিংস। ৩৯ বলে সমান ৪টি করে চার ছক্কায় এই রান করেন তিনি।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে শুরুটা দারুণ করে সিলেট। দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও মোহাম্মদ মিঠুন গড়েন ৬৭ রানের জুটি। তবে রানের গতি সে অর্থে বাড়াতে পারেননি তারা। ৪০ বলে আসে দলীয় ফিফটি। ইনিংসের নবম ওভারে নিহাদুজ্জামানের বলে চড়াও হতে গিয়ে লংঅনে আভিস্কা ফার্নান্ডোর হাতে ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফেরেন গত আসরের সর্বোচ্চ স্কোরার শান্ত। ৩০ বলে ৭টি চারের সাহায্যে করেন ৩৬ রান।
এরপর মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে দলের হাল ধরেন জাকির হোসেন। ২৮ রানের জুটি গড়ে কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক ইমরান উজ্জামানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন মিঠুন। ২৮ বলে ৪০ রান করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস। এরপর উইকেটে নামেন হ্যারি ট্যাক্টর। জাকিরের সঙ্গে দলের হাল ধরেন এই অলরাউন্ডার। গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৮২ রানের জুটি। তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি পায় তারা।
এক প্রান্ত আগলে রেখে অসাধারণ ব্যাটিং করেন জাকির। ক্যাম্ফারের করা ১৪তম ওভারে টানা তিনটি বাউন্ডারি আদায় করে নেন। আল-আমিন হোসেনের করা ১৮তম ওভারেও তিনটি বাউন্ডারি মারেন। শেষ পর্যন্ত ৪৩ বলে খেলেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭০ রানের হার না মানা এক ইনিংস। এই রান করতে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন তিনি। ২০ বলে ২টি চারের সাহায্যে ২৬ রান করে অপরাজিত থাকেন ট্যাক্টর।
Comments