ইমরুলের টানা দ্বিতীয় ফিফটি, শেষ ওভারে নায়ক ফোর্ড
মুশফিকুর রহিমের রেকর্ডময় ইনিংসে লড়াকু পুঁজিই পেয়েছিল ফরচুন বরিশাল। সেই পুঁজি নিয়ে দারুণ লড়াই করেন ফরচুন বরিশালের বোলাররা। তবে শেষ দিকে স্নায়ুচাপ ধরে রাখতে পারেননি। শেষ ওভারে ছক্কা ও চার মেরে নায়ক বনে যান ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার ম্যাথিউ ফোর্ড। অসাধারণ এক জয় পেয়ে যায় কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্স।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্স। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬১ রান করে বরিশাল। জবাবে ১ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালোই করেছিল কুমিল্লা। এবারের বিপিএলে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে ভালোই শুরু করেছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে ওয়ালালাগের বলে মিডউইকেটে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ১৫ বলে ১৮ রান আসে তার ব্যাট থেকে। পরের বলে তাওহিদ হৃদয়কেও ফিরিয়ে দেন ওয়ালালাগে। টানা দুই বলে উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে কুমিল্লা।
এরপর লিটন দাসের সঙ্গে দলের হাল ধরেন ইমরুল কায়েস। ৩০ রানের জুটিও গড়েন। তবে এদিনও বেশ সংগ্রাম করেছেন অধিনায়ক লিটন। শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকা এই ব্যাটার আউট হন সৈয়দ খালেদ আহমেদের বলে। স্লগ করতে গিয়ে মিডঅনে আব্বাস আফ্রিদির হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ১৯ বলে ১৪ রান আসে অধিনায়কের ব্যাট থেকে।
ইনিংস লম্বা করতে পারেননি রোস্টন চেজও। ১৫ বলে ১৩ রান করে ওয়ালালাগের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন এই ক্যারিবিয়ান। তবে এক প্রান্ত আগলে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন ইমরুল। দারুণ কিছু শট খেলে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটি তুলে নেন তিনি। তবে ফিফটির পরপরই আউট হয়ে যান তিনি। ৪১ বলে করেন ৫২ রান। ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস।
জাকের আলী নেমেই হাত খুলে খেলতে থাকেন। আব্বাসের টানা দুই বলে দুটি ছক্কা হাঁকান তিনি। হাত খুলে খেলতে থাকেন খুশদিল শাহও। ৭ বলে ১৪ রান করার পথে পান দুটি জীবন। শেষ ওভারে রানআউট হন এই পাকিস্তানি। তখন কিছুটা শঙ্কায় পরে গিয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্স। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে দিলেন ফোর্ড। প্রথম বলে দুই রান পান। এরপর টানা দুই বলে দুই বাউন্ডারি। যার প্রথমটি ছক্কা। এরপর জয় পেতে আর কোনো সমস্যা হয়নি তাদের। ৪ বলে ১টি করে চার ও ছক্কায় ১৩ রানের ক্যামিও খেলেন এই ক্যারিবিয়ান। ২৩ বলে অপরাজিত থাকেন জাকের।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বরিশাল। ওপেনিংয়ে নেমে খালি হাতেই ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর দ্রুত ফিরে যান প্রিতম কুমারও। দারুণ কিছু শটে আশা দেখিয়েছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। তানভির ইসলামকে ক্যাচিং অনুশীলন করিয়ে ফিরেছেন ব্যক্তিগত ১৯ রানে।
এরপর সৌম্য সরকারকে নিয়ে দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম। চতুর্থ উইকেটে ৬৬ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। সৌম্যকে বোল্ড করে দিয়ে এ জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৩১ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪২ রান করেন সৌম্য। এরপর এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন মুশফিক। শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৬২ রানের ইনিংস খেলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ৪৪ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস।
এই ইনিংসের পথে বেশ কিছু মাইলফলক স্পর্শ করেন মুশফিক। বিপিএলে এদিন দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে তিন হাজারি ক্লাবে নাম লেখান তিনি। একই সঙ্গে এই আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসেবে আবারও টপকে ফেলেন তামিম ইকবালকে। বিপিএলে ১০৮ ইনিংসে মুশফিকের রান এখন ৩০৩৮। ৯১ ইনিংসে তামিমের সংগ্রহ ৩০২৪ রান।
কুমিল্লার পক্ষে ৪ ওভারে ৩২ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন মোস্তাফিজ। এছাড়া দুই বিদেশি বোলার রোস্টন চেজ ও ম্যাথিউ ফোর্ডে শিকার করেন ২টি করে।
Comments