‘শান্তর চেষ্টার কমতি ছিলো না’
গত বছর বিপিএল দিয়েই দেশের ক্রিকেটে নিজের অবস্থান পোক্ত করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে পাঁচশোর বেশি রান করে হন টুর্নামেন্ট সেরা। ধাপে ধাপে বাংলাদেশের তিন সংস্করণের অধিনায়ক হয়ে তার আজকের অবস্থানে পৌঁছাতে যা একটা ভিত হিসেবেও কাজ করেছে। এবার বিপিএলে বাঁহাতি ব্যাটার তাই নেমেছিলেন একদম থিতু অবস্থায়। জাতীয় দলে সব সংস্করণে অপরিহার্যতা নিয়ে। টুর্নামেন্টের মাঝপথে তিন সংস্করণের নিয়মিত অধিনায়ক হওয়ার খবরও পান তিনি। অথচ এবার তার বিপিএল পারফরম্যান্স হলো একদম উল্টো, ভুলে যাওয়ার মতন।
টুর্নামেন্ট জুড়ে ভীষণ বিবর্ণ ছিলো শান্তর ব্যাট। সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে ১২ ম্যাচ খেলে একটিও ফিফটি করতে পারেননি। মাত্র ১৪.৫৮ গড় আর স্রেফ ৯৩.৫৮ স্ট্রাইকরেটে করতে পেরেছেন মোটে ১৭৫ রান। জাতীয় দলের নির্ভরশীল একজন ব্যাটারের কাছে গোটা টুর্নামেন্ট এমন নিষ্প্রভ থাকা বেশ বিস্ময়কর।
সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন জানান শান্ত রান না পাওয়ায় দল হিসেবে ভুগেছেন তারা। তবে শান্তর নিজের চেষ্টার কোন কমতি ছিলো না, 'আপনারাও জানেন ও কত বড় খেলোয়াড়। সম্প্রতি ও তিন সংস্করণে জাতীয় দলের অধিনায়ক হয়েছে। আমাদেরও আশা ওর উপর অনেক বেশি ছিলো। যেটা বললাম ক্রিকেট... ও চেষ্টা কম করেনি। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে কিন্তু হয়নি। সব কিছু তো সবার হাতে থাকে না যে চাইলে শক্তভাবে ফিরবে। চেষ্টার কোন কমিত ছিলো না ওর। দল হিসেবে আমরা ওর সার্ভিসটা মিস করেছি। আমরা জানি সে সেরা খেলোয়াড়, আশা করে সে কামব্যাক করবে।'
একের পর এক ম্যাচ ব্যর্থ হলে এক ধরণের মানসিক ক্লান্তি চলে আসা স্বাভাবিক। শান্ত তবু নিজেকে ভারমুক্ত আর সতেজ রেখে নেমেছিলেন, তাও হয়নি কেন সেই উত্তর জানা নেই মিঠুনের, 'চেষ্টার কোনো কমতি ছিলো না। প্রত্যেকটা ম্যাচে আমি যখন ওর সঙ্গে কথা বললাম সতেজভাবে ইতিবাচক মানসিকতায় আসত। পরে আবার ফেইল করত। একটা সময় হতাশা আসতেই পারে। শেষের দিকে চেষ্টা করেছে আরেকটু নির্ভার থাকতে। কারণ চেষ্টা করে যখন হচ্ছিলো না তখন একটু নির্ভার হওয়াটাই আমার মনে হয় ভালো। হয়নি, কেন হয়নি আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব না। আশা করছি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রানে ফিরবে।'
জাতীয় দলের নেতৃত্ব পর্যায়ে থাকলেও সিলেটে শান্তকে দেওয়া হয়নি নেতৃত্ব। মাশরাফি বিন মর্তুজার অধিনায়ক করে সহ-অধিনায়ক করা হয় মিঠুনকে। দুর্বল ফিটনেস নিয়ে পাঁচ ম্যাচ খেলে মাশরাফি টুর্নামেন্ট ছাড়লে মিঠুন পান নেতৃত্ব। সাবেক অধিনায়ক ও ক্রিকেট বিশ্লেষক মোহাম্মদ আশরাফুলের মতে, সিলেটের দলে অধিনায়কত্ব না পেয়েই মানসিকভাবে বিমর্ষ হয়ে পড়েন শান্ত। এই প্রসঙ্গের প্রশ্ন মিঠুন শান্তর জন্য তোলা রাখতে বলেন, 'এটা আমি বলতে পারব না। এটা শান্তর জন্য জমিয়ে রাখেন, ওর গলা (ঠান্ডাজনিত কারণে কথা বলছেন না শান্ত) ঠিক হলে উত্তর দেবে।'
Comments