সাইফুদ্দিন-মেয়ার্সের অন্তর্ভুক্তিকে ‘গেম চেঞ্জার’ বলছেন তামিম
প্রথম ছয় ম্যাচের তিনটা হেরে নড়বড়ে শুরু করেছিল ফরচুন বরিশাল। বিশেষ করে বোলিং ও আগ্রাসী ব্যাটিং না পাওয়া নিয়ে ধুঁকছিল দলটি। টুর্নামেন্টের মাঝপথে দলটিতে যোগ দিয়ে বোলিংয়ে ধার বাড়ান মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। আরও পরে যুক্ত হয়ে দলের খোলনলচে বদলে দেন কাইল মেয়ার্স। এই দুজনের অন্তর্ভুক্তিকে শিরোপা জেতার পথে গেম চেঞ্জার বলছেন তামিম ইকবাল।
ইনজুরির কারণে এবার বিপিএলের শুরু থেকে ছিলেন না সাইফুদ্দিন। পিঠের চোট কাটিয়ে প্রথম ছয় ম্যাচ পর দলে আসেন তিনি। এরপর টানা ৯ ম্যাচ খেলে বরিশালের পেস বোলিং আক্রমণের ত্রাতা হয়ে উঠেন ডানহাতি পেসার।
বিশেষ করে ডেথ ওভারে তার উপর নির্ভর করেছিলো দলটি। ৯ ম্যাচ খেলে টুর্নামেন্টের চতুর্থ সর্বোচ্চ ১৫ উইকেট নিয়েছেন সাইফুদ্দিন। প্রতি উইকেটের জন্য খরচ করেছেন ১৫.৬৬ রান করে। ওভারপ্রতি ৬.৮১ করে রান দিয়েছেন ডেথ ওভারে বল করেও। এছাড়া ব্যাটিংয়েও কিছু ম্যাচে রেখেছেন ভূমিকা।
ফাইনালে প্রথম ৩ ওভারে রান দিলেও শেষ ওভারে দারুণ বল করেন সাইফুদ্দিন। তিনটি ওয়াইড, একটি নো বল দিলেও আন্দ্রে রাসেলের মতন ব্যাটারকে আটকে রেখে দেন স্রেফ ৭ রান।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে প্রথমবার বিপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়ে বরিশাল অধিনায়ক তামিম সাইফুদ্দিনের অন্তর্ভুক্তির গুরুত্ব তোলে ধরলেন, 'আমার মনে হয়, সাইফউদ্দিনের অন্তর্ভুক্তি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা শিরোপা জিতেছি কিন্তু ওই শেষ ওভারটা অবিশ্বাস্য ছিল। ওখানে যদি ১৫ রানও হয়ে যেত, আমরা হয়তো ১৭০ রান তাড়া করতাম। খেলাটা ভিন্ন হয়ে যেত। সাইফ উদ্দিনের অন্তর্ভুক্তিটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা এই বাজিটা ধরেছি। কারণ কেউ নিশ্চিত ছিল না, সাইফউদ্দিন খেলতে পারবে কি পারবে না। আমার মতে, আমরা সেই সুযোগটা দারুণভাবে নিয়েছি এবং সে খুব ভালোভাবে প্রতিদান দিয়েছে। আমার মনে হয়, তার অন্তর্ভুক্তিটা আমাদের জন্য গেম চেঞ্জার ছিল। শুরুর দিকে আমাদের বোলিং অতটা শক্তিশালী ছিল না। ও আসার পরে... (শক্তি বেড়েছে)।'
সাইফুদ্দিনের চেয়েও তিন ম্যাচ কম খেলেছেন মেয়ার্স। ৬ ম্যাচে ৪০.৫০ গড় আর ১৫৭.৭৯ স্ট্রাইকরেটে ২৪৩ রান করেছেন তিনি। প্রতি ম্যাচেই নতুন বল হাতে নিয়ে এনে দিয়েছেন উইকেট। ১৫.১১ গড় আর ওভারপ্রতি মাত্র ৫.৯১ করে রান দিয়ে নিয়েছেন ৯ উইকেট। আর তিন-চার ম্যাচ খেলতে পারলে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার দৌড়েই সবচেয়ে এগিয়ে থাকতেন এই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার।
গেম চেঞ্জার হিসেবে তামিম মেয়ার্সকে বলছেন অসাধারণ, 'আমরা যখন শুরুতে দলটা সাজাই মোহাম্মদ আমির, ফখর জামান আসার কথা, শোয়েব মালিক ছিল। এদেরকে রেখে আমরা দল করেছিলাম। খেলা শুরুর ৩-৪ দিন আগে যখন ওই ক্রিকেটারদের ২ জন না আসে, তখন কিন্তু পুরোটা ওলট-পালট হয়ে যায়। মানুষজন তামিম, মুশফিক, (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ, মিরাজদের নিয়ে কথা বলেছে কিন্তু বিদেশিদের প্রভাবটাও কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ থাকে। বিশেষ করে আমাদের বোলিং বিভাগে। ওখান থেকে আমরা জিতেছি, হেরেছি...।'
'এরপর যখন আমরা কাইল মেয়ার্সকে নেওয়ার সুযোগ পেলাম... কারণ সে নতুন বলে বোলিং করে এবং যেভাবে ব্যাটিং করে, আমার মতে তার অন্তর্ভুক্তি অসাধারণ ছিল। আসার পর থেকে ব্যাটিং বা বোলিং, কোনো না কোনো কিছুতে ওর প্রভাব ছিল। প্রতিটি ম্যাচে সে দুটিই করেছে। তার পারফরম্যান্সটা আমাদের জন্য অনেক বড় বিষয় ছিল।'
Comments