কুলদিপের ঘূর্ণিতে প্রথম দিনেই দারুণ অবস্থানে ভারত
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু সেই ভালোটা খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেননি কুলদিপ যাদব। ঘূর্ণির মায়াজাল বিছিয়ে প্রথম ছয় উইকেটের পাঁচটিই তুলে নেন এই স্পিনার। এরপর লেজ ছাঁটাইয়ের কাজ করেন আরেক স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তাতে প্রথম দিনেই দারুণ অবস্থানে রয়েছে ভারত।
বৃহস্পতিবার ধর্মশালায় সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টের প্রথম দিনে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ২১৮ রানে গুটিয়ে গেছে ইংল্যান্ড। এরপর নিজেদের ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ১ উইকেটে ১৩৫ রান তুলেছে ভারত। যদিও ৮৩ রানে পিছিয়ে আছে তারা, তবে হাতে ৯টি উইকেট থাকায় বড় লিডের স্বপ্নই দেখছে স্বাগতিকরা।
ম্যাচটি এদিন ছিল কয়েক জন খেলোয়াড়ের জন্য মাইলফলকের ম্যাচ। ১০০তম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন ভারতীয় স্পিনার অশ্বিন ও ইংলিশ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার জনি বেয়ারস্টো। এছাড়া সব সংস্করণ মিলিয়ে ভারতের হয়ে ১৫০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামেন কুলদিপ যাদবও। মাইলফলকের ম্যাচটি রাঙিয়ে রেখেছেন কুলদিপ ও অশ্বিন। কুলদিপ ফাইফার তুলে নেন। আর অশ্বিন নেন চার উইকেট।
অথচ দিনটি ইংলিশদেরই হতে পারতো। ৩ উইকেটে ১৭৫ রান তুলেছিল তারা। তবে কুলদিপের জাদুকরী বোলিংয়ের পর অশ্বিনের ঘূর্ণিতে শেষ দিকে স্কোরবোর্ডে মাত্র ৪৩ রান যোগ করতেই শেষ সাত উইকেট হারায় তারা। ফলে কোনোমতে দুইশ পার করা পুঁজি নিয়েই প্রথম ইনিংস শেষ করতে হয় সফরকারীদের।
তবে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই ছিল ইংল্যান্ডের। জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট ওপেনিংয়ে জুটিতে আসে ৬৪ রান। ডাকেটকে ফিরিয়ে ওপেনিং জুটি ভাঙেন কুলদিপ। অবশ্য দারুণ ক্যাচ ধরেন শুবমান গিল। এরপর লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার ঠিক আগে ব্যক্তিগত ১১ রানে অলি পোপকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন কুলদিপ। ইংলিশদের সংগ্রহ তখন ঠিক ১০০।
লাঞ্চের পরে কিছুটা আগ্রাসী ব্যাট চালান ক্রলি। কয়েক দফা আউট হতে হতে বেঁচে যান। তবে দলীয় ১৩৭ রানে কুলদিপের বলে বোল্ড হয়ে যান ক্রলি। তার বিদায়ের পর শততম টেস্ট খেলতে নামা জনি বেয়ারস্টোর সঙ্গে দলের হাল ধরেন জো রুট। তবে স্কোরবোর্ডে ৩৮ রান যোগ করতেই কুলদিপের চতুর্থ শিকারে পরিণত হন বেয়ারস্টো। এরপরই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ইংলিশদের ব্যাটিং লাইনআপ।
পরের ওভারে রবীন্দ্র জাদেজা এসে তুলে নেন রুটকে। হতাশ করেন অধিনায়ক বেন স্টোকসও। রানের খাতা খোলার আগেই তাকে ফিরিয়ে ফাইফার পূরণ করেন কুলদিপ। এরপর শেষ দিকে এসে জ্বলে ওঠেন অশ্বিন। লেজের চার ব্যাটারকেই ফেরান তিনি। তবে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ফেন ফোকস। তার ব্যাটেই দুইশ পার করে দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৯ রানের ইনিংস খেলেন ক্রলি। ১০৮ বলে ১১টি চার ও ১টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস। ইনিংসের একমাত্র ফিফটিও এটি। এছাড়া বেয়ারস্টো ২৯, ডাকেট ২৭, রুট ২৬ এবং ফোকস ২৪ রান করেন।
ইংলিশদের ১০টি উইকেট তুলে নেন ভারতীয় স্পিনাররা। এরমধ্যে ৭২ রানের খরচায় ৫টি উইকেট তুলে নিয়েছেন কুলদিপ। ৫১ রানের বিনিময়ে ৪টি শিকার অশ্বিনের। অপর উইকেটটি পান জাদেজা।
এরপর নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ সূচনা করেন দুই ওপেনার যশস্বী জসওয়াল ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা। শুরু থেকেই আগ্রাসী ঢঙ্গে ব্যাটিং করে ৫৬ বলে ফিফটি তুলে নেন জসওয়াল। অধিনায়কের সঙ্গে গড়েন শতরানের জুটি। এপ্রর দলীয় ১০৪ রানে শোয়েব বশিরের বলে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন। এর আগে এই স্পিনারের এক ওভারে তিনটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন জসওয়াল। শেষ পর্যন্ত ৫৮ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৭ রান করেন এই ওপেনার।
তবে আরেক প্রান্ত ঠিকই ধরে রাখেন রোহিত। তিনিও তুলে নিয়েছেন ফিফটি। ৮৩ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫২ রান তুলে অপরাজিত রয়েছেন। তার সঙ্গী শুবমান গিল অপরাজিত আছেন ২৬ রানে। ৩৯ বলের ইনিংসে তিনি মেরেছেন সমান দুটি করে চার ও ছক্কা।
Comments