হারার আগে লড়াই করলেন রিশাদ-তাসকিন
স্কোরবোর্ডে রান যখন মাত্র ৩২ ততোক্ষণে লেজ বেরিয়ে যায় বাংলাদেশের। দলের শীর্ষ ছয় ব্যাটার তখন সাজঘরে। বড় হার তখন চোখ রাঙাচ্ছে বাংলাদেশকে। এরপর কী দারুণ ব্যাটিংই না করলেন রিশাদ হোসেন। গড়লেন দেশের হয়ে ছক্কার নতুন রেকর্ডও। তার বিদায়ের পর গর্জে ওঠে তাসকিন আহমেদের ব্যাটও। দারুণ লড়াই চালিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারেননি তারা। হারতেই হয় বাংলাদেশকে।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৮ রানে হেরে সিরিজ খোয়াল বাংলাদেশ। কুশল মেন্ডিসের ৮৬ রানে ভর করে ৭ উইকেটে ১৭৪ রান করে লঙ্কানরা। এরপর নুয়ান তুশারার হ্যাটট্রিক সহ ফাইফারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি স্বাগতিকরা।
তবে হারটা আরও বড় হতে পারতো বাংলাদেশের। যদি না রিশাদ হোসেন ও পরে তাস কিন আহমেদ জ্বলে না উঠতেন। স্বীকৃত ব্যাটাররা যখন ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছেন সেখানে ঝড়ো ফিফটি তুলে নেন রিশাদ। তাসকিনও খেলেন দারুণ এক ক্যামিও। তবে তুশারার সেই হ্যাটট্রিকে কোণঠাসা দলটি আর বের হতে পারেনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১৭৪/৭ (ধনাঞ্জয়া ৮, কুসল ৮৬, কামিন্দু ১২, হাসারাঙ্গা ১৫, আসালাঙ্কা ৩, ম্যাথিউস ১০, শানাকা ১৯, সামারাবিক্রমা ৭*; শরিফুল ১/২৮, তাসকিন ২/২৫, মেহেদি ০/২২, মোস্তাফিজ ১/৪৭, রিশাদ ২/৩৫, সৌম্য ০/১১)।
বাংলাদেশ: ১৯.৪ ওভারে ১৪৬ (লিটন ৭, সৌম্য ১১, শান্ত ১, তাওহিদ ০, মাহমুদউল্লাহ ০, জাকের ৪, শেখ মেহেদী ১৯, রিশাদ ৫৩, তাসকিন ৩১, শরিফুল ৪, মোস্তাফিজ ৭*; ম্যাথিউজ ০/৫, বিনুরা ০/৩৯, ধনাঞ্জয়া ১/২, তুশারা ৫/২০, হাসারাঙ্গা ২/৩২, থিকসানা ১/৩৫, শানাকা ১/১১)।
ফলাফল: শ্রীলঙ্কা ২৮ রানে জয়।
সিরিজ: শ্রীলঙ্কা ২-১ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নুয়ান তুশারা (শ্রীলঙ্কা)।
ম্যান অব দ্য সিরিজ: কুশল মেন্ডিস (শ্রীলঙ্কা)।
ধনাঞ্জয়ার দারুণ ক্যাচে ফিরলেন তাসকিন, হারল বাংলাদেশ
দলের হার আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছে ততোক্ষণে, তবে দমে যাননি তাসকিন। দাসুন শানাকার বলে ছক্কা মারতে গিয়েছিলেন তিনি। প্রায় পেয়েও গিয়েছিলেন। সীমানায় লাফিয়ে উঠে ক্যাচ ধরেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। শেষ মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পেরে শূন্যে বল ছুঁড়ে ফের মাঠে ঢুকে ক্যাচ লুফে নেন। ফলে বিদায় নিতে হয় তাসকিনকে। ২১ বলে খেলেন ৩১ রানের ইনিংস। গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
শরিফুলকে ফিরিয়ে তুশারার ফাইফার
চতুর্থ বল করতে এসে তাসকিন আহমেদের হাতে প্রথম দুই বলেই খেলেন দুটি ছক্কা। তাতে অনেকেরই চোখ কচলে ঠিক করেছেন। কারণ এই পেসারের তোপেই এমন বিপর্যয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। পরের চারটি বলে নিজেকে ফিরে পান তিনি। শেষ বলে শরিফুলকে ফিরিয়ে তুলে নিয়েছেন নিজের ফাইফারও।
১৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ১৩৪ রান। তাসকিন আহমেদ ২৭ ও মোস্তাফিজুর রহমান ০ রানে ব্যাটিং করছেন। বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭৫ রান।
আশা জাগিয়ে ফিরে গেলেন রিশাদ
খাঁদের কিনারায় থাকা দল যখন বড় হারের শঙ্কায়, তখন হাল ধরেন রিশাদ হোসেন। ছক্কার নতুন রেকর্ড গড়ে নিজের ফিফটি তুলে নেওয়ার সঙ্গে বাংলাদেশকে আশাও দেখাচ্ছিলেন। তবে ফিফটির পরপরই শেষ হয়েছে তার লড়াই। ৭টি ছক্কা মারা এই ব্যাটার মহেশ থিকসানার বলে আরও একটি মারতে গেলে আকাশে তুলে আউট হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ৩০ বলে ৫৩ রান করেছেন রিশাদ।
১৭ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ১২১ রান। তাসকিন আহমেদ ১৪ ও শরিফুল ইসলাম ৪ রানে ব্যাটিং করছেন। বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭৫ রান।
ছক্কার রেকর্ড গড়ে রিশাদের হাফসেঞ্চুরি
দলের প্রতিষ্ঠিত ব্যাটাররা যখন মাঠ ছেড়েছেন মাথা নিচু করে, সেখানে কী দারুণ ব্যাটিংই না করছেন রিশাদ হোসেন। এরমধ্যেই তুলে নিয়েছেন নিজের ফিফটি। তাতে রীতিমতো ছক্কার নতুন রেকর্ড গড়েছেন দেশের ব্যাটারদের মধ্যে। ২৬ বলে অর্ধশত স্পর্শ করার পথে মেরেছেন ৭টি ছক্কা। প্রথম ম্যাচে ৬টি ছক্কা মেরে দেশের ব্যাটারদের মধ্যে এই রেকর্ড গড়েছিলেন জাকের আলী।
১৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১১৫ রান। রিশাদ হোসেন ৫২ ও তাসকিন আহমেদ ১৩ রানে ব্যাটিং করছেন। বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭৫ রান।
রিশাদের ব্যাটে দলীয় শতক
৩২ রানে যখন ছয় ব্যাটার আউট হয়ে যান, তখন মনে হয়েছিল একশ তো দূরের কথা, বড় হারের নতুন কোনো রেকর্ডই হতে পারে টাইগারদের। তবে গর্জে ওঠেন লেজের ব্যাটার রিশাদ হোসেন। দুর্দান্ত কিছু ছক্কার মারে বাংলাদেশের দলীয় পুঁজি একশ পার করতে রেখেছেন কার্যকরী ভূমিকা। ১৫ ওভার আসে বাংলাদেশের দলীয় শতক।
১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১০২ রান। রিশাদ হোসেন ৪৫ ও তাসকিন আহমেদ ৮ রানে ব্যাটিং করছেন। বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭৫ রান।
শেখ মেহেদীকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন হাসারাঙ্গা
ছয় হারিয়ে খাঁদের কিনারায় চলে যাওয়া বাংলাদেশের হাল রিশাদ হোসেনের সঙ্গে ধরেছিলেন শেখ মেহেদী হাসান। দারুণ কিছু শটে প্রতিরোধ গড়ার ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। এই জুটি ভেঙেছেন লঙ্কান অধিনায়ক হাসারাঙ্গা। তার গুগলি বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়ে যান শেখ মেহেদী। ভাঙে ৪৪ রানের জুটি।
১৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৮৭ রান। রিশাদ হোসেন ২৭ ও তাসকিন আহমেদ ৮ রানে ব্যাটিং করছেন। বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭৫ রান।
বাংলাদশের দলীয় ফিফটি
দলীয় ৩২ রানেই প্রথম সারির ছয় উইকেট হারিয়ে লেজ বেরিয়ে যায় বাংলাদেশের। তাতে বড় হারের শঙ্কাতেও পড়ে টাইগাররা। তবে শীর্ষ ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে লেজের ব্যাটার রিশাদ হোসেনই দারুণ কিছু শটে দলীয় ফিফটি পূরণ করেছেন বাংলাদেশের। লঙ্কান অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা টানা দুটি ছক্কা মারেন তিনি।
১১ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৫৭ রান। শেখ মেহেদী হাসান ৮ ও রিশাদ হোসেন ২০ রানে ব্যাটিং করছেন। বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭৫ রান।
হাসারাঙ্গার ঘূর্ণিতে আউট জাকের আলী
নিষেধাজ্ঞার কারণে আগের দুই ম্যাচ খেলতে পারেননি শ্রীলঙ্কার নিয়মিত অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। তবে ফিরেই জ্বলে উঠেছেন তিনি। তুশারার তোপের পর এবার ঘূর্ণির মায়াজাল দেখালেন এই লেগস্পিনার। জাকের আলীকে ফেলেছেন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। রিভিউ নিয়েছিলেন জাকের। তবে লাভ হয়নি। ১৩ বলে ৪ রান করে ফিরলেন এই ব্যাটার।
নয় ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৩৭ রান। শেখ মেহেদী হাসান ৬ ও রিশাদ হোসেন ৪ রানে ব্যাটিং করছেন। বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭৫ রান।
তুশারার শিকার এবার সৌম্য
১৫ রানে চার উইকেট হারিয়ে বড় বিপদেই বাংলাদেশ। সেই বিপদ আরও বাড়ালেন সৌম্য সরকার। বিনুরা ফার্নান্ডোকে দারুণ দুটি চার মেরে ইনিংস মেরামতের ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। তবে আগের ওভারে হ্যাটট্রিক তুলে নেওয়া তুশারাকেও মারতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন এই ওপেনার। শেষ মুহূর্তের সুইংয়ে, অনেকটা রিভার্স সুইংয়ের মতো বলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ১০ বলে ১১ রান আসে সৌম্যর ব্যাট থেকে।
ছয় ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৫ রান। জাকের আলী ১ ও শেখ মেহেদী হাসান ১ রানে ব্যাটিং করছেন। বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭৫ রান।
মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে হ্যাট্রিক পূরণ তুশারার
হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে ঠিক আগের বলের মতোই করলেন তুশারা। জায়গায় দাঁড়িয়ে রক্ষণ করতে চেয়েছিলেন অভিজ্ঞ ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু লাইন মিস করেন তিনিও। প্যাডে লাগলে লঙ্কানদের জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। তবে আম্পায়ার্স কলে বিদায় নিতে হয় মাহমুদউল্লাহকে। রানের খাতা খুলেত পারেননি তিনিও।
চার ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৫ রান। সৌম্য সরকার ৩ ও জাকের আলী ০ রানে ব্যাটিং করছেন। বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭৫ রান।
বিপদ বাড়িয়ে ফিরলেন হৃদয়ও
নুয়ান তুশারার আরও একটি দারুণ ডেলিভারি। আরও একটি লেন্থ বল রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতেই খেলতে চেয়েছিলেন নতুন ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়। কিন্তু তিনিও লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে গেলে বিপদেই পড়ে যায় টাইগাররা। রানের খাতাই খুলতে পারলেন না এই ব্যাটার।
অসাধারণ ডেলিভারিতে বোল্ড শান্ত
অসাধারণ এক ডেলিভারিতে টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে ফেরালেন নুয়ান তুসারা। তার লেন্থ বল কিছুটা ভিতরের দিকে ঢুকে নিচু হয়। রক্ষণ করতে চেয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে লাইন মিস করলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ৬ বলে ১ রান করেন অধিনায়ক।
শুরুতেই ফিরলেন লিটন
অফের দিকে সরে আগের ওভারেই বিনুরা ফার্নান্ডোকে দারুণ ফ্লিকে চার আদায় করে নিয়েছিলেন লিটন দাস। পরের ওভারে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাঁড় বলেও অফের দিকে এগিয়ে সুইপের মতো করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে টাইমিং হেরফের করে টপএজ হয়ে দাসুন শানাকার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন এই ওপেনার। ১১ বলে ৭ রান করেন তিনি।
তিন ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ১৫ রান। সৌম্য সরকার ৩ ও নাজমুল হোসেন শান্ত ১ রানে ব্যাটিং করছেন। বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭৫ রান।
অল্পের জন্য বাঁচলেন লিটন
ইনিংসের প্রথম বলেই ফিরতে পারতেন লিটন কুমার দাস। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজের লেন্থে রাখা বলে লাইন মিস করলে প্যাডে লাগে তার। লঙ্কানদের জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি মাঠের আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিলে আম্পায়ার্স কোলে বেঁচে যান তিনি। মাত্র এক শতাংশের জন্য অর্থাৎ বলে ৫১ শতাংশ বাইরে থাকায় বেঁচে যান লিটন। এরপর চতুর্থ বলে প্রায় ইনসাইড এজ হয়ে যাচ্ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো বিপদ হয়নি।
প্রথম ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৫ রান। লিটন দাস ২ ও সৌম্য সরকার ১ রানে ব্যাটিং করছেন। বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭৫ রান।
সিরিজ জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন ১৭৫ রান
উইকেটরক্ষক লিটন দাসের দক্ষতায় ইনিংসের শেষ বলে রানআউট হলেন দাসুন শানাকা। ডাবল নেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও পৌঁছাতে পারলেন না ক্রিজে। তবে তার কল্যাণে মোস্তাফিজুর রহমানের ওই ওভার থেকে শ্রীলঙ্কা তুলল ১৪ রান। ২০ ওভার শেষে তাদের পুঁজি দাঁড়াল ৭ উইকেটে ১৭৪। অর্থাৎ লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ জিততে কঠিন চ্যালেঞ্জ পাড়ি দিতে হবে বাংলাদেশকে।
বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে সফরকারীদের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৬ রান করেন ওপেনার কুসল মেন্ডিস। বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট করে নেন তাসকিন আহমেদ ও রিশাদ হোসেন। মোস্তাফিজ বরাবরের মতো ছিলেন বেজায় খরুচে। ৪ ওভার দেন ৪৭ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১৭৪/৭ (ধনাঞ্জয়া ৮, কুসল ৮৬, কামিন্দু ১২, হাসারাঙ্গা ১৫, আসালাঙ্কা ৩, ম্যাথিউস ১০, শানাকা ১৯, সামারাবিক্রমা ৭*; শরিফুল ১/২৮, তাসকিন ২/২৫, মেহেদি ০/২২, মোস্তাফিজ ১/৪৭, রিশাদ ২/৩৫, সৌম্য ০/১১)।
রিশাদের দ্বিতীয় শিকার ম্যাথিউস
ইনিংসের ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে আসা লেগ স্পিনারের জন্য কঠিনই বটে। রিশাদ হোসেন দিলেন ১৩ রান। তবে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস তাকে ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই প্রতিশোধ নিলেন। আরেকটি ছয়ের চেষ্টায় সীমানার কাছে সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়লেন ম্যাথিউস। বাংলাদেশ তুলে নিল লঙ্কানদের ষষ্ঠ উইকেট।
ম্যাথিউস ৭ বলে করলেন ১০ রান। ১৮ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান ৬ উইকেটে ১৫৩। ক্রিজে দাসুন শানাকা আছেন ৩ বলে ৫ রানে। সাদিরা সামারাবিক্রমা অপরাজিত ১ বলে ১ রানে।
কুসলকে সেঞ্চুরির আগেই থামালেন তাসকিন
ক্যারিয়ারসেরা টি-টোয়েন্টি ইনিংসটিকে সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারলেন না কুসল মেন্ডিস। দারুণ বল করা পেসার তাসকিন আহমেদ সাজঘরে পাঠালেন তাকে। বাউন্সারে টাইমিংয়ে গড়বড় করে ৩০ গজের ভেতরে মিডউইকেটে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিলেন তিনি।
বিস্ফোরক ইনিংস খেলে কুসল আউট হলেন ৮৬ রানে। ৫৫ বল মোকাবিলায় সমান ৬টি করে চার ও ছক্কা হাঁকান তিনি।
১৭ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৪০ রান। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ৪ বলে ৩ ও দাসুন শানাকা ১ বলে শূন্য রানে খেলছেন।
শেষ দুই ওভারে মাত্র ৫ রান দিল বাংলাদেশ। তাসকিনের ওভার থেকে ২ আসার আগে রিশাদ হোসেন খরচ করলেন ৩ রান। ইনিংসের এই পর্যায়ে এমন নিয়ন্ত্রিত বোলিং পরে ম্যাচের ফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
আসালাঙ্কাকে থিতু হতে দিলেন না শরিফুল
কুসল মেন্ডিসের বলে ছক্কা হজমের দুই বলের মধ্যে উইকেট শিকার করলেন শরিফুল ইসলাম। চারিথ আসালাঙ্কাকে থিতু হতে দিলেন না তিনি। টপ এজ হয়ে ৫ বলে ৩ রানে শর্ট ফাইন লেগে মোস্তাফিজুর রহমানের তালুবন্দি হলেন আসালাঙ্কা।
১৫ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ৪ উইকেটে ১৩৫। সেঞ্চুরির সুবাস ছড়িয়ে কুসল ৪৭ বলে ৮৩ রান ক্রিজে আছেন। মাত্রই নামা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ১ বলে ১ রানে অপরাজিত।
হাসারাঙ্গাকে বিদায় করে বিপজ্জনক জুটি ভাঙলেন মোস্তাফিজ
কুসল মেন্ডিস ছক্কা মেরে স্বাগত জানালেন মোস্তাফিজুর রহমানকে। ফলে স্রেফ ২৭ বলে ভানিন্দু হাসারাঙ্গার সঙ্গে তার জুটির রান স্পর্শ করল পঞ্চাশ। সেখানে খুনে মেজাজে থাকা কুসলেরই বড় ভূমিকা।
খরুচে বোলিং করতে থাকা মোস্তাফিজ পঞ্চম বলে হাসারাঙ্গাকে ফিরিয়ে ভাঙলেন বিপজ্জনক জুটি। শর্ট বলে র্যাম্প শট খেলতে গিয়ে কুপোকাত হলেন লঙ্কান অধিনায়ক। থার্ড ম্যানে ক্যাচ নিলেন শরিফুল ইসলাম।
হাসারাঙ্গা আউট হলেন ১৩ বলে ১৫ রানে। ইতি ঘটল ৩১ বলে ৫৯ রানের জুটির। ১৩ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার পুঁজি ৩ উইকেটে ১১১ রান। ক্রিজে কুসল খেলছেন ৪০ বলে ৬৩ রানে। তার সঙ্গী মাত্রই নামা চারিথ আসালাঙ্কা।
দারুণ ব্যাটিংয়ে কুসলের ৫০, শ্রীলঙ্কার ১০০
কুসল মেন্ডিসের প্রিয় প্রতিপক্ষ যেন বাংলাদেশ। টাইগারদের বিপক্ষে ফের ফিফটি হাঁকালেন তিনি। ৩৫ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় তিনি স্পর্শ করলেন মাইলফলক। সৌম্য সরকারের করা দ্বাদশ ওভারের তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করলেন।
শ্রীলঙ্কার রানের চাকায় দম দেওয়া কুসলকে ওই ওভারেই ফেরাতে পারত বাংলাদেশ। পঞ্চম বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ডানহাতি ব্যাটারের সহজ ক্যাচ লুফে নিতে ব্যর্থ হলেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ঠিক ৫০ রানেই জীবন পান কুসল। উল্টো বাউন্ডারি আসায় লঙ্কানদের দলীয় সংগ্রহ শতরানে পৌঁছাল।
১২ ওভারে সফরকারীদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১০১ রান। কুসল ৩৭ বলে ৫৫ ও অধিনায়ক ভানিন্দু হাসারাঙ্গা ১১ বলে ১৪ রানে খেলছেন।
মোস্তাফিজের খরুচে ওভার
কুসল মেন্ডিসের বিপক্ষে চার-ছয় হজমের পাশাপাশি ওয়াইড বলে চার দিলেন বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। তার এলোমেলো বোলিংয়ে দশম ওভারে শ্রীলঙ্কা তুলল ১৮ রান। ১০ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৮১ রান। কুসলের ব্যাটে চড়ে রানের গতি বাড়াচ্ছে লঙ্কানরা।
আক্রমণে এসেই কামিন্দুকে ফেরালেন রিশাদ
ইনিংসের অষ্টম ওভারে বল হাতে পেলেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। তার দ্বিতীয় বলে ছক্কা মারলেন কুসল মেন্ডিস। ওই ছক্কা হজমের পর ঘুরে দাঁড়াতে সময় নিলেন না রিশাদ। চতুর্থ বলে আউট করে দিলেন কামিন্দু মেন্ডিসকে। বাংলাদেশ পেল দ্বিতীয় সাফল্য।
বল দূরে সরে যাচ্ছিল ব্যাটারের কাছ থেকে। সঙ্গে ছিল বাড়তি বাউন্স। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে তুলে মারলেও সীমানা পার করতে ব্যর্থ হলেন কামিন্দু। লং-অনে ক্যাচ নিলেন শরিফুল ইসলাম। কামিন্দু বিদায় নিলেন ১২ বলে ২ চারে ১২ রানে।
থামল দুই মেন্ডিসের গড়া ২৭ বলে ৩৪ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। ৮ ওভার শেষে লঙ্কানদের রান ২ উইকেটে ৫৪। ক্রিজে কুসলের সঙ্গী হলেন অধিনায়ক ভানিন্দু হাসারাঙ্গা।
শেষ হলো পাওয়ার প্লে
শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ মিলে প্রথম চার ওভার করার পর বোলিংয়ে পরিবর্তন আনলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। শেখ মেহেদী হাসান পঞ্চম ও মোস্তাফিজুর রহমান ষষ্ঠ ওভারে হাত ঘোরালেন। তারাও আগের দুজনের মতো নিয়ন্ত্রিত বল করলেন। শেষ হলো পাওয়ার প্লে।
তাসকিনের কল্যাণে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ পেল উইকেটের দেখা। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার বিদায়ের পর আরেক ওপেনার কুসল মেন্ডিস ও তিনে নামা কামিন্দু মেন্ডিসের ব্যাটে জুটি গড়ার চেষ্টা করছে শ্রীলঙ্কা। ৬ ওভার শেষে তাদের রান ১ উইকেটে ৪১। কুসল ১৬ বলে ১৭ ও কামিন্দু ৮ বলে ৯ রানে খেলছেন।
ধনাঞ্জয়াকে ফিরিয়ে তাসকিনের প্রথম আঘাত
এই ম্যাচের একাদশে ফেরা ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা শুরু থেকেই ছিলেন নড়বড়ে। আক্রমণাত্মক শট খেলে ক্রিজে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় বিফল হচ্ছিলেন তিনি। অবশেষে বড় শট মারতে গিয়েই আউট হলেন। গুড লেংথের বলে মিডউইকেটে ৩০ গজের ভেতরে সৌম্য সরকারের তালুবন্দি হলেন তিনি।
বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য পাইয়ে দিলেন ডানহাতি পেসার তাসকিন আহমেদ। ১২ বলে ১ চারে ধনাঞ্জয়ার সংগ্রহ ৮ রান। ১৮ রানে পড়ল শ্রীলঙ্কার প্রথম উইকেট।
প্রথম বলে উইকেট নেওয়ার পর অবশ্য তিনটি বাউন্ডারি হজম করলেন তাসকিন। একটি বাই থেকে, বাকি দুটি মারলেন নতুন ব্যাটার কামিন্দু মেন্ডিস। ৪ ওভার শেষে লঙ্কানদের রান দাঁড়াল ১ উইকেটে ৩০।
শুরুতেই রিভিউ হারাল বাংলাদেশ
শরিফুল ইসলামের করা প্রথম ওভারেই একটি রিভিউ হারাল বাংলাদেশ। শেষ বলে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার বিপক্ষে এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে সাড়া দিলেন না শরফুদ্দৌলা। রিভিউ নিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেল, তা চলে যেত স্টাম্পের উপর দিয়ে।
রিভিউ নষ্ট হলেও বাঁহাতি পেসার শরিফুল দারুণ বল করলেন। ইনসুইংয়ে শেষ তিন বলের প্রতিটিতে বেকায়দায় ফেললেন ধনাঞ্জয়াকে। তার ওভার থেকে এলো স্রেফ ২ রান।
টস জিতে ফের বোলিং নিল বাংলাদেশ
সামান্য ব্যবধানের হারে পিছিয়ে পড়ার পর অনায়াস জয়ে সমতা টেনেছে বাংলাদেশ। সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি-টোয়েন্টি শুরুর আগে টস জিতলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি বেছে নিলেন আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। আগের দুটি ম্যাচ পুরোপুরি ফ্লাডলাইটের নিচে হলেও এদিন খেলা গড়াবে বিকাল তিনটায়।
এই নিয়ে সিরিজের সবকটি ম্যাচে টস জিতলেন শান্ত। প্রতিবারই তিনি আগে বোলিং নিলেন। শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ভানিন্দু হাসারাঙ্গা জানালেন, টস জিতলে তিনিও আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতেন।
বাংলাদেশের একাদশ অপরিবর্তিত
বাংলাদেশের একাদশে কোনো পরিবর্তন নেই। আগের দুই টি-টোয়েন্টিতে খেলা ক্রিকেটারদের ওপর আস্থা রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
একাদশ: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, সৌম্য সরকার, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী, শেখ মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম।
শ্রীলঙ্কার একাদশে তিনটি পরিবর্তন
শ্রীলঙ্কার একাদশে এসেছে তিনটি বদল। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেছেন অধিনায়ক ভানিন্দু হাসারাঙ্গা। তার পাশাপাশি জায়গা পেয়েছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও নুয়ান থুশারা। বাদ পড়েছেন আভিশকা ফার্নান্দো, দিলশান মাদুশঙ্কা ও চোটে পড়া মাথিশা পাথিরানা।
একাদশ: ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, কুসল মেন্ডিস, কামিন্দু মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আসালাঙ্কা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, দাসুন শানাকা, ভানিন্দু হাসারাঙ্গা, মাহিশ থিকশানা, বিনুরা ফার্নান্দো, নুয়ান থুশারা।
বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের হাতছানি
দুই দলের আগের চারটি টি-টোয়েন্টি সিরিজের তিনটিতেই জিতেছে শ্রীলঙ্কা। কেবল ২০১৭ সালে দ্বীপদেশটিতে সফরে গিয়ে ১-১ ব্যবধানে ড্র করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। এবার তাই লাল-সবুজ জার্সিধারীদের সামনে লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ জেতার হাতছানি।
Comments