‘কিছু মানুষ দায়িত্ব পেলেই সেরা খেলাটা খেলে’, শান্তকে নিয়ে মুশফিক

Najmul Hossain Shanto
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

নাজমুল হোসেন শান্ত যখন তিন সংস্করণের স্থায়ী অধিনায়কত্ব পান, তখন বিপিএল চলছিল। সেই আসরে নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। গোটা বিপিএলে একটা ফিফটি, এমনকি একটা ছক্কাও মারতে পারেননি। তবে বিপিএলের পর জাতীয় দলের খেলায় এসে ছন্দহীনতা টের পেতে দিলেন না তিনি। টি-টোয়েন্টিতে জুতসই রান না পেলেও ওয়ানডে সিরিজে দলের প্রবল চাপে অধিনায়কের ব্যাট থেকে এলো দারুণ সেঞ্চুরি। তার সঙ্গে দেড়শো ছাড়ানো জুটিতে ভূমিকা রাখা মুশফিকুর রহিম বলছেন, এটা 'ওয়ান ম্যান শো'।  শান্তর রান পাওয়ার পেছনে নেতৃত্বের প্রভাবও দেখেন অভিজ্ঞ ব্যাটার।

বুধবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কাকে লড়াই করতে দেয়নি বাংলাদেশ। ২৫৫ রান টপকে জিতেছে ৬ উইকেটে। ১২৯ বলে ১২২ রানের ইনিংসে মূল নায়ক শান্ত। তার সঙ্গে ১৭৫ বলে ১৬৫ রানের জুটিতে ৭৩ করে ভূমিকা রাখেন মুশফিক। ২৩ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর ৬৯ রানের জুটিতে অবদান আছে মাহমুদউল্লাহরও।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে শান্তকে প্রশংসায় ভাসান মুশফিক। বাঁহাতি ব্যাটারের নেতৃত্বের গুণ আলাদা করে উল্লেখ করেন তিনি,  'বিপিএলে রান পায়নি, ওটা একটা ভিন্ন সংস্করণ। এটা আরেকটা সংস্করণ। একটা মানুষের উপর যখন দায়িত্বটা বেশি থাকে, সব কিছু নিয়ে চিন্তা করে। আমার মনে হয় কিছু কিছু মানুষ থাকে তখন তাদের সেরা খেলাটা খেলে। ও এমন একজন মানসিকতার ছেলে ও যত দায়িত্ব পায় সেটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয় ও ওভারকাম করে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম ও জাতীয় দলে যখনই আসবে তখনই রান করা শুরু করবে।'

জাতীয় দলে এলেই রান পাওয়া শুরুর কারণ হিসেবে আবহকে বড় কারণ মনে করেন মুশফিক,   'আবহটা খুব জরুরি। আমরা কখনো আউটকাম নিয়ে চিন্তা করি না। আবহ এমন রাখি যাতে সবার যার যার প্রক্রিয়া যাতে ঠিক থাকে। প্রক্রিয়া ঠিক রেখে যদি শূন্য করে সেটা একটা দিন হতে পারে। এগারোটা বা সাতটা ব্যাটসম্যান সবাই তো আর একশো করবে না। সে যতক্ষণ তার রুটিনে থাকবে....আমার কাছে মনে হচ্ছিল এটা সময়ের ব্যাপার (শান্তর রান পাওয়া)। যেটা বললাম নেতৃত্ব ওর এমন একটা জিনিস যেটা ও উপভোগ করে। চ্যালেঞ্জটা নিতে আগ্রহ থাকে সব সময়।' 
শান্তর মধ্যে একটা বদলও দেখছেন মুশফিক। যেটা তাকে আরও বড় ব্যাটার হিসেবে পরিণত করছে,  'আগে ভালো শুরু পেলে ৫০-৬০ রান করত এখন বড় ইনিংস খেলছে, দলকে জেতাচ্ছে। আজ দেখুন, একশ করার পরের বলে যেভাবে মিড অনে অনায়াসে একটা সিঙ্গেল বের করেছে এটাই প্রমাণ করে সে দলের জন্য কত চিন্তা করে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বারবার বলছিল, আমরা যেন ২০-৩০ রান করে হলেও অবদান রাখি, কাউকে যেন সুযোগ না দেই। কারণ ক্রিকেটে যেকোনো কিছু হতে পারে।' 

২৫৬ রানের লক্ষ্যে ইনিংসের প্রথম বলেই লিটন দাসকে হারায় বাংলাদেশ। ২৩ রানের ভেতর বিদায় নেন সৌম্য সরকার ও তাওহিদ হৃদয়। ওই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩২ বল আগেই জিততে পারার পেছনে শান্ত-মাহমুদউল্লাহর জুটির বড় কৃতিত্ব দেন মুশফিক, 'আমাদের জুটি অবশ্যই অনেক ভালো হয়েছে। আল্টিমেটলি মূল জুটিটা করেছে রিয়াদ ভাই ও শান্ত। ওই সময় বলটা অনেক নতুন ছিলো আর শিশির এত প্রভাব ফেলেনি, সিম মুভমেন্ট হচ্ছিল। ওরা আর্লি উইকেট পেয়েছে। কিন্তু দারুণ ব্যাটিং করেছে রিয়াদ ভাই ও শান্তর। রানরেটটা ঠিক ছিলো। আমাদের ব্যাটারদের জন্য কাজটা সহজ হয়ে গিয়েছে। আমরা কখনই রানরেটে পিছিয়ে ছিলাম না। এমন কোন ফ্যান্সি কিছু করার দরকারও ছিলো না। শিশিরের কারণে তাদেরও অনেক সমস্যা হচ্ছিলো। শান্ত দুর্দান্ত ব্যাট করেছে। ও পুরোপুরি ডিজার্ভ করে ওয়ান ম্যান শো টু নাইট।'

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

4h ago