শুরুতে শান্ত-সৌম্য, পরে হৃদয়ের দ্যুতি
লিটন দাসের আরেকবার খালি হাতে ফেরার দিনে শঙ্কা উড়িয়ে জ্বলে উঠলেন সৌম্য সরকার। দুইবার জীবন পেয়ে এবারও ভরসা দিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এই দুজনের ঝলকের পরও মাঝে পথ হারিয়ে ফেলেছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু তাওহিদ হৃদয় দলকে রাখলেন পথে। দারুণ ইনিংসে দলকে এনে দিলেন জেতার মতন পুঁজি।
শুক্রবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৭ উইকেটে ২৮৬ রান করেছে বাংলাদেশ। ৩ চার, ৫ ছক্কায় ১০২ বলে ৯৬ রানের ইনিংস খেলেন হৃদয়। ৬৬ বলে ৬৮ করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সৌম্যের। এর আগে শান্ত ফেরেন ৩৯ বলে ৪০ করে।
ইনিংসের শেষ দিকে তাসকিনের ১০ বলে ১৮ আর হৃদয়কে সঙ্গ দিয়ে তানজিম হাসান সাকিবের ৩৩ বলে ১৮ রানেরও অবদান আছে।
ম্যাচের ঘন্টা খানেক আগে নেটে একা ব্যাট করে প্রস্তুত হন লিটন দাস। প্রথম ম্যাচে ০ রানে আউট হওয়ার পরের দিন ছিলেন বিশ্রামে। ম্যাচের আগের সময়টার অনুশীলই তাই সম্ভল। কিন্তু সেটা কাজে দিল না। ম্যাচে নেমে আবার ০।
২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ওয়ানডেতে যৌথ সর্বোচ্চ ৭বার শূন্য রান আউট হন তিনি। ওয়ানডেতে ১৪ বার এমন অভিজ্ঞতা হয় তার।
আগের দিনের মতোন এবার আউটের ধরণটা খুব দৃষ্টিকটু। হন্তারক সেই দিলশান মাধুশঙ্কা। শর্ট মিড উইকেটে ফিল্ডার রেখে বল করছিলেন বাঁহাতি পেসার। আলত শটে তার হাতেই ক্যাচ তুলে দেন বাংলাদেশ ওপেনার। এই নিয়ে বাঁহাতি পেসারদের বলে ১৭তম ওভার আউট হলেন তিনি।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এসেই ফিরতে পারতেন। স্লিপে তার ক্যাচ ফেলে দেন পাথুম নিশানকা। তবে এরপর জমে উঠে সৌম্য-শান্ত জুটি। দুজনেই বের করতে থাকেন একের পর এক চার। সাবলীল ব্যাটিংয়ে খেলা করে দেন সহজ।
মাধুশঙ্কার দারুণ বলে শান্ত ৪০ করে ফিরলে ভাঙে ৭২ বলে ৭৫ রানের জুটি। সৌম্য চালিয়ে যান, দ্যুতি ছড়াতে থাকেন দারুণ সব কাভার ড্রাইভে। পুল করেও বের করেন বাউন্ডারি। আপার কাটের সৌন্দর্য্যও ধরা পড়ে তার ব্যাটে। ফিফটি পেরিয়ে বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে দ্রুততম ২ হাজার রানের রেকর্ড গড়ে বড় কিছুর আভাস দিচ্ছিলেন। হাসারাঙার বলে রিভার্স সুইপ করেছিলেন, টাইমিংও ভালো হয়েছিলো। মাধুশঙ্কা দারুণ ক্যাচে থামে তার ৬৬ বলে ৬৮ রানের ইনিংস।
সৌম্যের আউটের পর বাংলাদেশের তিনশো ছাড়ানোর আশা নষ্ট হয় মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে। অভিজ্ঞ ব্যাটার আগের ম্যাচে দেখিয়েছিলেন ইন্টেন্ট। এদিন এই পরিস্থিতিতে দাবি ছিলো সময় নিয়ে খেলার। হাসারাঙ্গার বলে বেরিয়ে এসে কী যেন করতে গেলেন, পরাস্ত হয়ে হন সহজ স্টাম্পিং।
মুশফিকুর রহিম থিতু হয়েছিলেন। আগের দিনের মতনই খেলার আভাস ছিলো। তাকেও ছাঁটেন হাসারাঙ্গা।
বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার নায়ক হৃদয়। শেষ দিকে তানজিমের সঙ্গে ৬২ বলে ৪৭, তাসকিনকে নিয়ে ২৩ বলে ৫০ রানের দুটি দারুণ জুটি গড়েন হৃদয়। ৭৪ বলে করেছিলেন ফিফটি। পরের ২৮ বলে ডানহাতি ব্যাটার যোগ করেন ৪৬ রান।
শিশিরের প্রভাব না থাকলে এই পুঁজি নিয়ে এই ম্যাচেই সিরিজ নিশ্চিতের সম্ভাবনা প্রবল।
Comments