আবারও ক্যাচ মিসের গল্পই লিখল টাইগাররা

জয়ের সহজ ক্যাচ মিসের পর হতাশ টাইগাররা। ছবি: ফিরোজ আহমেদ/স্টার

গল্পটা সিলেট টেস্টের। প্রথম ইনিংসে কামিন্দু মেন্ডিস তখন সবে মাত্র উইকেটে নেমেছেন। শরিফুল ইসলামের লেন্থে রাখা বলে ব্যাটের কানা ছুঁয়ে যায় মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে। কিন্তু সেই ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি এই তরুণ। সেই কামিন্দু সেঞ্চুরি করেই থেমেছেন। অধিনায়কের সঙ্গে গড়েছেন বিশাল এক জুটি। যার খেসারৎ পুরো ম্যাচেই দিয়েছে টাইগাররা। অন্যথায় হয়তো ভিন্ন ফলাফলও দেখতে পারতো বাংলাদেশ।

ভেন্যুর বদল হলেও, পরিবর্তন হয়নি ম্যাচের চিত্রের। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচেও ক্যাচ মিসের মহড়ায় নামে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। যার শুরুটা করেছেন সেই জয়। এরপর তার তালিকায় নাম লেখান অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও। মিস করেন শাহাদাত হোসেন দিপুর মতো তরুণ ক্রিকেটার। যার সদ্ব্যবহার দারুণভাবেই করেছেন শ্রীলঙ্কান ব্যাটাররা।

দিনের প্রথম জীবন পান লঙ্কান ওপেনার নিশান মাদুশকা। ৯ রানে ব্যাটিং করছিলেন তিনি। অভিষিক্ত হাসান মাহমুদের লেথ ডেলিভারি দোমনা হয়ে খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে ওলে যায় দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো জয়ের হাতে। হাতে জমিয়েও সেই ক্যাচ ধরে রাখতে পারেননি তিনি। মাদুশকা থেমেছেন ৫৭ রানে। ১৩ রানেই ভাঙতে পারতো যে ওপেনিং জুটি, তা ভেঙেছে ৯৬ রানে।

দুর্ভাগা হাসান ২২তম ওভারেই পেতে পারতেন করুনারত্নের উইকেট। তার লেন্থ বলে পুল করতে গিয়ে টপএজ হয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ উঠে গিয়েছিল তার। তবে সীমানায় কিছুটা এগিয়ে থাকায় ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি সাকিব। ক্যাচ ওঠার পর আরও এগিয়েছিলেন। পরে যখন বুঝতে পারেন তখন ক্যাচ নয়, কেবল ছক্কাই বাঁচাতে পারতেন তিনি। শেষ পর্যন্ত পারেননি কিছুই।

তখন করুনারাত্নে ব্যাটিং করছিলেন ২২ রানে। এরপর তিনি যোগ করেছেন আরও ৬৪ রান। ব্যক্তিগত ৮৬ রানে হাসানের বলে প্লেইডঅন হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। অথচ প্রথম সেশনে কোনো উইকেটই পায়নি বাংলাদেশ। যেখানে দুটি উইকেট পেতেও পারতো স্বাগতিকরা। এছাড়া একটি রানআউটও মিস করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

এরপর তৃতীয় সেশনে ব্যর্থতার পাল্লাটা ভারী করেন শাহাদাত। এবার ব্যক্তিগত ১০ রানে জীবন পান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। মিরাজের অফ স্টাম্পের বাইরে রাখা আর্ম ডেলিভারি ম্যাথিউসের ব্যাটের কানায় লেগে যায় প্রথম স্লিপে। কিন্তু হাত বাড়িয়েও তা নিতে পারেননি শাহাদাত। উল্টো বাউন্ডারি মিলে যায় তার। যদিও মাদুশকা ও করুনারাত্নের মতো ইনিংস লম্বা করতে পারেননি ম্যাথিউস। ২৩ রানে হাসানের দ্বিতীয় শিকার হয়েছেন তিনি।

এতো গেল এই ম্যাচের চিত্র। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের সার্বিক চিত্র এই একই। গত পাঁচ বছরে অর্থাৎ ২০১৯ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত মোট ৩০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। সেখানে ২৯৫টি ক্যাচ উঠলেও লুফে নিতে পেরেছেন ২১৫টি। অর্থাৎ মিস করেছেন ৮০টি। অর্থাৎ ২৭ শতাংশেরও বেশ ক্যাচ মিস করেছেন টাইগাররা। যার বড় অংশই মিস হয়েছে স্লিপে।

শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রামে প্রথম দিন শেষে ৪ উইকেটে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৩১৪ রান। জীবন পাওয়া তিন ব্যাটারকে ফেরানো গেলেও স্কোরকার্ডের রঙটা ভিন্ন হতেই পারতো। তবে এর মাঝেও অভিষেক রাঙিয়েছেন হাসান। ২টি উইকেট নিলেও পেতে পারতেন আরও বেশি। সঙ্গে একটি রানআউটও করেছেন তিনি। তারপরও প্রথম দিন শেষে এগিয়ে আছে শ্রীলঙ্কাই।

ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে টস জিতেই ব্যাটিং বেছে নেন লঙ্কান অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। দুই ওপেনার মাদুশকা ও করুনারাত্নে উপহার দেন ৯৬ রানের জুটি। এরপর কুশল মেন্ডিসের সঙ্গে ১১৪ রানের আরও একটি দারুণ জুটি গড়ে আউট হন করুনারাত্নে। মেন্ডিস পরে ম্যাথিউসের সঙ্গে গড়েন ৫৩ রানের জুটি। অথচ প্রতিটি জুটিই ভাঙতে পারতো শুরুতেই।

Comments

The Daily Star  | English

No sharp rise in crime, data shows stability: govt

The interim government today said that available data does not fully support claims of a sharp rise in crimes across Bangladesh this year

39m ago