‘খেলতে পছন্দ করি, আমি এমনিতে খেলা দেখি কম’

Mustafizur Rahman

চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে আইপিএল খেলতে গিয়ে দলটির হয়ে দারুণ বোঝাপড়া হয়ে গেছে মোস্তাফিজুর রহমানের। বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার টুর্নামেন্টের শুরু থেকে আলো ছড়ান। কিছু ম্যাচ খারাপ গেলেও চেন্নাইর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তিনি। এবারের আইপিএলে আর দুটি ম্যাচ খেলেই ফিরে আসবেন মোস্তাফিজ। তার আগে চেন্নাই সুপার কিংস প্রকাশ করেছে মোস্তাফিজের একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও।

সাদামাটা স্বভাবের মোস্তাফিজ এই সাক্ষাতকারে কথা বলেছেন নিজের মাতৃভাষায়, সাতক্ষীরার আঞ্চলিক টানে,  খোলামেলাভাবে প্রকাশ করেছেন নিজের অনুভূতি।

শুরুটা যেভাবে

আমার গ্রাম সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ। আমরা চার ভাই। সবাই ক্রিকেট পাগল। এলাকার টুর্নামেন্টগুলোতে ভাইয়েরা খেলায় নিয়ে যেতো। আমিতো সে সময় ছোট ছিলাম। বাইরে থেকে যেসব খেলোয়াড় আসতো, যাদের হায়ার (টাকা দিয়ে খেলোয়াড় নিয়ে আসা) করে আনতাম তাদের সে সময় বল করতাম। বাঁহাতে বল করতাম। এক বড় ভাই  আমার বড় ভাইকে বলছে তোর ভাইতো ভালো বোলিং করে। ওভাবেই আসলে আসা আস্তে আস্তে ক্রিকেটে।

কাটার কীভাবে শেখা

সহজাতই বললেই চলে। আমাকে কেউ ওটা শেখায় নাই কাটারটা। এক সময় আমি জাতীয় দলের নেটে বল করছিলাম। একদিন বিজয় ভাই (এনামুল হক বিজয়) জিজ্ঞেস করছিলো, "তুই কি স্লোয়ার করতে পারিস না?" আমি সে সময় খুব জোরে বল করতাম। তখন আমি নরমালি স্লোয়ার বল ট্রাই করছিলাম।  সে থেকেই দেখি বল ভালোই ঘুরছিল। খুব সম্ভবত ভাইকেও (আউট করেছি)...মনে পড়ছে না। অনেকেই আউট হয়েছে। সেই থেকে আমার… কাটার বলটা। 

চেন্নাই সুপার কিংসের সুযোগ পাওয়ার মুহূর্ত 

এটা চেন্নাইয়ে আমার প্রথম মৌসুম। যখন আমি খেলা শুরু করেছি, বিশেষ করে আইপিএলে ২০১৬ সালে, তার পর থেকেই চেন্নাই দলে খেলা আমার স্বপ্ন ছিল। আমি যখন কল পাই ওই রাতে আমার ঘুম আসছিল না।  আমার পরদিন খেলা ছিল, আমি তখন নিউজিল্যান্ডে। রাতে আমি ঘন্টা খানেকের মতো ঘুমিয়েছিলাম। দেখি শুধু ম্যাসেজ আসছেই। ওখানকার রাত ৮ টায় নিলাম শুরু হয়েছে। দেখি শুধু ম্যাসেজ আসছে। সবাই অভিনন্দন জানাচ্ছে যে তুমি চেন্নাই দলে নির্বাচিত হয়েছ।

চেন্নাইর পরিবেশ কেমন

এখানে সবাই বন্ধুসুলভ। আমি প্রথম দিন থেকেই এখানে ভালো পরিবেশ পাচ্ছি, কোনো অস্বস্তি কাজ করেনি। মাহি (মাহেন্দ্র সিং ধোনি) ভাই কিছু ফিল্ড সেটাপ দেখিয়েছে, ব্রাভো ডেথ ওভারে কীভাবে বোলিং করতে হয়...এসব ইনপুট খুব মূল্যবান।

বোলিং নিয়েই বেশিরভাগ কথা। আমারতো এর বাইরে কম কথা হয়। মাঠে কথা হয় টুকটাক, কোনটা করলে কি হয়। মাহি ভাই এসেই আমাকে বলে। এটা এই করলে ভালো হয়।

আইপিএলের আবহ

অন্য যেকোনো টুর্নামেন্টের চেয়ে আইপিএলে সব স্টাররা থাকে। সব দেশের। এখানে সফল হলে অন্য জায়গায় আমার জন্য সহজ হবে। আমার কাছে মনে হয়। বেশ ভালোলাগা কাজ করে যখন আমি বড় দলের বিপক্ষে খেলি। আর বড় দলের বিপক্ষে আপনি যখন পারফর্ম করবেন তখন সেটা হাইলাইটও হয় বেশি। এটা নরমালি, আমার সসসময়ই বড় দলের বিপক্ষে খেলতে ভালো লাগে। অনেক দর্শক থাকে, সবকিছুই।

অন্যদের খেলা দেখা নিয়ে

বরাবরই আমি একটু খেলা কম দেখি। খেলতে পছন্দ করি। আমি এমনিতে খেলা দেখি কম। আমার মনে হয় এই সময়টা দেখলে ভালো হয়। টি-টোয়েন্টি খেলা দেখলে আমি শেষের ৪ ওভার...শেষদিকে দেখি। ব্যাটসম্যানরা কোনদিকে মারতেছে, কি করে। এগুলো একটু দেখি বেশি। এমনি আমি পুরো ২০-২০ ৪০ ওভার শেষ করি খুব কম।

ক্রিকেটার হওয়ার আগের জীবন

ওটা একরকম লাইফ ছিল এটা আরেক রকম লাইফ। যখন ক্রিকেটার ছিলাম না তখন সব জায়গায় যেতে পারতাম। এখন যাইতে পারি না। একটু কষ্ট হয়। সবাই ছবি তুলতে চায়। অস্বস্তি লাগে এই আরকি।

সামনে আর কি করতে চান

যেকোনো স্পোর্টসে দেখবেন ভালোর শেষ নাই। যেটা পেছনে চলে গেছে সেটা চলে গেছে। ওটাতো আমি ফেরাতে পারবো না। যে আমি এই ম্যাচে এই উইকেট পেয়েছিলাম এটা। ওটা দেখে বসে থাকলে হবে না, সামনে আরও খেলা আছে। আমি কি করলে ভালো করতে পারবো সবসময় এটা ভাবি।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

7h ago