বিশ্বকাপে অনেক দূর যাওয়ার ‘সব রসদ’ বাংলাদেশের আছে

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরে অংশ নিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা হবে বাংলাদেশ। প্রতিযোগিতাটি চলবে ৩ থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত। ২০১৪ সালে প্রথমবার নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে নেমে দুটি ম্যাচ জিতলেও সবশেষ চার আসরে জয়হীন বাংলাদেশ। গতকাল মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টাইগ্রেসদের অফিসিয়াল ফটোশুটের পর দ্য ডেইলি স্টারের সামসুল আরেফীন খানকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাংলাদেশ নারী দলের প্রধান কোচ হাশান তিলকরত্নে। সেখানে অন্যান্য বিষয়গুলোর পাশাপাশি উঠে এসেছে দলের সামগ্রিক প্রস্তুতি এবং অপেক্ষমাণ চ্যালেঞ্জগুলো। সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য:

দ্য ডেইলি স্টার: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাংলাদেশ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে স্থানান্তরিত হওয়ার পর সেখানে মানিয়ে নিতে কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে?

হাশান তিলকরত্নে: এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বকাপ সরে গেছে। তবে এমন কিছু বিষয় আছে, যা আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। তাই আমাদের অবশ্যই ইতিবাচক মানসিকতা গ্রহণ করতে হবে। শারজাহতে খেলার কারণে সেখানকার উইকেটগুলোর অভিজ্ঞতা অবশ্যই আমাদের কাজে আসবে। বিষয়টা হলো নিজেদের ওপর বিশ্বাস করা ও পরিকল্পনাগুলো কার্যকর করা।

স্টার: আপনি কি মনে করেন, ২০২২ সালে আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব টুর্নামেন্টে জেতার অভিজ্ঞতা এবার কাজে আসবে?

তিলকরত্নে: আমরা সবাই জানি, বিশ্বকাপ একটি চ্যালেঞ্জিং টুর্নামেন্ট। আমরা কেবল আমাদের পরিকল্পনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি এবং সেজন্য আমাদের কাছে সব ধরনের রসদ রয়েছে। ক্রিকেটাররা আগেও আরব আমিরাতে খেলেছে। আমি মনে করি, সেই অভিজ্ঞতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি নিশ্চিত যে তারা এই খেলার গুরুত্বটা বোঝে। আর তারা সেই অনুযায়ী খেলবে এবং অনেক দূর পর্যন্ত যাবে বলে আমি আত্মবিশ্বাসী।

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

স্টার: তুলনামূলকভাবে দুর্বল প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ডের পাশাপাশি বাংলাদেশের গ্রুপে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, যাদেরকে গত বছর তাদের মাটিতে হারিয়েছে টাইগ্রেসরা। এটা কি আপনাকে আশাবাদী করে তুলছে?

তিলকরত্নে: সব দলই চ্যালেঞ্জিং। আমরা কাউকে হালকাভাবে নিতে পারি না। যেহেতু আমি গত দুই বছর ধরে এদের সঙ্গে কাজ করছি, আমি তাদের মানসিকতা, দক্ষতা ও অন্যন্য সবকিছুই বুঝতে পারি। আমি নিশ্চিত যে আমাদের কাছে সমস্ত রসদ রয়েছে এবং এই মেয়েরা খুব দক্ষতাসম্পন্ন। তারা যদি তাদের 'এ' (সামর্থ্যের সর্বোচ্চ) খেলাটা খেলতে পারে, তাহলে আমাদের ভালো সুযোগ আছে। কারণ আমরা দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদের আঙিনায় হারিয়েছি। আমাদের খেলায় অনেক ইতিবাচক দিক আছে। আমাদের শুধু এটা চালিয়ে যেতে হবে এবং দল হিসেবে খেলতে হবে।

স্টার: সম্প্রতি লেগ-স্পিনার রাবেয়া খান একজন শীর্ষ পারফর্মার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তার উন্নতিকে আপনি কীভাবে বর্ণনা করবেন?

তিলকরত্নে: সে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ। সে খুব দ্রুত উন্নতি করছে, যা বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের জন্য একটি ইতিবাচক লক্ষণ। ১৭ বা ১৮ বছর বয়সী একজনের দুই বছরের মধ্যে এত দ্রুত বিকশিত হওয়া সত্যিই বাংলাদেশের জন্য দারুণ। সে নারী টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে ওপরের দিকে উঠে এসেছে, যা আমাদের জন্য আরেকটি ইতিবাচক দিক। আমাদের তার প্রতি অনেক আস্থা রয়েছে এবং আমি নিশ্চিত, যা যা প্রয়োজন তা সে করবে। এছাড়া, সে ভীষণ বুদ্ধিমান মেয়ে।

স্টার: অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির ব্যাটিংয়ের ওপর দলের অতিরিক্ত নির্ভরতা নিয়ে আপনার মতামত কী?

তিলকরত্নে: হ্যাঁ, আমরা প্রায়শই নিগার ও অন্য ছয়-সাত ব্যাটারের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছি। কীভাবে তাকে সমর্থন করা দরকার তা বাকিদের জানিয়েছি। আপনি একদম ঠিক ধরেছেন, আমরা নিগারকে অযাচিত চাপ দিয়ে ফেলছি। সেজন্য আমি (ব্যাটিং লাইনআপে) বিভিন্ন কম্বিনেশন সাজিয়ে চেষ্টা করেছি, যাতে বাকিরা তার কাছ থেকে কিছুটা চাপ নিজেরা নিতে পারে। এখন বেশ কিছু কম্বিনেশন রয়েছে এবং আমি নিশ্চিত, সবাই তাদের ভূমিকা বুঝতে পেরেছে এবং সেই অনুযায়ী খেলবে।

স্টার: এবারের দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড় ২০২৩ সালের সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছেন। আপনি কি মনে করেন, ডিপিএল ও এনসিএলের মতো মাত্র কয়েকটি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট জাতীয় দলের জন্য পর্যাপ্ত খেলোয়াড় তৈরির জন্য যথেষ্ট?

তিলকরত্নে: বিসিবি একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট এবং একটি দুই দিনের ম্যাচের ক্রিকেট শুরু করে খুব ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রতিযোগিতাগুলোকে আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য আরও চ্যালেঞ্জিং ও প্রতিযোগিতামূলক করতে হবে। আমি অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় দেখছি। তবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য তাদের একটি সঠিক পথ দরকার।

স্টার: নিজ দেশ শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট অঙ্গনেও কাজ করেছেন আপনি। দুই দেশের নারী ক্রিকেটের তুলনা কীভাবে করবেন?

তিলকরত্নে: শ্রীলঙ্কায় নারী ক্রিকেটে অনেক দূর এগিয়েছে... এখানেও একই রকম। আমাদের মেয়েরা সুন্দরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। সেই পথ তৈরি আছে এবং আমি নিশ্চিত, তাদের পেছনে করা বিনিয়োগের ফল পাওয়ার এটাই উপযুক্ত সময়।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

3h ago