সাকিবকে ছাড়া কোন পরিকল্পনায় নামবে বাংলাদেশ?

মিরপুর টেস্ট দিয়েই সাদা পোশাকের ক্যারিয়ারের ইতি টানার কথা ছিলো সাকিব আল হাসানের। কিন্তু রাজনৈতিক কারণেই তার সে ইচ্ছা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এই সিদ্ধান্তে সাকিবই যে শুধু বঞ্চিত হলেন তা না, বিপাকে পড়ল বাংলাদেশ দলও। আচমকাই সাকিবকে ছাড়া পরিকল্পনা সাজাতে হচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তদের, সেটা খুব সহজ হওয়ার কথা না।
সাকিব থাকলে একাদশ সাজানো যেকোনো অধিনায়কের জন্য সহজ। আদর্শ সমন্বয় খুঁজে নিতে একজন বাড়তি ব্যাটার বা একজন বাড়তি বোলারের দিকে যাওয়া যায়। না হলে পড়তে হয় উভয় সংকটে। সাকিবকে ছাড়া অবশ্য অনেক টেস্টই এমন অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশের।
শুক্রবার সাকিবের বদলে বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদকে দলে নিয়েছেন নির্বাচকরা। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু তার বিবৃতিতে স্পষ্ট করেই বলেছেন, সাকিবের বিকল্প পাওয়া কঠিন। সাকিবের মতন ব্যাটিং-বোলিং দুই দিকে সব্যসাচী কেউ তাদের হাতে নেই।
যে দুটি দলকে এখনো বাংলাদেশ টেস্টে হারাতে পারেনি তার একটি দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ঘরের মাঠে প্রথম ইতিহাস গড়ার সুযোগ। সেটা করতে স্পিন বান্ধব উইকেট বানিয়েই প্রতিপক্ষের দুর্বলতায় আঘাত করার চিন্তা থাকবে। সাকিব থাকলে একাদশ নিয়ে এক্ষেত্রে কোন সংশয় ছিলো না। তিন স্পিনার হিসেবে খেলতেন মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও সাকিব। সাকিব না থাকায় তার জায়গা কে নেবেন এটা বড় প্রশ্ন।
মিরাজ ও তাইজুলের সঙ্গে হাসান মুরাদ নাকি অফ স্পিনার নাঈম হাসানকে খেলানো হবে এই সিদ্ধান্তই মিরপুর টেস্টের সবচেয়ে বড় কৌতূহলের জায়গা। দুই জনের ব্যাপারেই ইতিবাচক-নেতিবাচক দুই দিক আছে।

মুরাদকে একাদশে রাখলে ব্যাটিং কিছুটা দুর্বল হয়ে যায়। টেল এন্ড হয়ে পড়ে লম্বা। নাঈম সাকিবের মতন না হলেও তিনি ব্যাটিং পারেন। কিছুটা লড়াই তার কাছ থেকে প্রত্যাশিত থাকে। বোলিংয়ের দিক থেকে আবার ভিন্ন সমস্যা। দক্ষিণ আফ্রিকার বর্তমান স্কোয়াডে বাঁহাতি ব্যাটার কেবল দুজন। বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে দুই বাঁহাতি ব্যাটারের জন্য দুই অফ স্পিনার খেলানোর বাস্তবতা নেই। প্রতিপক্ষের স্কোয়াডে ডানহাতি ব্যাটার বেশি হলে বাঁহাতি স্পিনারের দিকেই ঝোঁকে টিম ম্যানেজমেন্ট। এই জায়গায় আবার মুরাদের অভিষেকের সম্ভাবনা উজ্জ্বল।
দেশের বাইরে তিন পেসার খেলালেও মিরপুরে দুই পেসার নিয়ে নামার সম্ভাবনাই বেশি। সাকিব না থাকায় ব্যাটিং অর্ডারেও একটা রদ বদল থাকবে। কিপার ব্যাটার লিটন দাসকে সাতের বদলে এক ধাপ উপরে ছয়ে নামতে হবে।
সাকিবের মতন নাটকীয়ভাবে এই টেস্টের আগে ইতি হয়ে গেছে চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের। তাকে অসদাচরণের অভিযোগে চাকরীচ্যুত করেছে বিসিবি। নতুন কোচ হিসেবে নেওয়া হয়েছে ফিল সিমন্সকে। মাত্রই যোগ দেওয়া সিমন্সের এই সিরিজে খুব বেশি ইনপুট দেওয়ার কথা না। তিনি হয়ত থাকবেন পর্যবেক্ষণে। অধিনায়ক শান্তর সঙ্গে সহকারী কোচ নিক পোথাস ও বাকি কোচিং স্টাফরা মিলেই ঠিক করবেন দলের কৌশল।
Comments