খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ফাইনালে রংপুর রাইডার্স

ছবি: সংগৃহীত

প্রথম দুই ম্যাচে হেরে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে ছিল রংপুর রাইডার্স। গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়ার জোরালো শঙ্কা জেঁকে বসেছিল তাদের ওপর। সেই দলই খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে পৌঁছে গেল গ্লোবাল সুপার লিগের ফাইনালে। অঘোষিত সেমিফাইনালে পরিণত হওয়া ম্যাচে লাহোর কালান্দার্সকে বিদায় করে দিল তারা। খেলা শেষ হতেই তীব্র উল্লাসে মাতোয়ারা হলেন দলটির সবাই।

গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে বৃষ্টির কারণে মাত্র ৯ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ডিএলএস পদ্ধতিতে ২৩ রানে জিতেছে রংপুর। এতে গ্লোবাল সুপার লিগের প্রথম আসরের শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা।

সেমিফাইনালে রূপ নেওয়া লড়াইয়ে জিতলেই চলত লাহোরের। পাকিস্তানের দলটি ফাইনালে তখন ফাইনালে উঠে যেত। তবে রংপুরের জন্য সমীকরণ কিছুটা জটিল ছিল। জয়ের পাশাপাশি নেট রান রেট বাড়িয়ে নেওয়ার চাহিদা ছিল তাদের। দারুণ পারফরম্যান্সে সেটা তারা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। গ্রুপ পর্ব শেষে রংপুর, ওয়েস্ট ইন্ডিজের গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স ও লাহোরের পয়েন্ট সমান ৪। রান রেটে এগিয়ে থাকা রংপুর ফাইনালে মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে। ম্যাচটি শুরু হবে আগামীকাল শনিবার বাংলাদেশ সময় ভোট পাঁচটায়।

বাংলাদেশ সময় সকালে শেষ হওয়া ম্যাচে রংপুর টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে। কিন্তু ৯ ওভারে ১ উইকেটে ৮৫ রান তোলার পর বৃষ্টির বাগড়ায় নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বাধীন দলটি আর চালিয়ে যেতে পারেনি। ব্যাট হাতে দেড়শর বেশি স্ট্রাইক রেটে খেলেন সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান।

রংপুর স্রেফ ১ উইকেট খোয়ানোয় লাহোর ডিএলএস পদ্ধতিতে পায় ১১১ রানের বড় লক্ষ্য। তবে শেখ মেহেদী হাসানের করা ইনিংসের প্রথম ওভারেই বিশাল ধাক্কা খায় তারা। পতন হয় ৩ উইকেটের। এরপর অনেক চেষ্টা করেও শেষমেশ তারা পৌঁছাতে পারে ৭ উইকেটে ৮৭ রান পর্যন্ত।

রংপুর উড়ন্ত উদ্বোধনী জুটি পায় স্টিভেন টেইলর ও সৌম্যের উত্তাল ব্যাটে। ৪.২ ওভারে ৪৭ রান যোগ করেন তারা। জুটি ভাঙে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩ বলে ২২ রান করা সৌম্য বোল্ড হলে। কিন্তু স্কোরবোর্ডে রান তরতর করে বাড়তে থাকা অব্যাহত থাকে। টেইলর কিছুটা মন্থর হয়ে গেলেও সাইফ হাসান ক্রিজে গিয়েই মারতে শুরু করেন।

মাঝে একবার বৃষ্টির কারণে বন্ধ থাকে খেলা। আবার শুরু হলেও ফের বৃষ্টির হানায় ইনিংসের নবম ওভারের পর আর ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারেনি রংপুর। টেইলর ২৭ বলে ৩২ এবং সাইফ ১৪ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন। দুজনেই চারটি করে চার ও একটি করে ছক্কা হাঁকান।

লক্ষ্য তাড়ায় নামা লাহোরকে শুরুতেই কাঁপিয়ে রংপুর চালকের আসনে বসে পড়ে। প্রথম ওভারের তৃতীয় ডেলিভারিতে লুক ওয়েলসের শটের পর বল শেখ মেহেদীর হাত ছুঁয়ে আঘাত করে স্টাম্পে। ক্রিজের বাইরে থাকায় রানআউট হন নন-স্ট্রাইক প্রান্তের অ্যাডাম রসিংটন। পরের বলে স্টাম্পড হয়ে বিদায় নেন ওয়েলস। মোহাম্মদ ফাইজান ক্রিজে গিয়েই হন বোল্ড। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেও ঘটনাবহুল ওভারটির শেষ বলে উইকেট পাননি শেখ মেহেদী।

মোহাম্মদ আখলাক পাল্টা আক্রমণের আভাস দেন। আক্রমণে ফিরে তাকে থিতু হতে দেননি শেখ মেহেদী। তৃতীয় ওভারে দলীয় ১৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে লাহোরের সম্ভাবনা প্রায় ফিকে হয়ে যায়। এরপর তারা কেবল হারের ব্যবধানই কমাতে পারে। মির্জা বেগ ২০ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ৩১ এবং টম অ্যাবেল ১২ বলে পাঁচটি চারে ২৫ রানা করেন। রংপুরের পক্ষে শেখ মেহেদী ১১ রান খরচায় শিকার করেন ৩ উইকেট।

Comments

The Daily Star  | English

A blatant river grab

Confluence of Dhaleshwari and Shitalakkhya under siege from Shah Cement

10h ago