জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টি

শেষ ৩ বলে ৩ রানআউট, সোহানদের ১ রানের রুদ্ধশ্বাস জয়

ছবি: বিসিবি

হাতে ৪ উইকেট নিয়ে শেষ ওভারে ৯ রান দরকার পড়ল বরিশাল বিভাগের। তৃতীয় বলে মেহেদী হাসান রানাকে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে চার মারলেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। সমীকরণ নামিয়ে আনলেন ৩ বলে ৩ রানে। কিন্তু সহজ এই চাহিদা প্রতিপক্ষকে পূরণ করতে না দিয়ে রুদ্ধশ্বাস জয় তুলে নিল খুলনা বিভাগ।

শেষ ৩ বলে স্রেফ ১ রান নিতে পারে বরিশাল। সেটাও আসে পেসার রানার দেওয়া ওয়াইড থেকে। উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে বল থাকা অবস্থায় রান নিতে গিয়ে একে একে রানআউট হন তিন ব্যাটার। তারা হলেন যথাক্রমে রাব্বি, তানভির ইসলাম ও রুয়েল মিয়া। সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে পরের দুজনকে সাজঘরে পাঠিয়ে খুলনার জয় নিশ্চিত করেন অধিনায়ক সোহান।

বৃহস্পতিবার জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টিতে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রোমাঞ্চকর লো-স্কোরিং ম্যাচে ১ রানে জিতেছে খুলনা। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ১৩০ রান তোলে তারা। জবাবে পুরো ওভার খেলে বরিশাল পৌঁছাতে পারে ৯ উইকেটে ১২৯ রান পর্যন্ত।

১৩তম ওভারে ৬৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বরিশালকে লড়াইয়ে ফেরান মইন খান। ক্রিজে গিয়ে বাউন্ডারি মারার পাশাপাশি সিঙ্গেল-ডাবলস বের করে প্রতিপক্ষের ওপর তৈরি করেন চাপ। আব্দুল মজিদের সঙ্গে তার ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৩৪ বলে আসে ৪৭ রান।

ওপেনার মজিদ ফিফটি করলেও ছিলেন ভীষণ মন্থর। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর করা ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ৫১ রান করে আউট হন তিনি। তার ৫৩ বলের ইনিংসে চার ছিল পাঁচটি। বাকি চার বলে মইনের হাঁকানো একটি চারসহ মোট ৯ রান তোলে বরিশাল। এতে সমীকরণ নেমে আসে ৬ বলে ৯ রানে।

ম্যাচের ঘটনাবহুল শেষ ওভারের প্রথম বলে লেগ বাই থেকে আসে এক রান। স্ট্রাইক পান স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে থাকা মইন। তিনি সিঙ্গেল নেওয়ার পর রাব্বি পুল করে মারেন বাউন্ডারি। জয়ের পাল্লা হেলে পড়ে বরিশালের দিকে। কিন্তু শেষ ৩ বলে নাটকীয়তা ধারণ করে চরম আকার।

চতুর্থ বল রাব্বির ব্যাটে লেগে পেছনে যায় সোহানের গ্লাভসে। তিনি সরাসরি থ্রোতে স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প ভাঙলেও ক্রিজেই ছিলেন ব্যাটার। তবে নন-স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে ততক্ষণে দৌড়ে অনেকখানি এগিয়ে এসেছিলেন মইন। অন্যদিকে, স্টাম্পে আঘাত করা বল চলে যায় বোলার রানার হাতে। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার মইনকে বাঁচাতে নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন রাব্বি। তিনি অপরপ্রান্তে পৌঁছানোর আগেই স্টাম্প ভেঙে দেন রানা।

বরিশালের আশার আলো হয়ে জ্বলতে থাকা মইন পঞ্চম ডেলিভারিতে ব্যাট ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন। তবে রানের জন্য দৌড় শুরু করেন তিনি। অন্যপ্রান্তে থাকা তানভির ক্রিজে ঢোকার আগেই নিখুঁত থ্রোতে স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প ভাঙেন সোহান। এরপর অফ স্টাম্পের বাইরে ওয়াইড হলে সমীকরণ নেমে আসে ১ বলে ২ রানে।

ম্যাচের ও রানার শেষ বল ছিল শর্ট লেংথের। তাতে ব্যাট স্পর্শ করাতে ব্যর্থ হলেও টাই করার জন্য ছুটতে শুরু করেন রুয়েল। এবার সোহানের সরাসরি থ্রো ভেঙে ফেলে নন-স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প। মইন চারটি চার ও একটি ছক্কায় অপরাজিত থেকে যান ২৭ বলে ৪৩ রানে।

এর আগে খুলনাকে লড়াইয়ের পুঁজি পাইয়ে দেওয়াতেও মূল ভূমিকা ছিল সোহানের। তিনি ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে খেলেন সর্বোচ্চ ৩৯ রানের ইনিংস। ৩৫ বলে তিনটি চারের পাশাপাশি একটি ছক্কা আসে তার ব্যাট থেকে। বরিশালের পক্ষে বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন পেসার রাব্বি। ৪ ওভারে ২৪ রানে ৪ উইকেট নিলেও তার প্রচেষ্টা শেষমেশ গেছে বিফলে।

Comments

The Daily Star  | English

22 sectors still pay wages below poverty line

At least 22 sectors in Bangladesh continue to pay their workers much less than what is needed to meet basic human needs.

5h ago