জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টি

চোট থেকে ফিরে উজ্জ্বল শান্তকে ছাপিয়ে নায়ক ফজলে

ছবি: বিসিবি

কুঁচকির চোট থেকে সেরে উঠে মাঠে নেমেই আলো ছড়ালেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশের তিন সংস্করণের অধিনায়ক ফিফটি হাঁকিয়ে খেললেন ঝড়ো ইনিংস। তার সঙ্গে হাবিবুর রহমান সোহান ও সাব্বির হোসেনের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেল রাজশাহী বিভাগ। কিন্তু সেটা যথেষ্ট হলো না। লক্ষ্য তাড়ায় আব্দুল মজিদ ও ইফতিখার হোসেন ইফতি সুর বেঁধে দেওয়ার পর ফজলে মাহমুদ রাব্বি করলেন আগ্রাসী হাফসেঞ্চুরি। এরপর মইন খানের কার্যকর ইনিংসে আসরে প্রথম জয়ের স্বাদ পেল বরিশাল বিভাগ।

শনিবার জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টিতে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের আউটার মাঠে রোমাঞ্চকর ম্যাচে রাজশাহীকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে বরিশাল। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে রাজশাহী ৫ উইকেটে তোলে ১৮৪ রান। জবাবে ৩ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে ১৮৮ রান করে জয় নিশ্চিত করে বরিশাল।

শেষ ১২ বলে জয়ের জন্য বরিশালের চাহিদা ছিল ২৭ রানের। ১৯তম ওভারে এলোমেলো বল করা শফিকুল ইসলামের ওপর চড়াও হন ফজলে। তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকানোর পরের দুই বলে মারেন চার। শেষ বলে তিনি আউট হলেও সব মিলিয়ে ওই ওভার থেকে আসে ১৮ রান। সমীকরণ নেমে আসে ৬ বলে ৯ রানে। শেষ ওভারে গোলাম কিবরিয়ার টানা তিন বলে চার মেরে ম্যাচ শেষ করে দেন মইন।

ম্যাচসেরা ফজলে তিন নেমে খেলেন ৫৬ রানের ম্যাচসেরা ইনিংস। চলতি আসরে দ্বিতীয় ফিফটি পূর্ণ করতে তার লাগে ৩২ বল। আউট হওয়ার আগে ৩৪ বলে সমান তিনটি করে চার ও ছক্কা আসে তার ব্যাট থেকে। ওপেনার মজিদ ৩৯ বলে ছয়টি চারের সাহায্যে করেন ৫৩ রান। আরেক ওপেনার ইফতি দুটি করে চার ও ছক্কায় ২৪ বলে থামেন ৩৫ রানে। তাদের উদ্বোধনী জুটিতে ৮.৫ ওভারে আসে ৭৯ রান। এতে রান তাড়ার পথ তৈরি হয়ে যায় বরিশালের।

দুই ওপেনারের রানআউটে বিদায়ের পর গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ নেন অধিনায়ক সোহাগ গাজী। যদিও চাপে পড়েনি বরিশাল। সালমান হোসেন দুটি চার ও একটি ছক্কায় ১২ বলে ২১ রান করে ফেরার পর দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান ফজলে। তিনি শেষ করে আসতে না পারলেও বাকি দায়িত্ব দারুণভাবে পালন করেন মইন। ৮ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

রাজশাহীর সংগ্রহের পেছনে মূল কারিগর ছিলেন অধিনায়ক শান্ত। এক মাসের বেশি সময় মাঠের বাইরে থাকা বাঁহাতি ওপেনিং ব্যাটার ৫৪ বল মোকাবিলায় খেলেন ৮০ রানের ইনিংস। তার ব্যাট থেকে পাঁচটি চারের সঙ্গে আসে চারটি ছক্কা। কিছুটা মন্থর থাকলেও হাফসেঞ্চুরির পরে আগ্রাসী হয়ে ওঠেন শান্ত। ৪২ বলে ফিফটি ছুঁয়ে পরের ১২ বলে ২৮ রান যোগ করেন তিনি।

বরিশালের বোলারদের ওপর আগ্রাসন চালিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে শান্ত ও হাবিবুর আনেন ৬০ বলে ৮৯ রান। এতে ভালো পুঁজির ভিত মিলে যায় রাজশাহীর। হাবিবুর একটি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ৩৩ বলে ৪৭ করে মইনের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। সাব্বির ক্রিজে গিয়েই মারতে শুরু করেন। তবে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ১১ বলে একটি চার ও দুটি ছক্কায় ২৩ রান করে মেহেদী হাসানের শিকার হন তিনি। মইনের পরের ওভারে মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই বিদায় নেন প্রিতম কুমার।

এরপর মেহেরব হাসান ধুঁকতে থাকায় রাজশাহীর রান তোলার গতি কমে যায়। এক পর্যায়ে দলটি দুইশ ছোঁয়ার সম্ভাবনা জাগালেও তা ফিকে হয়ে যায়। রুয়েল মিয়ার বলে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে শান্ত পূর্ণ করেন হাফসেঞ্চুরি। ১৪ বলে ১০ রানে মেহেরব থামার পর শান্ত দ্রুত এগোতে থাকেন। মেহেদীর করা ১৯তম ওভারের প্রথম তিন বলে যথাক্রমে ছক্কা, চার ও ছক্কা মারেন। এরপর আরেকটি বড় শটের চেষ্টায় পঞ্চম বলে ধরা পড়েন ডিপ মিড উইকেটে।

শান্তর ইনিংস শেষ পর্যন্ত যায় বিফলে। গত নভেম্বরে শারজাহতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে চোট পেয়েছিলেন তিনি। সেকারণে ওই সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে খেলতে না পারার পাশাপাশি তিনি ছিটকে গেছেন বাংলাদেশ দলের চলমান ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকেও। তাকে ছাড়াই ক্যারিবিয়ানদের মাটিতে তিন সংস্করণের পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলছে টাইগাররা।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda leaves London for Dhaka in air ambulance

Fakhrul urges BNP supporters to keep roads free, ensure SSC students can reach exam centres

5h ago