২০২৪ এখন অতীত, জাকেরের দৃষ্টি সামনের দিকে

ওয়েস্ট ইন্ডিজে এবার দারুণ সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে না পারলেও টি-টোয়েন্টি সিরিজে উল্টো হোয়াইটওয়াশ করেছে ক্যারিবিয়ানদের। আর টেস্ট সিরিজ করেছে ড্র। আর এই সিরিজে দুর্দান্ত পারফর্ম করে সব সংস্করণেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন জাকের আলী অনিক। যদিও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তার পারফরম্যান্স আশানুরূপ ছিল না। তবে ক্যারিবিয়ানে ধারাবাহিকভাবে রান করে আলো ছড়িয়ে দলে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করেছেন। এই সিরিজের অভিজ্ঞতা, নিজের দায়িত্ব, দলের মানসিকতা এবং তার ধারাবাহিক পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলেছেন দৈনিক ডেইলিস্টারের আবদুল্লাহ আল মেহদির সঙ্গে। সেই বিশেষ সাক্ষাৎকারের উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য:

দ্য ডেইলিস্টার: আপনার মতে, দলগত দৃষ্টিকোণ থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর কেমন ছিল?

জাকের আলী: আমাদের জন্য অসাধারণ ছিল। প্রথম টেস্টে ভালো খেলতে না পারলেও দ্বিতীয় টেস্টে আমরা কামব্যাক করি। ওয়ানডেতে বেশিরভাগ ম্যাচে ভালো খেলেছি, যদিও বোলিং ইউনিট হয়তো তাদের স্বাভাবিক মানের পারফরম্যান্স দিতে পারেনি। তবে টি-টোয়েন্টিতে তারা নিজেদের প্রমাণ করেছে।

ডেইলিস্টার: টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের অনুভূতি কেমন?

জাকের: কোচ (ফিল সিমন্স) আমাদের বলেছিলেন, কোনো সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না। তৃতীয় ম্যাচের আগে তিনি বলেছিলেন, "যখন বাড়ি ফিরবে, তখন বুঝতে পারবে কী অর্জন করেছ।" এখন বাড়ি ফেরার পর সত্যিই সেটা অনুভব করছি।

ডেইলিস্টার: আপনার পাওয়ার-হিটিং নিয়ে এখন কি বেশি আত্মবিশ্বাসী?

জাকের: শেষ টি-টোয়েন্টির ইনিংসটা (৭২ অপরাজিত) আমার কাছে বিশেষ। কারণ, বোলাররা আমার সুবিধাজনক জায়গায় বল করছিল না। প্রথম ওয়ানডের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা বুঝে গিয়েছিল, স্লগ ওভারে স্টাম্প বরাবর বল করলে আমি সহজেই রান তুলব। তাই তারা বেশি ওয়াইড বল করতে শুরু করে। এই ধরনের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে রান করা বিশেষ কিছু ছিল। আমি তাদের পরিকল্পনা বুঝে স্টান্স বদলাই। তারা ওয়াইড ইয়র্কার কিংবা স্লোয়ার বল করছিল, আর আমি বলের কাছাকাছি যেতে শাফল করছিলাম।

ডেইলিস্টার: সিনিয়র সহকারী কোচ সালাহউদ্দিন মানসিকতা বদলানোর কথা বলেছেন। আসলে কী বলেছেন তিনি?

জাকের: তিনি সবসময় পরিষ্কার ধারণা দেন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, তিনি আমাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে বলেছেন… স্বাধীনভাবে খেলতে বলেছেন। একটা ছোট উদাহরণ দেই। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আমরা মাত্র ২২৭ রান করেছিলাম। তখন তিনি মিটিংয়ে বলেছিলেন, "দেখো, এমন উইকেটে যদি আমরা ২২০ করি, আমরা হারব। আমরা যদি ইন্টেন্ট না দেখাই, তবুও হারব। কিন্তু যদি ইন্টেন্ট দেখিয়ে ১৫০ করি আর হারি, তাতে সমস্যা নেই। তবে আমাদের ৩০০+ করতে হবে।" তৃতীয় ম্যাচে আপনারা দেখেছেন, আমরা ৩২১ করেছিলাম।

ডেইলিস্টার: এই বছর টেস্ট ও ওয়ানডে অভিষেক এবং বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতাগুলোকে কীভাবে দেখছেন?

জাকের: সত্যি বলতে, এসব নিয়ে ভাবি না। যা হয়েছে, ভালো হোক বা খারাপ, তা শেষ হয়ে গেছে। আমি ভবিষ্যতের দিকে তাকাই। ভালো জিনিসের জন্য অবশ্যই কৃতজ্ঞ, তবে অতীত নিয়ে পড়ে থাকতে চাই না। সামনে কীভাবে আরও ভালো করা যায়, সেটাই ভাবি। এখন ফিটনেস নিয়ে কাজ করছি।

ডেইলিস্টার: আপনাকে প্রায়ই অফ-সাইডে সীমিত বলা হয়। আপনি কী ভাবেন এ নিয়ে?

জাকের: আমার অফ-সাইডে খেলতেই হবে, এমন কোনো বিষয় নেই। গুরুত্বপূর্ণ হলো রান করা। আমি কখনো এটা অনুভব করিনি। বরং নিজের শক্তির জায়গায় খেলার চেষ্টা করি এবং এটাই চালিয়ে যাব। আমার শক্তি হলো বলের কাছাকাছি যাওয়া। ব্যাট সুইংয়ের কারণে প্রায়ই অন সাইডে বল চলে যায়, তবে আমার লক্ষ্য থাকে সোজা খেলার। আমি জানি কীভাবে খেলতে হয়, এবং সেটা অফ-সাইড বা লেগ-সাইড দিয়ে রান করতেই হবে এমন নয়। বলের সঙ্গে মুহূর্তের সময়ে মানিয়ে নিতে হয়… এটা পুরোপুরি অনুশীলন ও মানসিকতার ব্যাপার।

ডেইলিস্টার: শোনা যায়, আপনি ছোটবেলায় পুরস্কার নেওয়ার সময় কী বলবেন, তা অনুশীলন করতেন?

জাকের: হ্যাঁ, অনুশীলন করতাম। যেমন, আমি কীভাবে ম্যান-অফ-দ্য-ম্যাচ পুরস্কার গ্রহণ করব। ছোটবেলায় আমি বাংলাদেশের ক্রিকেটের বড় ভক্ত ছিলাম, আর এখন সত্যি এসব হচ্ছে, যা আমাকে অনেক আনন্দ দেয়।

ডেইলিস্টার: সামনে ওয়ানডে নিয়ে কী ভাবছেন, বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে?

জাকের: দলের বর্তমান মানসিক দৃঢ়তা দেখে মনে হচ্ছে আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কিছু ভালো করব। বড় কিছু। আমাদের ভালো সুযোগ রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
Growth of NBR's tax collection

March revenue growth nears 10%, but no cause for cheer

NBR still needs Tk 65,000cr per month to hit IMF target for FY25

10h ago