চট্টগ্রাম টেস্টে দুই দিনেরই শেষ সেশনে অদ্ভুত প্যাটার্ন

বাংলাদেশের এক কোচ একবার নাকি বলেছিলেন, বেলা তিনটা বাজলেই নাকি চট্টগ্রামের উইকেটে পড়ে জোয়ার-ভাটার প্রভাব। শেষ বেলায় তাই এই মাঠে পড়তে থাকে একের পর এক উইকেট। হয়ত এটা তার করুন রস। কারণ এসব কথার যৌক্তিক বা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তবে চট্টগ্রাম টেস্টের দুই দিনেও এই অদ্ভুত প্যাটার্নে ধসের দেখা মিলল।
সোমবার টস জিতে বেশ ভালো শুরু করে জিম্বাবুয়ে। প্রথম দুই সেশন শেষে তারা রীতিমতো ভয় ধরানোর অবস্থা করেছিলো বাংলাদেশ। কারণ স্কোর-বোর্ডে ২ উইকেটে ১৬১! সফরকারী দলের তিনশো ছাড়িয়ে অনেক দূর যাওয়ার সম্ভাবনাও তখন আলোচনায়। কিন্তু চা-বিরতির পর ভোজবাজির মতন বদলে গেল সব।
এক সেশনে জিম্বাবুয়ে ৬৬ রান তুলে হারালো ৭ উইকেট! এই ধসের কারণেই তাদের ইনিংস থেমে যায় ২২৭ রানে। মঙ্গলবার বাংলাদেশের ইনিংসে মড়কও এই শেষ সেশনে লেগেছে। প্রথম সেশনে কোন উইকেটই হারায়নি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে উইকেট পড়ে তিনটি, এরমধ্যে দুটি আবার সেশনের একদম শেষ প্রান্তে, বলা যায় সূর্যের পশ্চিম আকাশে হেলে পড়া শুরু হতে। চা-বিরতির পর শেষ সেশনে ৮৬ রান তুলে বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলে ৪ উইকেট। একদম পাঁচশো ছাড়িয়ে যাওয়ার অবস্থা থেকে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৯১ রান!
দুই দিনের খেলায় প্রথম দুই সেশনে দুই দলের ইনিংস মিলিয়ে উইকেট পড়ে মোট পাঁচটি। কিন্তু শেষ সেশনে উইকেট পড়েছে ১১টি। এমন না বেলা বাড়লে আহামরি কোন বদল আসে উইকেটে। আউটের ধরণ ব্যাখ্যা করলেও তা অনেকটা পরিষ্কার হয়। বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে যেমন ৪০ রান করে থিতু হয়ে অদ্ভুতভাবে রান আউট হন মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হকরা বাজে শটে দেন আত্মাহুতি। আগের দিন জিম্বাবুয়ের ইনিংসেও ছিলো একাধিক আত্মাহুতি।
বাংলাদেশের হয়ে সেঞ্চুরি করা বাঁহাতি ওপেনার সাদমান বলছেন, উইকেটে খুব বদল দেখতে পাননি তারা। তবে তৃতীয় দিনের খেলায় সেই বদল আসতে পারে। স্পিনাররা পেতে পারেন আরও সুবিধা, সেদিক থেকে বুধবার দিনের শুরু থেকেই ব্যাটারদের যাওয়া-আসার মিছিল দেখা অস্বাভাবিক না।
সাদমান মনে করেন, ম্যাচের এই অবস্থায় তৃতীয় দিনে সাগরিকার মাঠের বাইশগজ স্পিনারদের বাড়তি সুবিধা দিলে বরং সেটা তাদের দলের জন্যই সুখবর, 'এখন পর্যন্ত গতকাল আর আজ আমার কাছে একই মনে হয়েছে (পিচ)। তিন দিনের থেকে অবশ্যই উইকেটে হয়তোবা সাহায্য আসতে পারে বোলারদের। আশা থাকবে ওভাবে যদি আমাদের বোলারদের পরিকল্পনা হয়, ভালো কিছু হবে।'
Comments