হালান্ডের জোড়া লক্ষ্যভেদ, ম্যানচেস্টার সিটির গোল উৎসব

ছবি: টুইটার

কেভিন ডি ব্রুইনা ও ফিল ফোডেন থাকলেন অব্যবহৃত বদলি হিসেবে। তবে দুই তারকার অনুপস্থিতির কোনো ছাপ পড়ল না ম্যানচেস্টার সিটির পারফরম্যান্সে। ডেনমার্কের ক্লাব এফসি কোপেনহেগেনকে নিয়ে তারা করল রীতিমতো ছেলেখেলা! গোলমুখে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা আর্লিং হালান্ড ফের কাড়লেন আলো। বড় জয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বের দিকে এক ধাপ এগিয়ে গেল পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা।

বুধবার রাতে ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে 'জি' গ্রুপের ম্যাচে ৫-০ গোলে জিতেছে ম্যান সিটি। চোখ ধাঁধানো নৈপুণ্য উপহার দেয় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপাধারীরা। প্রথমার্ধে জোড়া গোল করেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার হালান্ড। বিরতির পর নিশানা ভেদ করেন আলজেরিয়ান উইঙ্গার রিয়াদ মাহরেজ ও আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার হুলিয়ান আলভারেজ। অন্য গোলটি আত্মঘাতী।

বল দখল ও আক্রমণে একচেটিয়া প্রাধান্য দেখায় স্বাগতিকরা। গোলমুখে তাদের নেওয়া ৩০টি শটের ১৬টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, সফরকারীরা তেমন কোনো পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি সিটির ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এদারসনকে। গোলমুখে তারা দুটি শট নিলেও কোনোটি ছিল না লক্ষ্যে।

ম্যাচে এগিয়ে যেতে মাত্র সাত মিনিট সময় নেয় সিটি। ডান প্রান্তে ফাঁকা জায়গা পেয়ে আক্রমণে ওঠেন পর্তুগিজ ডিফেন্ডার জোয়াও কানসেলো। ডি-বক্সের ভেতরে তিনি ফেলেন বিপজ্জনক ক্রস। বাঁ পায়ের তীব্র গতির শটে লক্ষ্যভেদ করেন হালান্ড।

পাঁচ মিনিট পর ইংলিশ উইঙ্গার জ্যাক গ্রিলিশের কোণাকুণি শট বাধা পায় পোস্টে। তিন মিনিট পর হালান্ডের হেড সহজেই লুফে নেন কামিল গ্রাবারা। কোপেনহেগেনের পোলিশ গোলরক্ষক কিছুক্ষণের ব্যবধানে আরও দুটি দুর্দান্ত সেভ দেন। ইল্কাই গুন্দোয়ান ও মাহরেজের শট আটকে দেন তিনি।

২৩ ও ২৪তম মিনিটে ফের দৃঢ়তার পরিচয় দিয়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি ম্যাচে ১২টি সেভ করা গ্রাবারা। চোটের কারণে মুখে মাস্ক লাগিয়ে খেলা ফুটবলার হালান্ডের জোরালো শট প্রতিহত করার পর হতাশ করেন গ্রিলিশকেও। ৩১তম মিনিটে আরেক দফা গ্রিলিশের প্রচেষ্টা পরিণতি পায়নি।

পরের মিনিটেই ২২ বছর বয়সী হালান্ডের কল্যাণে ব্যবধান বাড়ায় সিটিজেনরা। ডি-বক্সের বাইরে থেকে কানসেলোর বুলেট গতির শট রুখে দেন গ্রাবারা। কিন্তু পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। খুব কাছ থেকে ফাঁকা জালে বল পাঠান অরক্ষিত হালান্ড।

সাত মিনিট পর দুর্ভাগ্যজনকভাবে তৃতীয় গোল হজম করে কোপেনহেগেন। স্প্যানিশ ডিফেন্ডার সার্জিও গোমেজের শট প্রতিপক্ষের দুই খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায়। শেষ স্পর্শটি ছিল ডেভিট কোচোলাভার।

বিরতির কিছুক্ষণ আগে ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। দূরের পোস্টে সতীর্থের ক্রস দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নেন বার্নার্দো সিলভা। বিপদ আঁচ করে গোলপোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন গ্রাবারা। কিন্তু পর্তুগিজ মিডফিল্ডারের শট চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই হালান্ডের বদলি হিসেবে কোল পালমারকে মাঠে নামান গার্দিওলা। তরুণ ইংলিশ স্ট্রাইকার ৫১তম মিনিটে ভীতি ছড়ালেও গোল পাননি। চার মিনিট পর পেনাল্টি থেকে স্কোরলাইন ৪-০ করেন মাহরেজ। ডি-বক্সে আইমেরিক লাপোর্ত ফাউলের শিকার হলে স্পট-কিকের বাঁশি বাজান রেফারি।

৭১তম মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে আলভারেজের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। এরপর অল্প সময়ের মধ্যে দুটি সুযোগ তৈরি করে কোপেনহেগেন। কিন্তু জালের ঠিকানা খুঁজে পায়নি তারা। উল্টো ৭৬তম মিনিটে মাহরেজের পাসে ছোট ডি-বক্সের ভেতর থেকে গ্রাবারাকে পরাস্ত করেন আলভারেজ।

গোলের জন্য মরিয়া ছিলেন গ্রিলিশ। কিন্তু ভাগ্যদেবী তার দিকে মুখ তুলে তাকাননি। ৭৮তম মিনিটে তার বাঁকানো শট চলে যায় পোস্ট ঘেঁষে। পাঁচ মিনিট পর মাহরেজের কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।

যোগ করা সময়ে ফের গোলের উল্লাসের সম্ভাবনা জেগেছিল। সতীর্থের কর্নারে ডি-বক্সের প্রান্ত থেকে শট নেন গোমেজ। গ্রাবার ঝাঁপিয়ে পড়ে তা রুখে দেন। ফলে ম্যান সিটির ষষ্ঠ গোলের দেখা মেলেনি।

এই জয়ে গ্রুপের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান মজবুত করল সিটি। তিন ম্যাচে তাদের অর্জন পূর্ণ ৯ পয়েন্ট। ১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে অবস্থান কোপেনহেগেনের। আরেক ম্যাচে সেভিয়ার মাঠে ৪-১ গোলে জেতা বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুইয়ে। গোল পার্থক্যে সেভিয়া ১ পয়েন্ট পেয়ে তিনে রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

BNP's name being misused for personal gains: Rizvi

He urges party men to remain vigilant against committing misdeeds

11m ago