রদ্রিগোর নৈপুণ্যে চেলসিকে ফের হারিয়ে সেমিতে রিয়াল
নিজেদের সেরাটা নিংড়ে দিল চেলসি। তবে তাদের তীব্র আক্রমণ সামলে নিল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। পাল্টা আঘাত হেনে দ্বিতীয়ার্ধে রদ্রিগো করলেন জোড়া গোল। তার নৈপুণ্যে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের টিকিট পেল স্প্যানিশ লা লিগার পরাশক্তিরা।
মঙ্গলবার রাতে প্রতিপক্ষের মাঠ স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ২-০ গোলে জিতেছে রিয়াল। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-০ ব্যবধানের অগ্রগামিতায় তারা জায়গা করে নিয়েছে আসরের শেষ চারে। কোয়ার্টারের প্রথম লেগে নিজেদের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতেও ২-০ গোলে জিতেছিল কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসরের শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে রিয়াল এগিয়ে গেল আরও এক ধাপ। সেমিতে তাদের প্রতিপক্ষ হবে জার্মান বুন্দেসলিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ কিংবা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি।
ধুঁকতে থাকা চেলসি অন্তর্বর্তী কোচ ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের অধীনে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা চার ম্যাচ হারল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে তাদেরকে থাকতে হচ্ছে শিরোপাশূন্য। সবশেষ সাত মৌসুমে মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো ঘটল এমন কিছু। প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ চার থেকে চেলসি পিছিয়ে আছে ১৭ পয়েন্ট। ফলে আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তাদের খেলতে না পারা একরকম নিশ্চিত।
নিজেদের ডেরায় প্রতিপক্ষকে বেশ চাপে ফেলে চেলসি। তবে তা যথেষ্ট হয়নি জয়ের জন্য। তারা ৫৪ শতাংশ সময় বল পায়ে রাখার পাশাপাশি গোলমুখে ১৯টি শট নিয়ে ছয়টি রাখে লক্ষ্যে। অন্যদিকে, রিয়ালেরও ছয়টি শট লক্ষ্যে ছিল নয়টির মধ্যে। তাদের একটি শট বাধা পায় পোস্টে।
একাদশ মিনিটে ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগ পায় স্বাগতিকরা। ডি-বক্সের ভেতরে ফাঁকায় থেকে ফরাসি মিডফিল্ডার এনগোলো কান্তে শট নিলেও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। ২০তম মিনিটে ভীতি ছড়ায় রিয়াল। দানি কারভাহালের কাছ থেকে বল পেয়ে রদ্রিগোর জোরালো শট লাগে বাইরের দিকের পোস্টে।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বেলজিয়ান গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার কল্যাণে বেঁচে যায় সফরকারীরা। রিস জেমসের ক্রসে দূরের পোস্টে বল পেয়ে যান স্প্যানিশ ডিফেন্ডার মার্ক কুকুরেয়া। খুব কাছ থেকে তার শট কোনোক্রমে আটকে দেন কোর্তোয়া।
এর আগে রিয়ালই দেখায় দাপট। ৩২তম মিনিটে চেলসি গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগাকে পরীক্ষায় ফেলেন লুকা মদ্রিচ। ৪২তম মিনিটে এই ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডারের ক্রসে ঠিকঠাক শট নিতে ব্যর্থ হন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
বিরতির পর ফের খেলা চালু হলে আবার দারুণ সুযোগ আসে চেলসির সামনে। ৫৩তম মিনিটে ছয় গজের বক্স থেকে কান্তে করেন ভলি। সেটা ব্লক করে জালে যাওয়া ঠেকান ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার এদার মিলিতাও।
পাঁচ মিনিট পর পাল্টা আক্রমণে এগিয়ে যায় রিয়াল। রদ্রিগোর কাটব্যাক ডি-বক্সে ফরাসি স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা ধরতে না পারলেও পেয়ে যান ভিনিসিয়ুস। তিনি ফের খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান সতীর্থ রদ্রিগোকে। বাকিটা অনায়াসে সারেন রদ্রিগো।
পিছিয়ে পড়ার পর মরিয়া হয়ে জোয়াও ফেলিক্স, মিখাইলো মুদ্রিক ও রহিম স্টার্লিংকে মাঠে নামান ল্যাম্পার্ড। তাতে সাফল্য মেলেনি। উল্টো ৮০তম মিনিটে আরেক গোল হজম করে চেলসি।
ভিনিসিয়ুসের পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেদেরিকো ভালভার্দে পায়ের কারিকুরিতে ঢুকে পড়েন ডি-বক্সে। এরপর আরিজাবালাগাকে একা পেলেও তিনি নিজে শট না নিয়ে স্বার্থহীনভাবে বল বাড়ান রদ্রিগোকে। ব্যবধান দ্বিগুণ করে রিয়ালের জয় নিশ্চিত করেন রদ্রিগো।
Comments