উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

মিলানকে হারিয়ে ফাইনালের পথে এগিয়ে গেল ইন্টার

ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসরে দুই ক্লাবের পাঁচবারের সাক্ষাতে এটাই ইন্টারের প্রথম জয়।
ছবি: টুইটার

ইন্টার মিলানের শুরুটা হলো চোখ ধাঁধানো। ম্যাচের ১১ মিনিটের মধ্যে দুবার জালে বল পাঠিয়ে চালকের আসনে বসে পড়ল তারা। এই ধাক্কা সামলে এসি মিলান ঘুরে দাঁড়ানোর জোর প্রচেষ্টা চালাল। তবে গোলের দেখা আর পাওয়া হলো না তাদের। শহর প্রতিদ্বন্দ্বীদের জমজমাট লড়াইয়ে জিতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের পথে এগিয়ে গেল সিমোনে ইনজাগির শিষ্যরা।

বুধবার রাতে সান সিরোয় আসরের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে মিলানকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ইন্টার। এদিন জেকো সফরকারীদের এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান বাড়ান হেনরিখ মিখিতারিয়ান। ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসরে দুই ক্লাবের পাঁচবারের সাক্ষাতে এটাই ইন্টারের প্রথম জয়। আগের চার ম্যাচের দুটিতে জিতেছিল মিলান, ড্র হয়েছিল বাকি দুটি।

ইতালিয়ান ফুটবলের দুই পরাশক্তির ঘরের মাঠ একটিই। সূচি অনুসারে, এটি ছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সাতবারের চ্যাম্পিয়ন মিলানের হোম ম্যাচ। তবে হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। কোচ স্তেফানো পিওলির দল পায়নি চোটে পড়া রাফায়েল লেয়াওকে। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের ঘাটতি মাঠে ভালোভাবে টের পেয়েছে তারা।

ম্যাচের অষ্টম মিনিটেই বসনিয়ান স্ট্রাইকার জেকোর গোলে লিড নেয় ইন্টার। হাকান চালহানোগলুর কর্নারে বাঁ পায়ের ভলিতে জাল খুঁজে নেন তিনি। পিছিয়ে পড়ার চাপ সামলে গুছিয়ে নেওয়ার আগেই ফের গোল হজম করে মিলান। ফেদেরিকো দিমার্কো ডি-বক্সের বাইরে পাস দেন আর্মেনিয়ান মিডফিল্ডার মিখিতারিয়ানকে। দুর্দান্ত প্রথম ছোঁয়ায় ভেতরে ঢুকে বিপজ্জনক অবস্থায় পৌঁছে যায় তিনি। এরপর জোরালো শটে ভেদ করেন নিশানা।

চার মিনিট পরই স্কোরলাইন হতে পারত ৩-০। চালহানোগলুর শট ডানদিকের পোস্ট কাঁপিয়ে ফিরে আসে। তবে বল আবার ইন্টারই নিয়ন্ত্রণে নেয়। মিখিতারিয়ানের শট মিলানের গোলরক্ষক মাইক মাইনিয়ান ফেরানোর পর নিকোলো বারেল্লার শট চলে যায় ক্রসবারের অনেক উপর দিয়ে।

৩১তম মিনিটে ইন্টারের পক্ষে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কারণ, লাউতারো মার্তিনেজ ডি-বক্সে পড়ে গিয়েছিলেন সিমোন কায়েরের চ্যালেঞ্জে। তবে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে স্পট-কিকের সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলা হয়। কিছু সময়ের ব্যবধানে আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার লাউতারোর দূরপাল্লার প্রচেষ্টা খুঁজে পায়নি লক্ষ্য।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মিলান নিজেদের সামর্থ্যের ছাপ দেখায়। ম্যাচের ৫০তম মিনিটে ব্রাহিম দিয়াজের শট গোলপোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায়। দুই মিনিট পর হতাশা বাড়ান জুনিয়র মেসিয়াস। ইন্টারের গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানাকে প্রায় একা পেয়েও বল লক্ষ্যেই রাখতে ব্যর্থ হন তিনি। তার শট দূরের পোস্ট ঘেঁষে চলে যায়।

৫৪তম মিনিটে জেকো হাতছাড়া করেন ব্যবধান বাড়ানোর বড় সুযোগ। আলেসান্দ্রো বাস্তোনির কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি। কেবল মাইনিয়ানকে ফাঁকি দিতে হতো তাকে। কিন্তু তা পারেননি জেকো। পা দিয়ে তার শট ঠেকিয়ে কর্নারের বিনিময়ে দলকে বাঁচান ফরাসি গোলরক্ষক।

দুর্ভাগ্য স্বাগতিকদের সঙ্গী হয় ১০ মিনিট পর। ফরাসি স্ট্রাইকার অলিভিয়ের জিরুর পাসে ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নেন সান্দ্রো তোনালি। বল বামদিকের পোস্টে লেগে চলে যাই বাইরে। যোগ করা চার মিনিট সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে আরেকটি সুযোগ হাতছাড়া করে মিলান। বদলি তোমাসো পবেগার শটটি ছিল ঠিক ক্যামেরুনিয়ান গোলরক্ষক ওনানা বরাবর।

আগামী ১৭ মে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে একই মাঠে মুখোমুখি হবে দুই দল। সেটি হবে ইন্টারের হোম ম্যাচ।

Comments