রেকর্ড গড়া অঙ্কনের প্রশংসায় কোচ ও প্রতিপক্ষ অধিনায়ক

মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন যখন মাঠে নামেন তখন খুলনা টাইগার্সের রান ১১৭। বল বাকি ৩৪টি। দুইশ রান খুব কঠিনই মনে হয়েছিল তখন। কিন্তু অঙ্কনের দানবীয় ব্যাটিংয়ে তা হয়ে যায় সহজেই। তাতে সহজ জয়ও মিলে দলটির। এমন ইনিংসের পর প্রধান কোচ তালহা জুবায়ের তো বটেই প্রতিপক্ষ অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনের প্রশংসাও কুঁড়িয়ে নিয়েছেন এই ব্যাটার।
শামীম হোসেন পাটোয়ারির অফ স্পিনে টানা দুই ছক্কা মেরে ধ্বংসযজ্ঞের শুরু করেন অঙ্কন। পরের ওভারে শরিফুল ইসলামকে মারেন তিনটি ছক্কা। তার পরের ওভারে দুটি চার ও একটি ছক্কা। সে ওভারেই ১৮ বলে ছুঁয়ে ফেলেন ফিফটি। তাতে দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম ফিফটির মালিক বনে যান এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
এর আগে ২০২৩ সালে রংপুর রাইডার্সের হয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ১৯ বলে ফিফটি করেছিলেন রনি তালুকদার। তবে সবমিলিয়ে রেকর্ডটা সুনিল নারিনের (১৩ বলে)। শেষ পর্যন্ত ২২ বলে ২৬৮.১৮ স্ট্রাইক রেটে ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন অঙ্কন। একটি চার ও ছয়টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস।
ম্যাচ শেষে অঙ্কনের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন চিটাগং কিংসের অধিনায়ক মিঠুন, 'যদি আপনি স্কোর দেখেন অবশ্যই আমরা ওই জায়গায় ২০/৩০ রান বেশি দিয়ে ফেলেছি। যেভাবে খেলা যাচ্ছিল তাতে ১৮০বা ১৭০ রানের মধ্যে থাকা উচিত ছিল। তবে অংকন খুবই দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলেছে। ওই সময়টা খুব ভালো ব্যবহার করেছে। স্লগটা। ওইসময়ই আমরা মোমেন্টাম হারিয়ে ফেলেছি।'
অঙ্কনের ইনিংসের কথা বলতে গিয়ে খুলনা কোচ তালহা বলেন, 'গত বছর যখন বিপিএলে খেলেছে লাস্টের দিকে নেমে কম বল খেলে বেশি রান করেছে। এটা খুব হেল্প করেছে। ১৮০ রানকে ২০০ তে নিয়ে গেছে কিংবা ২২০ য়ে নিয়ে গেছে। হ্যাঁ, অঙ্কন পাওয়ার হিটিং নিয়ে কাজ করছে এবং এখন ওর যে কনফিডেন্স লেভেলটা আছে- সেটা সবাই দেখলেন।'
তবে অঙ্কনকে মাঠে নামানোর সময় কিছুটা দ্বিধাতে ছিলেন তিনি, 'একটা সময় ছিল ওই সময় নাওয়াজকে সেন্ট করব নাকি অঙ্কনকে। পরে আমি ডিসাইড করছি যে অঙ্কনই যাবে। আমার একটা টার্গেট ছিল ১৫ ওভারের মধ্যে যদি উইকেট পড়ে তাহলে অঙ্কন যাবে। ১৫ ওভারের পরে হলে হয়তো ডিফারেন্ট সিনারিও হতে পারত।'
'যেহেতু ১৫ ওভারের মধ্যে উইকেট গেছে সো অঙ্কনই ছিল এবং এইটুকু বিশ্বাস ছিল ওর উপরে যে ধরনের মেন্টালিটি নিয়ে আছে এবং মাইন্ড সেটাপে আছে- আমার সঙ্গে যখন প্র্যাকটিসে বা আগে কথা হয়েছে আমি ওকে একটা কথাই বলেছি যে তোমার যে মাইন্ড সেটাপ আছে ওইটা থেকে বের হইয়ো না। টিম প্ল্যান তো থাকবেই, তোমারও একটা গেম প্ল্যান আছে- সো দুইটাকে কম্বাইন্ড করে বেস্ট পসিবল পারফরম্যান্সটা যাতে শো করে।'
একজন ভালো খেলোয়াড়ের পাশাপাশি অঙ্কন ভালো মানুষ বলেও জানান এই কোচ, 'আমরা যখন অঙ্কনকে নিয়েছি, তখন মাথায় ছিল অঙ্কন কম বলে বেশি রান করার অ্যাবিলিটি ওর আছে। ওর কিপিং নিয়েও কোনো সন্দেহ নেই। ও গুড কিপার। উইকেটের পেছনে দারুণ মানুষ। আপনি আমাদের টিমে দেখবেন যে, যাদেরকে পিক করেছি তারা ভালো প্লেয়ারের আগে ভালো মানুষ।'
Comments