এমবাপের হ্যাটট্রিকে সিটিকে বিদায় করে শেষ ষোলোয় রিয়াল

আর্লিং হালান্ড-কেভিন ডি ব্রুইনাদের বেঞ্চে রেখে মাঠে নামল ম্যানচেস্টার সিটি। কিন্তু মহাগুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারল না পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। কিলিয়ান এমবাপের অসাধারণ হ্যাটট্রিকে তাদেরকে স্রেফ উড়িয়ে দিল রিয়াল মাদ্রিদ। অনায়াসে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
বুধবার রাতে ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে প্লে-অফের দ্বিতীয় লেগে ৩-১ গোলে জিতেছে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। এতে দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৩ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে পরের পর্বে নাম লেখাল রিয়াল। গত সপ্তাহে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে প্রথম লেগে সিটির মাঠে ৩-২ গোলে জিতেছিল তারা।
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে জাল খুঁজে নেওয়া এমবাপে রিয়ালকে চালকের আসনে বসিয়ে ফেলেন ৩৩তম মিনিটে লক্ষ্যভেদ করে। প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা। ৬১তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি স্ট্রাইকার। রিয়ালের হয়ে এটি তার দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তৃতীয়। আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২১তম হ্যাটট্রিকের স্বাদ নিলেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে ম্যান সিটির হয়ে সান্ত্বনাসূচক গোল করেন নিকো গঞ্জালেজ।
বল দখলে কিছুটা এগিয়ে ছিল সিটিজেনরা। কিন্তু ম্যাচের প্রায় পুরো সময় তাদের খেলায় ছিল না কোনো ধার। স্কোরলাইন ৩-০ হওয়ার পরও দলটির কোচ গার্দিওলা মাঠে নামাননি হালান্ড-ডি ব্রুইনাদের। সফরকারীরা গোলমুখে ১২টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারে চারটি। অন্যদিকে, ৪৮ শতাংশ সময় বল পায়ে রাখা রিয়াল গোলপোস্টে ১৫টি শট নেয়। যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল আটটি।
প্রথম ভালো সুযোগেই এগিয়ে গিয়ে সমর্থকদের উল্লাসে মাতায় রিয়াল। নিজেদের অর্ধ থেকে দুর্দান্ত থ্রু পাস বাড়ান রাউল আসেনসিও। তা বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হওয়া রুবেন দিয়াস ডি-বক্সের বাইরে হেড করার চেষ্টায় পড়ে যান মাটিতে। এরপর এমবাপে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসা গোলরক্ষক এদারসনের মাথার ওপর দিয়ে গোল করেন।
চার মিনিট পর আরেক ধাক্কা খায় সিটি। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ডিফেন্ডার জন স্টোনস। বদলি হিসেবে নামেন নাথান আকে। তবে তাদের ওপর জেঁকে বসা চাপ কেবলই বাড়তে থাকে। ৩৩তম মিনিটে পায়ের চোখ জুড়ানো কারুকাজ দেখান এমবাপে। রদ্রিগোর কাছ থেকে ডি-বক্সে বল পেয়ে ইয়োসকো ভারদিওলের স্লাইড এড়িয়ে ডান পায়ের জোরাল শটে জাল কাঁপান তিনি। রিয়ালের শেষ ষোলোতে জায়গা করে নেওয়া তখনই একরকম নিশ্চিত হয়ে যায়।
বিরতির আগে ম্যান সিটি একটি মাত্র শট নিতে পারে। সেটাও ছিল না লক্ষ্যে। দ্বিতীয়ার্ধে অবিশ্বাস্য কিছু করে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষীণ সম্ভাবনাও শেষ করে দেন এমবাপে। ৬১তম মিনিটে ফেদে ভালভার্দের কাছ থেকে বল পেয়ে ডান দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি। এরপর বাম পায়ের কোণাকুণি শটে নিশানা ভেদ করেন। ঝাঁপ দিলেও বলের ধারেকাছে যেতে পারেননি গোলরক্ষক।
৭৭তম মিনিটে ইল্কাই গুন্দোয়ান ও ফিল ফোডেনকে উঠিয়ে গার্দিওলা মাঠে নামান মাতেও কোভাচিচ ও জেমস ম্যাকাটিকে। অন্যদিকে, আনচেলত্তি একে একে পাঁচটি বদলি খেলোয়াড় নামানোর সবগুলো সুযোগ ব্যবহার করেন। ৭৮তম মিনিটে এমবাপের পরিবর্তে মাঠে ঢোকেন ব্রাহিম দিয়াজ।
অন্তিম সময়ে ব্যবধান কমান নিকো। ওমর মারমুশের ফ্রি-কিক ক্রসবার কাঁপিয়ে ফিরলে ফাঁকায় বল পেয়ে যান তিনি। ডাইভ দেওয়া গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া গোলপোস্ট সামলানোর অবস্থানে ফিরতে পারেননি। এরপর ফাঁকা জালে বল পাঠিয়ে দেন নিকো। গত মাসে শীতকালীন দলবদলে সিটিতে নাম লেখানোর পর নতুন ঠিকানায় এটি তার প্রথম গোল।
Comments