‘আমি রোমাঞ্চিত, খুশি, আনন্দে আত্মহারা’

আগে অনেকবার ফ্রি-কিক মারলেও তা থেকে কখনো সরাসরি গোল করতে পারেননি ডেকলান রাইস। এই ইংলিশ মিডফিল্ডার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট মঞ্চে রিয়াল মাদ্রিদের মতন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এই ঝলক দেখালেন দুবার। গড়লেন ইতিহাস, পরে জানালেন এমন সামর্থ্য তার ভেতরেই ছিলো।
এমিরেটস স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে রাইস যা করেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট মঞ্চে তা কখনো দেখা যায়নি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বের কোনো ম্যাচে ফ্রি-কিক থেকে সরাসরি দুটি গোল করা প্রথম খেলোয়াড়ই যে তিনি।
রাইসের দুর্দান্ত নৈপুণ্যের রাতে ৩-০ গোলে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগ জিতে সেমির পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে আর্সেনাল।
৫৮ মিনিটে ডেড লক ভেঙে ফ্রি-কিক থেকে প্রথম গোল করেন তিনি। জানালেন এই শটের আগে তার চিন্তা ছিলো সাধারণ একটা ক্রস ফেলবেন বক্সে, যা থেকে সতীর্থরা কেউ মারবেন হেড। পরে রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়ার অবস্থান দেখে সরাসরি শটের চিন্তায় যান, আর তাতেই বাজিমাত, 'প্রথমে ক্রস করতে যাচ্ছিলাম এবং তারপর আমি দেওয়াল এবং গোলকিপারের অবস্থান দেখতে পেলাম। তাই আমি ভাবলাম, সরাসরি মারি।'
প্রথমটা গোল হয়ে যাওয়ার পর ৭০ মিনিটে যখন দ্বিতীয় শট মারতে যান তখন তার ভেতর ভরপুর আত্মবিশ্বাস। সেই জোরেই আরও একবার রিয়ালকে স্তব্ধ করে দেন তিনি, যাতে নিজেও হয়ে যান আত্মহারা, 'দ্বিতীয় গোলের সময় আমার আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি মেরেছি, আমি রোমাঞ্চিত, খুশি, আনন্দে আত্মহারা। কয়েক বছর পর এটা সত্যিই আমাকে নাড়া নিবে যে আজ রাতে আমি যা করেছি তা সত্যিই বিশেষ ছিল।'
আগে ওয়েস্ট হ্যাম এবং এখন আর্সেনালের হয়ে তার ক্যারিয়ার জুড়ে, রাইসকে একজন সৃজনশীল শক্তির চেয়ে একজন রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার হিসাবেই বেশি ভাবা হতো। তবে নিজের ভেতর যে গোল করার সামর্থ্য আছে সেই বিশ্বাস এখন টের পাচ্ছেন রাইস, 'এটা (ফ্রিক কিক থেকে গোলের সামর্থ্য) আমার ভেতরেই ছিল, কিন্তু অনেকবার আমার শট প্রাচীরে (মানবপ্রাচীর) ধাক্কা খেয়েছে অথবা বারের উপর দিয়ে চলে গেছে।'
দলের সতীর্থ এবং গানার্স বস মিকেল আর্তেতার কাছ থেকে উৎসাহ পেয়ে তিনি আরও বেশি আগ্রাসী হওয়ার চিন্তায় ছুটেন, 'এমনকি ওয়েস্ট হ্যামে এবং এখানে আসার পর থেকে সবাই আমাকে আরও বেশি শট মারতে বলছে।'
'এগুলো ছোট ছোট জিনিস। গোল করার মানসিকতায় থাকতে হবে। আমার এটা করার ক্ষমতা আছে, এটা আত্মবিশ্বাসের ব্যাপার।'
রাইসের মতে তার সামর্থ্য নিয়ে সংশয় থাকতে পারে অনেকের। সেই সংশয় দূর করে পারফর্ম করাই তার কাজ, 'সবসময় সমালোচক থাকবে, আমার সবসময় সন্দেহকারী থাকবে - এটাই ফুটবল। কিন্তু যতক্ষণ আমি মাঠে ভালো খেলতে এবং ভালো পারফর্ম করতে পারব, সেটাই মূল বিষয়।'
Comments