ইউনাইটেডকে হারিয়ে ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন টটেনহ্যাম

ছবি: এএফপি

গোটা ম্যাচে কেবল একটি প্রচেষ্টা লক্ষ্যে রাখতে পারল রক্ষণাত্মক কৌশল বেছে নেওয়া টটেনহ্যাম হটস্পার। সেটা থেকেই গোল আদায় করে ব্যবধান গড়ে দিলেন ওয়েলশ মিডফিল্ডার ব্রেনান জনসন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আক্রমণের ঝাপটা সামলে উয়েফা ইউরোপা লিগের শিরোপা জিতল স্পার্সরা।

বুধবার রাতে স্পেনের বিলবাওয়ে দুই ইংলিশ ক্লাবের মধ্যকার ২০২৪-২৫ মৌসুমের ফাইনালে ১-০ গোলে জিতেছে টটেনহ্যাম। ফাইনালের আগে পর্যন্ত গোটা আসরে অপরাজিত ছিল ইউনাইটেড। বিরতির কিছুক্ষণ আগে জয়সূচক গোলটি আসে ২৩ বছর বয়সী জনসনের পা থেকে।

ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা ক্লাব প্রতিযোগিতায় টটেনহ্যামের এটি তৃতীয় শিরোপা। দীর্ঘ ৪১ বছর পর কোনো মহাদেশীয় ট্রফি জয়ের স্বাদ পেল তারা। এর আগে ১৯৭১-৭২ ও ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে তারা ইউরোপা লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তখন অবশ্য টুর্নামেন্টটি উয়েফা কাপ নামে পরিচিত ছিল।

এই জয়ে ১৭ বছরের শিরোপাখরা দূর করল লন্ডনের দলটি। সবশেষ তারা ২০০৭-০৮ মৌসুমে এফএ কাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিল। পাশাপাশি ইউরোপা লিগের শিরোপাধারী হিসেবে আগামী মৌসুমের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলাও নিশ্চিত করল অ্যাঞ্জ পোস্তেকোগলুর শিষ্যরা।

এবারের মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগে ভীষণ করুণ দশা ইউনাইটেড ও টটেনহ্যামের, পয়েন্ট তালিকায় যথাক্রমে ১৬ ও ১৭ নম্বরে রয়েছে তারা। তবে ইউরোপা লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে হতাশা কাটিয়ে বড় অর্জনের হাতছানি ছিল তাদের সামনে। সেই লক্ষ্যে টটেনহ্যাম সফল হলেও ইউনাইটেডের দুর্দশা আরও বাড়ল।

প্রথমার্ধে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমজমাট লড়াই হলেও পরিষ্কার সুযোগ মিলছিল না। ১৬তম মিনিটে ইউনাইটেডের উইঙ্গার আমাদ দিয়ালোর শট দূরের পোস্ট ঘেঁষে যায়। পাঁচ মিনিট পর ব্রুনো ফার্নান্দেসের ক্রস পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি টটেনহ্যামের ইতালিয়ান গোলরক্ষক গুলিয়েলমো ভিকারিওকে।

৪২তম মিনিটে এগিয়ে যায় স্পার্সরা। সেখানে ছিল সৌভাগ্যের ছোঁয়া। সেনেগালিজ মিডফিল্ডার পাপে সারের বিপজ্জনক ক্রসে জনসন শুরুতে ঠিকঠাক পা লাগাতে পারেননি। তবে বল রেড ডেভিলদের ইংলিশ ডিফেন্ডার লুক শয়ের গায়ে লেগে জালের দিকেই যাচ্ছিল। শেষ মুহূর্তে আবার আলতো টোকায় তা জালে ঠেলে দেন জনসন। গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা ঝাঁপিয়ে পড়লেও গোল আটকাতে পারেননি।

বিরতির পর টটেনহ্যাম রক্ষণ জমাট রাখায় পুরোপুরি মনোযোগী থাকলেও গোলের জন্য মরিয়া হয়ে একের পর এক চেষ্টা চালাতে থাকে ইউনাইটেড। ৪৮তম মিনিটে ডেনিশ স্ট্রাইকার রাসমুস হয়লুন্ডের হেড চলে যায় গোলপোস্টের বেশ বাইরে দিয়ে। ১০ মিনিট পর জাল অক্ষত রাখেন ভিকারিও। ফার্নান্দেসের ফ্রি-কিকে লেনি ইয়োরো আলতো করে পা ছোঁয়ালেও দারুণভাবে বল রুখে দেন তিনি।

৬৮তম মিনিটে অল্পের জন্য সমতা ফেরেনি ম্যাচে। পর্তুগিজ মিডফিল্ডার ফার্নান্দেসের ফ্রি-কিক ভিকারিও লুফে নিতে ব্যর্থ হলে পেয়ে যান হয়লুন্ড। তার হেড ফাঁকা জালের দিকেই যাচ্ছিল। শেষ মুহূর্তে লাফিয়ে উঠে অবিশ্বাস্যভাবে গোললাইন থেকে বল ক্লিয়ার করেন ডাচ ডিফেন্ডার মিকি ফন ডি ফেন।

৭২তম মিনিটে ফার্নান্দেসের হেড লক্ষ্যে থাকেনি। দুই মিনিট পর বদলি আর্জেন্টাইন উইঙ্গার আলেহান্দ্রো গার্নাচোর নিচু কোণাকুণি শট ঠেকিয়ে দেন ছন্দে থাকা ভিকারিও। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সাত মিনিটের সপ্তম মিনিটে ফের জ্বলে ওঠেন তিনি। বদলি ডিফেন্ডার দিয়োগো দালোতের ক্রসে ডি-বক্সে জটলার ভেতর থেকে শয়ের জোরাল হেড দারুণভাবে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন।

শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার কাসেমিরোর ওভারহেড কিক বাইরের দিকের জালে লাগলে সব আশা শেষ হয়ে যায় ইউনাইটেডের। কোনো শিরোপা ছাড়াই এবারের মৌসুম শেষ করতে হলো রুবেন আমোরির শিষ্যদের। আগামী মৌসুমে কোনো মহাদেশীয় টুর্নামেন্টেও থাকবে না তারা।

Comments

The Daily Star  | English
G7 statement on Israel Iran war

Sirens sounded after missiles launched from Iran, says Israeli army

Trump to decide within two weeks on possible military involvement

13h ago