ঘুরে দাঁড়িয়ে জিতে বার্সেলোনাকে বিদায় করল ইউনাইটেড
লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করল বার্সেলোনা। তবে বিরতির পর আর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারল না তারা। ম্যাচের চালকের আসনে বসে পড়ল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল তারা। বার্সাকে বিদায় করে পা রাখল ইউরোপা লিগের শেষ ষোলোতে।
বৃহস্পতিবার রাতে ঘরের মাঠ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ২-১ গোলে জিতেছে এরিক টেন হাগের শিষ্যরা। দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের শুরুর দিকে রবার্ত লেভানদভস্কির লক্ষ্যভেদে এগিয়ে যায় বার্সা। দ্বিতীয়ার্ধে ফ্রেদ স্বাগতিকদের সমতায় ফেরানোর পর ব্যবধান গড়ে দেন আন্তোনি।
কাতালানদের ঘরের মাঠ ক্যাম্প ন্যুতে আগের দেখায় ২-২ গোলে ড্র করেছিল দুই পরাশক্তি। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ অগ্রগামিতায় পরের পর্বের টিকিট পেল ইউনাইটেড।
প্রথমার্ধে বিবর্ণ থাকা রেড ডেভিলরা পরবর্তীতে খুঁজে পায় ছন্দ। সেসময় তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পেরে ওঠেনি স্প্যানিশ ক্লাব বার্সা। চোট ও নিষেধাজ্ঞায় বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতির কারণে ভুগতে হয় তাদের। গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে খেলতে পারেনি ওসমান দেম্বেলে, পেদ্রি ও গাভি।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়ায় ইউনাইটেড। ডি-বক্সে ব্রুনো ফার্নান্দেসের কোণাকুণি শট পা দিয়ে আটকে দেন বার্সার গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন। দুই মিনিট পর মাঠের বিপরীত দিকে তৈরি হয় সুযোগ। রাফিনহার বাঁকানো শট চলে যায় গোলপোস্টের ওপর দিয়ে।
১৮তম মিনিটে পেনাল্টি পায় কোচ জাভি হার্নান্দেজের দল। আলেক্স বালদেকে ডি-বক্সে ফার্নান্দেস টেনে ফেলে দেওয়ায় বাজে স্পট-কিকের বাঁশি। এরপর ১২ গজ দূর থেকে পোলিশ স্ট্রাইকার লেভানদভস্কির শট জড়ায় জালে। ইউনাইটেডের গোলরক্ষক দাভিদ দে হেয়া বলে হাত ছোঁয়ালেও রুখতে পারেননি।
পাঁচ মিনিট পর পর্তুগিজ মিডফিল্ডার ফার্নান্দেসের ভলি সহজেই লুফে নেন টের স্টেগেন। বেশ কিছু মাঝারি মানের সুযোগ তৈরি করা বার্সাকে প্রথমার্ধের শেষদিকে ব্যবধান বাড়াতে দেননি কাসেমিরো। ক্লিয়ার করতে গিয়ে ডি-বক্সে সার্জি রবার্তোকে বল দিয়ে বসেন দে হেয়া। স্লাইড করে তাকে শট নিতে দেননি কাসেমিরো। এরপর মাটিতে শোয়া অবস্থাতেই ফ্রাঙ্ক কেসিয়ের শট প্রতিহত করেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর পরপরই সমতায় ইংলিশ ক্লাবটি। মাঝমাঠের দিকে বল কেড়ে জ্যাডন সাঞ্চো খুঁজে নেন ফার্নান্দেসকে। ডি-বক্সের প্রান্তে তার পাস পেয়ে নিশানা ভেদ করেন ফ্রেদ।
উজ্জীবিত ইউনাইটেড টানা আক্রমণ শানিয়ে কোণঠাসা করে ফেলে বার্সাকে। তবে ধারার বিপরীতে ৬৪তম মিনিটে সুযোগ পায় তারা। বালদের ক্রসে জুলস কুন্দের হেড কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান দে হেয়া। পরের মিনিটে কেসিয়ের শটও আটকান তিনি।
৭৩তম মিনিটে এগিয়ে যায় টেন হাগের শিষ্যরা। বদলি আলেহান্দ্রো গার্নাচো ও ফ্রেদের শট ব্লকড হওয়ার পর ডানপ্রান্তে বল পান আন্তোনি। অরক্ষিত ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড বাঁকানো শটে দূরের পোস্টে পরাস্ত করেন টের স্টেগেনকে।
ছয় মিনিট পর ফের গোলের সুযোগ আসে ইউনাইটেডের। ডি-বক্সের বাইরে বল পেয়ে মার্কাস র্যাশফোর্ড কাছের পোস্টে নেন শট। তবে রোনালদ আরাউহোর শরীর সামান্য ছুঁয়ে তা বাইরের দিকের জালে লাগে। চেষ্টা চালালেও বাকি সময়ে বার্সেলোনা পারেনি ভালো কোনো সুযোগ তৈরি করতে।
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বায়ার্ন মিউনিখ ও ইন্টার মিলানের গ্রুপে ছিল বার্সা। তাদেরকে টপকে ওই দুই দল পৌঁছায় নকআউটে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার পর ইউরোপা লিগেও তাদের অভিযান লম্বা হলো না। নকআউট রাউন্ডের প্লে অফেই থামল এবারের মৌসুমে তাদের ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় পথচলা।
Comments