রিয়ালে আনচেলত্তির স্থলাভিষিক্ত হলেন আলোনসো

অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে জাবি আলোনসোকে সিনিয়র দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ক্লাবটির সাবেক এই মিডফিল্ডার তিন বছরের চুক্তিতে ডাগআউটে ফিরলেন, যেখানে খেলোয়াড় হিসেবে ক্যারিয়ারের উজ্জ্বল সময় কাটিয়েছেন।
কার্লো আনচেলত্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে মাসের পর মাস ধরে চলা আলোচনার পর এবার এক নতুন প্রকল্পের দিকে এগিয়ে গেলো রিয়াল। আর এই প্রকল্পের কাণ্ডারি হতে যাচ্ছেন মন একজন যিনি কৌশলগত জ্ঞান, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার পাশাপাশি ক্লাবটির সঙ্গে রয়েছে তার গভীর আত্মিক সম্পর্ক।
এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে রিয়াল। বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, 'রিয়াল মাদ্রিদ ঘোষণা করছে যে, জাবি আলোনসো আগামী তিন মৌসুম, ১ জুন ২০২৫ থেকে ৩০ জুন ২০২৮ পর্যন্ত, প্রথম দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।'
বিবৃতিতে আরও জানায়, 'আগামীকাল, সোমবার ২৬ মে দুপুর সাড়ে ১২টায় (স্থানীয় সময়) রিয়াল মাদ্রিদে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাবি আলোনসোকে রিয়ালের নতুন কোচ হিসেবে উপস্থাপন করা হবে। এর আগে ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ তার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর করবেন। এরপর প্রেস কনফারেন্সে মিডিয়ার মুখোমুখি হবেন আলোনসো।'
জার্মানিতে বায়ার লেভারকুসেনকে আধুনিক, বহুমাত্রিক ও প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলের এক নতুন রূপে ঢেলে সাজিয়েছিলেন আলোনসো। তার কোচিংয়ে লেভারকুসেন অপরাজিত থেকে জিতেছে বুন্ডেসলিগা শিরোপা এবং ঘরোয়া কাপ। তবে গোটা ইউরোপজুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে দলের খেলার ধরন ও কৌশলগত দৃঢ়তার জন্য।
আলোনসো তিন সেন্টার-ব্যাক নির্ভর এক সিস্টেমে বিশ্বাস করেন, যা রক্ষণভাগ থেকেই খেলার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সহায়তা করে এবং বল রিলিজের সময় সংখ্যাগত আধিপত্য তৈরি করে। তার এই কৌশলে থাকে পজিশনাল ডিসিপ্লিন, হাই প্রেসিং, দ্রুত ট্রানজিশন—সবকিছুই বলের দখল ধরে রেখে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা। জার্মানিতে এই পদ্ধতিই তার খেলোয়াড়দের দক্ষতা সর্বোচ্চ মাত্রায় কাজে লাগিয়েছে।
খেলোয়াড়ি জীবনে আলোনসো পাঁচ মৌসুম রিয়াল মাদ্রিদের মিডফিল্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে ২৩৬টি অফিসিয়াল ম্যাচ খেলেছেন। এই সময়ে তিনি জিতেছেন ছয়টি ট্রফি—লিসবনে দশম ইউরোপিয়ান কাপ, একটি ইউরোপিয়ান সুপার কাপ, একটি লা লিগা শিরোপা, দুটি কোপা দেল রে এবং একটি স্প্যানিশ সুপার কাপ।
স্পেন জাতীয় দলের হয়েও তিনি ২০১০ সালে জিতেছেন বিশ্বকাপ এবং ২০০৮ ও ২০১২ সালে দুটি ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ১১৩টি ম্যাচ। তার খেলার সৌন্দর্য, স্থিরতা এবং দূরদৃষ্টি আজও মাদ্রিদ সমর্থকদের মনে গেঁথে আছে। এবার তিনি সেই ক্লাবেই ফিরছেন, তবে এবার মাঠ নয়, ডাগআউট থেকে নেতৃত্ব দিতে।
Comments