চার ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় শিরোপা জিতে চেলসির ইতিহাস

কনফারেন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল বেতিসকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে শিরোপা জিতে নিয়েছে চেলসি। ভ্রৎসলাভে অনুষ্ঠিত এই ফাইনাল জিতে নতুন ইতিহাস গড়েছে দলটি। ফুটবল ইতিহাসের প্রথম দল দল হিসেবে ইউরোপের চারটি প্রতিযোগিতা জয়ী ক্লাবে পরিণত হলো তারা।

এর আগে ছিল দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা তারা জিতেছিল ২০১২ ও ২০২১ সালে। এছাড়া দুটি করে ইউরোপা লিগ শিরোপা (২০১৩, ২০১৯) এবং কাপ উইনার্স কাপও (১৯৭১, ১৯৯৮) জিতেছিল তারা। এবার তারা নিজেদের নামের পাশে যোগ করলো কনফারেন্স লিগের প্রথম শিরোপাটিও।

বেতিসের বিপক্ষে এবার চেলসি তাদের অষ্টম ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলল। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচগুলোতে চেলসি বরাবরই বিধ্বংসী, কারণ ইউরোপীয় ফাইনালে তারা কেবল একবারই হেরেছে। সাতবারই শিরোপা স্বাদ পেয়েছে দলটি।

দুই 'রেকোপা' দিয়ে যাত্রা শুরু

চেলসির প্রথম দুটি ইউরোপীয় সাফল্য এসেছিল 'কাপ উইনার্স কাপ' নামে পরিচিত এক প্রতিযোগিতায়, যা এখন বিলুপ্ত। এতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের কাপজয়ীরা অংশ নিতো। ১৯৭১ সালে তারা গ্রিসের পিরেয়াসে অনুষ্ঠিত ফাইনালের প্লে-অফ ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদকে ২-১ গোলে হারায়। প্রথম ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল।

১৯৯৮ সালে চেলসি সুইডেনের স্টকহোমে স্টুটগার্টকে ১-০ গোলে হারায়, যেখানে একমাত্র গোলটি করেন জিয়ানফ্রাংকো জোলা।

একমাত্র হার, টেরির সেই পা পিছলে যাওয়া

ইউরোপীয় আসরের ফাইনালে চেলসির একমাত্র পরাজয় আসে ২০০৮ সালে। যা ছিল তাদের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপার লড়াই, যেখানে তারা মস্কোতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে টাইব্রেকারে ৫-৬ গোলে হেরে যায়। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচটি ১-১ গোলে শেষ হয়েছিল। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর গোলে ইউনাইটেড গেলেও ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড গোল করে সমতা আনেন। তবে টাইব্রেকারে জন টেরি পা পিছলে পড়ে মিস করেন, এরপর নিকোলাস আনেলকাও বল জালে পাঠাতে না পারলে হারতে হয় তাদের।

মিউনিখে দ্রগবার অলৌকিকতা

চেলসির ইতিহাসের অন্যতম সেরা রাত আসে ২০১২ সালের ১৯ মে। বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতে নেয় দলটি। ম্যাচটি ছিল আবার বায়ার্নের ঘরের মাঠ অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায়। শেষদিকে, জার্মান সমর্থকরা যখন শিরোপা উদযাপন শুরু করে দিয়েছিলেন, তখন ৮৮তম মিনিটে দিদিয়ের দ্রগবা গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান। এরপর টাইব্রেকারে তিনিই শেষ ও নির্ধারক শটটি নিয়ে চেলসিকে ৪-৩ ব্যবধানে শিরোপা এনে দেন।

দুটি ইউরোপা লিগ এবং পেপের বিরুদ্ধে জয়

২০১৩ সালে অ্যামস্টারডামে বেনফিকাকে ২-১ গোলে হারিয়ে প্রথম ইউরোপা লিগ শিরোপা জেতে চেলসি। গোল করেন ফার্নান্দো তোরেস এবং ব্রানিস্লাভ ইভানোভিচ। আর ২০১৯ সালে তারা দ্বিতীয় ইউরোপা লিগ জয় করে লন্ডন ডার্বিতে আর্সেনালের বিপক্ষে। আজারবাইজানের বাকু শহরে অনুষ্ঠিত ফাইনালে এদেন হ্যাজার্ডের জোড়া গোলের সঙ্গে অলিভিয়ের জিরু ও পেদ্রোর গোলে ৪-১ ব্যবধানে জয় পায় তারা।

এরপর ২০২১ সালে আবারও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিতে নেয় চেলসি। পোর্তোয় ফাইনালে এবার পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে জয় পায় তারা। একমাত্র গোলটি করেছিলেন কাই হাভার্টজ, যা দলকে দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা এনে দেয়।

এরপর গতকাল রাতে ২০২৫ সালের এই ঐতিহাসিক দিনে, কনফারেন্স লিগ শিরোপা জিতে চেলসি ইউরোপীয় ফুটবলের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচনা করে — চারটি ইউরোপীয় ট্রফিই এখন তাদের শোকেসে।

Comments

The Daily Star  | English
rising misogyny in Bangladesh

The interim government’s silence over misogyny is tragic

There is chaos and dissent in every corner and no one seems to have a grip on anything.

8h ago