মিউনিখের ইতিহাস বলছে— পিএসজিই চ্যাম্পিয়ন

ছবি: এএফপি

ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতা উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল আবারও বসছে জার্মানির মিউনিখে। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, এই শহরে আয়োজিত প্রতিটি ফাইনালেই নতুন চ্যাম্পিয়নের দেখা মিলেছে। অর্থাৎ শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে বিজয়ী হয়েছে এমন কোনো দল, যারা আগে কখনও ইউরোপের সেরার মুকুট জিততে পারেনি।

এমন পরিসংখ্যান এবার উৎসাহ যোগাতে পারে ফ্রান্সের পিএসজিকে। তারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম ট্রফির জন্য অপেক্ষায় রয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে। বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত একটায় অনুষ্ঠেয় ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ইন্টার মিলান। ইতালির দলটি এখন পর্যন্ত তিনবার উঁচিয়ে ধরেছে এই আসরের শিরোপা।

অতীতে মিউনিখে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চারটি ফাইনাল হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ছিল অলিম্পিয়া স্টেডিয়ামে, বাকিটি আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায়। প্রতিবারই শহরটি দুহাত ভরে দিয়েছে নতুনদের।

১৯৭৯ সালে ইংলিশ ক্লাব নটিংহ্যাম ফরেস্ট সুইডিশ ক্লাব মালমোকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল (তখন প্রতিযোগিতার নাম ছিল ইউরোপিয়ান কাপ) অলিম্পিয়া স্টেডিয়ামে। এরপর ১৯৯৩ সালে ফরাসি ক্লাব মার্সেই একই স্টেডিয়ামে একই ব্যবধানে ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখন পর্যন্ত এটি ফ্রান্সের কোনো ক্লাবের একমাত্র শিরোপা।

ছবি: এএফপি

চার বছর পর অলিম্পিয়া স্টেডিয়ামে জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ড প্রথমবার ফাইনালে উঠে মুখোমুখি হয় আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন জুভেন্তাসের। সবাইকে চমকে দিয়ে ইতালিয়ান ক্লাবটির বিপক্ষে ৩-১ গোলে জিতে ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিল তারা। সবশেষ ২০১২ সালে ঘরের মাঠ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ ফাইনালে টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে হেরে যায় চেলসির কাছে। দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ইংলিশ ক্লাবটি সেবারই প্রথম শিরোপা জিতেছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে।

ওই ম্যাচগুলোর ফল থেকে অনুপ্রেরণা খুঁজে নিতে পারে পিএসজি। তাছাড়া, প্রায় দেড় দশক ধরে এই একটি স্বপ্নের পেছনেই ছুটছে তারা— চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ট্রফি। ২০১১ সালে কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্টস কিনে নেয় দলটিকে। তখন থেকেই কাড়ি কাড়ি অর্থ খরচ করে নামীদামি ফুটবলারদের দলে ভিড়িয়ে আসছে প্যারিসিয়ানরা। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত ফল আসেনি।

২০২০ সালে যদিও খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল পিএসজি। তবে লিসবনে অনুষ্ঠিত ফাইনাল শেষে একরাশ হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। কারণ বায়ার্নের কাছে ১-০ গোলে হেরে যায় দলটি।

চাইলে আরও একটি দিক হতে পারে পিএসজির অনুপ্রেরণা। তাদের স্বদেশি ক্লাব মার্সেইও প্রথমবারের চেষ্টায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে পারেনি। ১৯৯১ সালের ফাইনালে সার্বিয়ার রেড স্টার বেলগ্রেডের কাছে হারের পর দুই বছর পর আরেকটি ফাইনালে গিয়ে শিরোপা জেতে তারা। প্রতিপক্ষ ছিল মিলান শহরের ক্লাব। একইরকম পর্যায়ে দাঁড়িয়ে পিএসজি। এটি তাদের দ্বিতীয় ফাইনাল, সামনে বাধা মিলানেরই আরেকটি দল।

সব মিলিয়ে, ইতিহাস জোরালভাবে বলছে— মিউনিখে নতুনদেরই বিজয়কেতন ওড়ে। তাহলে কি এবার কোচ লুইস এনরিকের অধীনে থাকা পিএসজির পালা? ইন্টারকে হারিয়ে উল্লাসে মাতবেন উসমান দেম্বেলে-খাভিচা কাভারাতস্খেলিয়া-ব্র্যাডলি বারকোলারা? উত্তরটা সময়ই বলবে।

Comments