শান্তির ‘অলিম্পিক গোল’— এই গোলের নামকরণের পেছনের গল্প কী?

ঘড়ির কাঁটায় ম্যাচের বয়স তখন ৩৩ মিনিট। বামদিক থেকে বাম পায়ে কর্নার নিলেন শান্তি মার্ডি। সরাসরি বাঁক খেয়ে বল দূরের পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে জড়াল জালে। বাংলাদেশের মিডফিল্ডার পেলেন বিরল অলিম্পিক গোলের স্বাদ।
শুক্রবার অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের 'এইচ' গ্রুপের ম্যাচে ৮-০ গোলে তিমুর লেস্তেকে বিধ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ। ভিয়েনতিয়েনের নিউ লাওস ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে বিরতির আগে ও পরে চারবার করে লক্ষ্যভেদ করে মেয়েরা।
গোলমুখে জ্বলে উঠে হ্যাটট্রিক করেন ফরোয়ার্ড তৃষ্ণা রানী সরকার। শান্তির পাশাপাশি একবার করে জাল খুঁজে নেন সিনহা জাহান শিখা, নবীরন খাতুন, মোসাম্মৎ সাগরিকা ও মুনকি আক্তার। তবে বাংলাদেশের দাপুটে জয়ের মাঝে আলাদাভাবে আলোচনায় শান্তির অলিম্পিক গোল।
গত বুধবার স্বাগতিক লাওসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে বাছাইয়ে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। টানা দুই জয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে পিটার বাটলারের শিষ্যরা। আগামী রোববার শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ এই গ্রুপের ফেভারিট দল দক্ষিণ কোরিয়া।
প্রথম অলিম্পিক গোল ও নামকরণ
ফুটবলে অন্যতম দুর্লভ, কঠিন ও চমক জাগানিয়া গোল হলো অলিম্পিক গোল। কর্নার কিক থেকে বল কারও স্পর্শ ছাড়াই সরাসরি যখন জালে প্রবেশ করে, তখন তাকে বলা হয় অলিম্পিক গোল।
১৯২৪ সালে অনুষ্ঠিত প্যারিস অলিম্পিকে ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল উরুগুয়ে। এর মাসখানেক পর দুটি প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হয়েছিল তারা। অক্টোবর মাসে দ্বিতীয় ম্যাচটি গড়িয়েছিল বুয়েন্স এইরেসের স্পোর্তিভো বারাকাস স্টেডিয়ামে।
ওই ম্যাচের প্রথমার্ধের ১৫তম মিনিটে আর্জেন্টিনার সেজারিও অনজারি কর্নার কিক থেকে সরাসরি গোল করেন। দুই দলের ফুটবলাররা থেকে শুরু করে গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকরা পর্যন্ত— পুরো স্টেডিয়ামই তখন বিস্মিত হয়ে পড়েছিল। সেটি ছিল ইতিহাসের প্রথম অলিম্পিক গোল।
তখনকার অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ের বিপক্ষে হওয়ায় সাংবাদিকরা স্প্যানিশ ভাষায় গোলটির নাম দেন গোল অলিম্পিকো। ইংরেজিতে যা দাঁড়ায় অলিম্পিক গোল। ম্যাচটিতে আর্জেন্টিনা জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে।
গোলটি নিয়ে অনজারি পরবর্তীতে বলেছিলেন, 'ওরকম আরেকটা গোল আমি আর কখনও করতে পারিনি। মানুষের বিস্ময় আর যে আলোড়ন উঠেছিল, সেটার জন্যই এটা ছিল আমার করা সেরা গোল।'
Comments