ঘুরে দাঁড়ানোর স্মরণীয় গল্প লিখে সুপার কাপ পিএসজির

ছবি: এএফপি

নির্ধারিত সময়ের ৮৪ মিনিট পর্যন্ত দুই গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে রইল পিএসজি। বিবর্ণতা কাটিয়ে শেষদিকে গা ঝাড়া দিয়ে সমতায় ফেরার পর টাইব্রেকারের শুরুতেও একই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল তারা। সেটায় উতরে গিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্মরণীয় গল্প লিখল লুইস এনরিকের শিষ্যরা। রোমাঞ্চকর দ্বৈরথে টটেনহ্যাম হটস্পারের হৃদয় ভেঙে উয়েফা সুপার কাপ জিতল দলটি।

বুধবার রাতে ইতালির উদিনেতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে পেনাল্টি শুটআউটে ৪-৩ গোলে জিতেছে প্যরিসিয়ানরা। ফলে শিরোপা দিয়েই নতুন মৌসুম (২০২৫-২৬) শুরু করল গত মৌসুমের ট্রেবলজয়ীরা। এর আগে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হয় ২-২ সমতায়।

সুপার কাপে মুখোমুখি হয় আগের মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ইউরোপা লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দল দুটি। ইউরোপা লিগের শিরোপাধারী স্পার্সরা লম্বা সময় পর্যন্ত ছিল খেলার চালকের আসনে। তবে জয়ের দুয়ারে পৌঁছে যাওয়ার পর পা হড়কে যায় ইংলিশ ক্লাবটির। অবিশ্বাস্যভাবে ফিরে আসা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি পেল আরেকটি সাফল্যের স্বাদ। নিজেদের ইতিহাসে এই প্রথম সুপার কাপ উঁচিয়ে ধরল ফরাসি ক্লাবটি।

ছবি: এএফপি

অতিরিক্ত সময়ের বিধান না থাকায় ম্যাচ গড়ায় সরাসরি টাইব্রেকারে। সেখানে পিএসজির প্রথম শটই পোস্টের বাইরে মারেন ভিতিনিয়া। তবে বাকিরা কোনো ভুল করেননি। একে একে জাল খুঁজে নেন গনসালো রামোস, উসমান দেম্বেলে, কাং-ইন লি ও নুনো মেন্দেস।

অন্যদিকে, টটেনহ্যামের ডমিনিক সোলাঙ্কি ও রদ্রিগো বেন্তানকুর প্রথম দুটি শটে লক্ষ্যভেদ করলেও পরের দুটি জালে যায়নি। মিকি ফন ডি ফেনের শট রুখে দেন প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক লুকাস শেভালিয়ের। মাথিস তেল বল পাঠিয়ে দেন বাইরে। পেদ্রো পোরো শেষ শটটিতে জাল কাঁপিয়ে দলকে কিছু মুহূর্তের জন্য লড়াইয়ে টিকিয়ে রাখলেও তা যথেষ্ট হয়নি।

প্রথম এক ঘণ্টায় পুরোপুরি দাপট দেখায় নতুন কোচ টমাস ফ্র্যাঙ্কের অধীনে প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে নামা স্পার্সরা। প্রথমার্ধের ৩৯তম মিনিটে এগিয়ে যায় তারা। ডি-বক্সে জটলার মধ্যে বেন্তানকুরের ভলি শেভালিয়ের আটকে দিলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। বল পোস্টে লেগে পৌঁছায় ফন ডি ফেনের পায়ে। সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় পাওয়া সুযোগ কাজে লাগান এই ডাচ ডিফেন্ডার।

দ্বিতীয়ার্ধের তৃতীয় মিনিটে ফের উল্লাস করে ব্যবধান বাড়ায় টটেনহ্যাম। ক্লাবের নতুন অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে জাল খুঁজে নেন ক্রিস্তিয়ান রোমেরো। পোরোর ফ্রি-কিকে দূরের পোস্টে ফাঁকায় থেকে হেড করে গোল করেন তিনি। তবে এতে দায় আছে পিএসজির গোলরক্ষক শেভালিয়েরের। দুই হাত দিয়েও বল রুখতে পারেননি তিনি।

পাঁচ মিনিট পর তৃতীয় গোল পাওয়ার আশা জাগায় টটেনহ্যাম। সতীর্থের ক্রসে কেভিন ডানসোর হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর শুরু হয় প্যারিসিয়ানদের রূপকথার মতো প্রত্যাবর্তনের।

ছবি: এএফপি

আক্রমণে ধার বাড়িয়ে ম্যাচের ৬৬তম মিনিটে প্রথমবারের মতো বল লক্ষ্যে রাখতে পারে এনরিকের দল। দিজিরে দুয়ের শট কোনোমতে ফিরিয়ে দেন প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক গুলিয়েলমো ভিকারিও। এরপর জটলার মধ্য থেকে ব্র্যাডলি বারকোলা বল জালে পাঠালেও তা বাতিল হয় অফসাইডের কারণে।

দুই মিনিট পর বারকোলার বদলি হিসেবে মাঠে ঢোকেন দক্ষিণ কোরিয়ান উইঙ্গার লি। তারপর ৭৭তম মিনিটে দুয়েকে উঠিয়ে নামানো হয় পর্তুগিজ স্ট্রাইকার রামোসকে। তারা দুজনই পাল্টে দেন খেলা।

৮৫তম মিনিটে ব্যবধান কমান লি। ভিতিনিয়ার পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ২০ গজ দূর থেকে জোরাল নিচু শটে জাল কাঁপান। আর যোগ করা ছয় মিনিটের চতুর্থ মিনিটে ডানদিক থেকে দেম্বেলের ক্রসে চমৎকার হেডে স্কোরলাইন ২-২ করেন রামোস। এরপর টাইব্রেকারে জিতে আনন্দের জোয়ারে ভাসে পিএসজি।

Comments

The Daily Star  | English

No real relief for the poor

As prices soar, poor and middle-class struggle with rising cost of living

14h ago