টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০১০: ইংল্যান্ডের প্রথম বিশ্বজয়

আইপিএলের কল্যাণে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ততদিনে হয়ে উঠেছে বেশ জনপ্রিয়। তার ওপর ২০০৭ ও ২০০৯ এর সফল আসরের পর ২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন ছিল সময়ের দাবি। বিগত আসরের মতো ছোট দলগুলো চমকে না দিলেও ছিল নতুনত্ব।

আইপিএলের কল্যাণে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ততদিনে হয়ে উঠেছে বেশ জনপ্রিয়। তার ওপর ২০০৭ ও ২০০৯ এর সফল আসরের পর ২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন ছিল সময়ের দাবি। বিগত আসরের মতো ছোট দলগুলো চমকে না দিলেও ছিল নতুনত্ব।   

এই আসরের জন্য নির্ধারিত সময়ের চেয়েও অনেক কম অপেক্ষা করতে হয়েছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের। বিক্ষিপ্ত সূচিতে ভারসাম্য আনার জন্য ২০০৯ বিশ্বকাপের মাত্র ১০ মাসের মাথায় আরও একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করে বসে আইসিসি।

সেই আসরে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তোলে ইংল্যান্ড। অজিদের হারাতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি কেভিন পিটারসেন, পল কলিংউডদের। যদিও শুরুতেই হোঁচট খেয়েছিল ইংলিশরা, নেট রান রেটে এগিয়ে থেকে কোনমতে সুপার এইট নিশ্চিত করে তারা। চলুন দেখা নেওয়া যাক আর কি কি ঘটেছিল সেই আসরে।

আমিরের অবিশ্বাস্য ওভার

আসরের ষষ্ঠ ম্যাচটি ছিল পাকিস্তান বনাম অস্ট্রেলিয়ার। প্রথম ইনিংসে আগে ব্যাট করে ১৯তম ওভার পর্যন্ত ছড়ি ঘুরায় অজি ব্যাটাররা। শেষ ওভারে বল করতে আসেন মোহাম্মদ আমির। স্কোরবোর্ডে কোন রান যোগ না হলেও ৫ উইকেটের পতন ঘটে সেই ওভারে, পরিণত হয় অবিশ্বাস্য এক উইকেট মেইডেনে।

ব্র্যাড হ্যাডিনকে মোহাম্মদ সামির ক্যাচ বানিয়ে শুরু করেন আমির। পরের বলে বোল্ড করেন মিচেল জনসনকে। পরের দুই বলে রান আউটের ফাঁদে পড়েন স্টিভেন স্মিথ ও মাইক হাসি। শেষ বলে শন টেইটকে আবারও বোল্ড করেন পাক পেসার, সমাপ্তি ঘটে ক্রিকেট ইতিহাসের স্মরণীয় এক ওভারের। 

অপরাজেয় অজিরা ফাইনালে কুপোকাত

২০০৯ এ গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের পর ২০১০ বিশ্বকাপে দারুণভাবে ফিরে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া। গ্রুপ পর্ব ও সুপার এইটে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে তারা, হারেনি একটি ম্যাচও।

সেমি ফাইনালে পাকিস্তানের পাহাড়সম ১৯১ রানও অজিরা টপকে যায় ক্যামেরন হোয়াইট (৪৩) ও মাইকেল হাসির (৬০*) দৃঢ়তায়। মাত্র ৬২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলা দলটি ঘুরে দাঁড়ায় দারুণভাবে।

সেই অজিরাই পথ হারায় ফাইনালে। ইংল্যান্ডের বোলিংয়ে ৬ উইকেটে ১৪৭ রানের বেশি তুলতে পারেনি ক্যাঙ্গারুরা। বল হাতেও তারা ইংলিশদের পারেনি রুখতে, ক্রেইগ কিসওয়েটার ও কেভিন পিটারসেনের ব্যাটে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের উল্লাসে মাতে ইংল্যান্ড।

ক্যারিবীয় ভক্তদের একরাশ হতাশা

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে দারুণ করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিজেদের মাটিতে বিদায় নেয় সুপার এইট থেকেই। গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচ জিতে শুরুটা দাপটের সঙ্গেই করেছিল ক্যারিবীয়রা। তবে অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে আগেভাগেই বিদায় নিশ্চিত হয় ক্রিস গেইল, কাইরন পোলার্ডদের।

বিশ্বমঞ্চে আবারও টাইগারদের হাহাকার

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসরের মতো তৃতীয় আসরে একটি ম্যাচেও জয় তুলে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে গ্রুপ পর্বেই থমকে যায় সাকিব আল হাসানদের যাত্রা।

ব্যাটে বলে মাতালেন যারা

২০০৯ বিশ্বকাপে ব্যাটে বলে লড়াই জমলেও বিগত আসরগুলোর মতো রানের ফোয়ারা ছোটাতে পারেননি ব্যাটাররা। গোটা আসরে কোন দলই পারেনি দু'শোর কোঠা ছুঁতে।

সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ গড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সেমির হাই ভোল্টেজ লড়াইয়ে পাকিস্তানকে ১৯৭ রানের পাহাড়ে চাপা দিয়েছিল অজিরা। সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের রেকর্ডটাও ছিল ক্যাঙ্গারুদের দখলে, সুপার এইটে ৮১ রানে তারা হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কাকে।

৩০২ রান করে ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দ্যুতি ছড়িয়েছিলেন মাহেলা জয়াবর্ধনে। দল সেমি থেকে বিদায় নিলেও হয়েছিলেন আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। হাঁকিয়েছিলেন একটি সেঞ্চুরিও।

সেবার সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব দেখাতে পেরেছিলেন কেবল আরেকজন ব্যাটার। যা আসরের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসও। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০১ রানের ইনিংসটি খেলেন ভারতের সুরেশ রায়না।

এদিকে ফাইনাল হারায় ১৪ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হওয়া ডার্ক ন্যানেসের জন্য ছিল নিছক সান্ত্বনা।

Comments

The Daily Star  | English

US to provide 14,000 tank shells to Israel

The Biden administration has used an emergency authority to allow the sale of about 14,000 tank shells to Israel without congressional review, the Pentagon said yesterday..The State Department on Friday used an Arms Export Control Act emergency declaration for the tank rounds worth USD106.

47m ago