ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিদায় করে সেমিতে প্রোটিয়ারা

দুই দলের জন্যই সমীকরণ ছিল একটি। সেমি-ফাইনালে যেতে হলে জয়ের কোনো বিকল্প নেই। এক অর্থে অলিখিত কোয়ার্টার ফাইনাল বললেও ভুল হবে না। আর সেই লড়াইয়ে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সেমি-ফাইনালের টিকিট কেটেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত লড়াই করেও ক্যারিবিয়ানদের জেতাতে পারেননি রোস্টন চেজ।

অ্যান্টিগার স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সোমবার আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে নিজেদের শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৫ রান করে ক্যারিবিয়ানরা। তবে বৃষ্টির কারণে ১৭ ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১২৩ রানে। ৫ বল হাতে রেখেই সেই লক্ষ্যে পৌঁছায় প্রোটিয়ারা। গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচ জেতার পর সুপার এইটেও সব ম্যাচ জিতে অপরাজিত রইল দলটি।

তবে ম্যাচের এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল সহজেই জয় পেতে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশেষকরে উইকেটে যখন ট্রিস্টান স্টাবস ও হেনরিক ক্লাসেন ব্যাটিং করছিলেন। তখন আট ওভারেই ৭৭ রান তুলে ফেলেছিল দলটি। তবে ক্লাসেনকে ফিরিয়ে আলজেরি জোসেফ জুটি ভাঙার পর রোস্টন এজ দ্রুত তিনটি উইকেট তুলে নিলে জমে ওঠে ম্যাচ। তবে শেষ দিকে মার্কো ইয়ানসেনের দৃঢ়তায় কোনো বিপদ হয়নি প্রোটিয়াদের।

এই জয়ে সুপার এইটের তিন ম্যাচে তিন জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমি-ফাইনালে নাম লেখালো দক্ষিণ আফ্রিকা। আগের দিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে উড়িয়ে দিয়ে আগেই সেমিতে নাম লিখিয়েছিল ইংল্যান্ড। তবে দ্বিতীয় হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে তাদের। তিন ম্যাচ একটি জয় নিয়ে বিদায় নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগেই বিদায় নেওয়া যুক্তরাষ্ট্র সুপার এইটে কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি।

তবে লক্ষ্য তাড়ায় দলীয় ১৫ রানেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর দলীয় ৪২ রানে অধিনায়ক এইডেন মার্করামকেও হারায় দলটি। এরপর উইকেটে নেমে স্টাবস ও ক্লাসেন ঝড়ো গতিতে ব্যাটিং করতে থাকেন। ১৬ বলে ৩৫ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার।

তবে ক্লাসেনকে ফিরিয়ে এই জুটি ভেঙে ম্যাচে ফিরে আসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর ডেভিড মিলারকে বোল্ড করে দেওয়ার পর স্টাবসকেও তুলে নেন চেজ। এরপর মহারাজকেও বিদায় করেন এই অলরাউন্ডার। কিন্তু তার লড়াই যথেষ্ট হয়নি। এক প্রান্ত আগলে রাখেন ইয়ানসেন। তার ব্যাটেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।

তবে পক্ষে সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন স্টাবস। ২৭ বলে ৪টি চারের সাহায্যে এই রান করেন তিনি। ১০ বলে ২২ রানের ক্যামিও খেলেন ক্লাসেন। ৩টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন তার ইনিংসে। শেষ দিকে ১৪ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২২ রান করে অপরাজিত থাকেন ইয়ানসেন। এছাড়া মার্করাম ১৮ রান করেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ৩ ওভার বল করে ১২ রান দিয়ে ৩টি উইকেট পান চেজ। এছাড়া ২টি করে উইকেট পান রাসেল ও জোসেফ।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে সাত বলের মধ্যেই দুই উইকেট হারিয়ে বড় চাপে পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেই হোপ খালি হাতে ফেরার পর নিকোলাস পুরান বিদায় নেন ব্যক্তিগত ১ রানে। এরপর আরেক ওপেনার কাইল মেয়ার্সকে নিয়ে দলের হাল ধরেন রোস্টন চেজ। তৃতীয় উইকেটে ৬৫ বলে ৮১ রান যোগ করেন এই দুই ব্যাটার। তাতে বড় পুঁজির স্বপ্নই দেখছিল স্বাগতিকরা।

মেয়ার্সকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন তাবরাইজ শামসি। তাতেই ঘুরে যায় ম্যাচের মোড়। এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে ক্যারিবিয়ানরা। অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল আউট হন ব্যক্তিগত ১ রানে। শেরফেন রাদারফোর্ড তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি। দলীয় ৯৭ রানে ফিরে যান চেজও। ফলে পুঁজিটা খুব বড় করতে পারেনি ক্যারিবিয়ানরা।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫২ রানের ইনিংস খেলেন চেজ। ৪২ বলের ইনিংসটি সাজাতে ৩টি চার ও ২টি ছক্কা মেরেছেন এই অলরাউন্ডার। ৩৪ বলে ৩৫ রান করেন মেয়ার্স। চেজের মতো তিনিও মেরেছেন ৩টি চার ও ২টি ছক্কা। শেষ দিকে আন্দ্রে রাসেল ৯ বলে ১৫ ও আলজেরি জোসেফ ৭ বলে ১১ রান করেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ৪ ওভার বল করে ২৭ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন শামসি।  

Comments

The Daily Star  | English
US attack on Iran nuclear sites

Iran denounces US attack as ‘outrageous’

Iran says 'no signs of contamination' after US attacks on key nuclear sites

7h ago