মাঝের ওভারে সবচেয়ে বেশি বল খেলে সবচেয়ে মন্থর মাহমুদউল্লাহ

Mahmudullah
মাহমুদউল্লাহ। ফাইল ছবি: ফিরোজ আহমেদ

দ্বিতীয় ওয়ানডে হারের পর মাহমুদউল্লাহর পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্নে কিছুটা রেগে যান অধিনায়ক তামিম ইকবাল। মনে করিয়ে দেন আগের সিরিজেই তো তিনি ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছেন। কথা সত্য। কিন্তু এই সত্যের বাইরেও আছে আরও সত্য। লুকিয়ে আছে আরেকটি দিক। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার রান করছেন ঠিকই, তবে সেই রানের প্রভাব আসলে কতটা?

গত ৯ ম্যাচে দুটি ফিফটি মাহমুদউল্লাহর, ত্রিশের ঘরে ইনিংস আছে আরও কয়েকটি। তিনি যে একদম ছন্দে নেই এ কথা বলা যাচ্ছে না। আবার তিনি যে ছন্দে আছেন, খেলার ধরন দেখলে সেটাও কেউ বলবে না। এবার যদি পরিসংখ্যানের আশ্রয় নেওয়া যায় তাহলে চিত্রটা আরও পরিষ্কার হতে পারে।

ওয়ানডেতে ১৫ থেকে ৪০ ওভারকে যদি মিডল ওভার ধরা হয়। ২০২২ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এই ফেইজে বাংলাদেশের ব্যাটারদের সবচেয়ে বেশি বল সামলে সবচেয়ে বেশি রান করেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু তার স্ট্রাইকরেটই আবার সবচেয়ে কম।

এই সময়ে ১১ ইনিংস ব্যাট করে  মাঝের ওভারে মাহমুদউল্লাহ ৫০৬ বলে করেন ৩০৩ রান। তার স্ট্রাইকরেট স্রেফ ৫৯.৮৮। তার মতই মাঝের ওভারে গতি বাড়াতে না পারার সমস্যায় আছেন আফিফ হোসেনও। এই সময়ে তিনি ১২ ইনিংসে ৩২৬ রান করেছেন ৬৯.৩২ স্ট্রাইকরেটে। চারে নামা মুশফিকুর রহিম এই ধাপে সবচেয়ে বেশি বল খেলার কথা। কিন্তু ছন্দহীনতায় থাকা এই ব্যাটার ৮ ইনিংসে ২২৫ রান করেন ২৪.৮৩ গড় আর ৬৬.২২ স্ট্রাইকরেটে।

ওপেনার হলেও মাঝের ওভারে টিকে সব মিলিয়ে সবচেয়ে সফল লিটন দাস।  এই ফেইজে ৮ ইনিংস ব্যাট করে সবচেয়ে বেশি ৫৮.৪০ গড়ে তিনি ২৯২ রান করেছেন সর্বোচ্চ ৯৮.৯৮ স্ট্রাইকরেট। সাকিব আল হাসানও রানের চাকা রাখতে পেরেছেন সচল। এই ধাপে  ৯ ইনিংসে ৯৪.৩২ স্ট্রাইকরেটে করেন ১৮৩ রান। তবে ২৬.১৪ গড় বলছে যথেষ্ট ধারাবাহিক ছিল না তার ব্যাট।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুরে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বেরিয়ে আসা বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সামর্থ্য। ৩২৬ রান টপকাতে গিয়ে ৯ রানে পড়ে যায় ৩ উইকেট। এরপর আর জেতার তেমন কোন তাড়না দেখা যায়নি। তামিম ইকবাল ও সাকিবের প্রতিরোধ গড়তে নেওয়া সময় বোধগম্য ছিল। কিন্তু খোলস ছেড়ে আর বেরুতেই পারেননি তারা।

সবচেয়ে বিস্ময়কর লেগেছে মাহমুদউল্লাহর অ্যাপ্রোচ। জেতার জন্য ওভারপ্রতি দলের রান যখন দরকার আটের উপরে। তখন ক্রিজে আসেন তিনি। এরপর খেলেন ৪৮ বলে ৩২ রানের ইনিংস। এতে তার রান ও গড় বেড়েছে। কিন্তু দলের খেলায় কোন প্রভাব তৈরি হয়নি।

প্রাসঙ্গিক হওয়ায় গত বছরের অগাস্টে মাহমুদউল্লাহর আরেকটি ইনিংসের দিকে পেছনে ফিরে তাকানো যাতে পারে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে পাঁচে নেমে এক পর্যায়ে তার রান ছিল ৫০ বলে ২৭। শেষ দিকে গতি বাড়িতে ৮৪ বলে ৮০ রানে। বাংলাদেশ ৫ উইকেটে করে ২৯০ রান।

রানে ভরা উইকেটে বাংলাদেশ যে অন্তত ৩০ রানের ঘাটতিতে ছিল তা টের পাওয়া যায় পরে। সিকান্দার রাজার সেঞ্চুরিতে ১৫ বল আগেই ম্যাচ জিতে যায় জিম্বাবুয়ে। 

চলতি বছর ভারতে বিশ্বকাপেও বড় রানের আভাস আছে। মাঝের ওভারের ঘাটতি মেটাতে না পারলে বড় পূঁজি পাওয়া কিংবা বড় রান তাড়া কঠিন হতে পারে তামিম ইকবালদের।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh transition from autocracy to democracy

Transitioning from autocracy to democracy: The four challenges for Bangladesh

The challenges are not exclusively of the interim government's but of the entire political class.

12h ago