রোনালদোর 'বদলি' রামোসের হ্যাটট্রিকে শেষ আটে পর্তুগাল

গ্রুপ পর্বের লড়াই শেষ। শেষ ষোলোরও শেষ ম্যাচ। অর্থাৎ বিশ্বকাপই প্রায় শেষের পথে। আর শেষে এসেই বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিক দেখল বিশ্ব। তাও এমন এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে, যার কি-না প্রথম একাদশে জায়গাও নিশ্চিত নয়। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর ধারাবাহিক ব্যর্থতায় জায়গা পেলেন গনসালো রামোস। আর পেয়ে হ্যাটট্রিক তো করলেনই, সহজ জয়ে পর্তুগালকে তুললেন কোয়ার্টার ফাইনালে।

মঙ্গলবার রাতে দোহার লুসাইল স্টেডিয়ামে ফিফা বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের শেষ ম্যাচে সুইজারল্যান্ডকে ৬-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে পর্তুগাল। রামোসের হ্যাটট্রিকের পাশাপাশি পর্তুগালের হয়ে গোল পেয়েছেন পেপে ও রাফায়েল গুরেইরো। সুইজারল্যান্ডের হয়ে সান্ত্বনাসূচক গোল করেন ম্যানুয়েল আকেনজি।

শুধু হ্যাটট্রিকই নয়, একটি গোলে সহায়তাও করেছেন রামোস। মূলত বেনফিকার হয়ে চলতি মৌসুমটাই দুর্দান্ত কাটাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু দলে রোনালদো থাকায় জায়গা মিলছিল না পর্তুগালের প্রথম একাদশে। তবে জায়গা করে দিয়েছেন সেই রোনালদোই। তার ধারাবাহিক ব্যর্থতায় বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে সহজ কিছু সুযোগ মিসের কারণে নকআউট পর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রামোসকে প্রথম একাদশে রাখেন কোচ ফের্নান্দো সান্তোস। আর তাতেই বাজীমাত।

ম্যাচের শুরুতে অবশ্য খেলা গোছাতে পারেনি কোনো দলই। প্রথম ১৫ মিনিট মাঝমাঠেই বল ঘোরাফেরা করে। ১৭তম মিনিটে প্রথম গোছানো আক্রমণ করে পর্তুগাল। প্রথম লক্ষ্যে শট তাদের। আর সে শট থেকেই এগিয়ে যায় দলটি। জোয়াও ফেলিক্সের বাড়ানো বল পেয়ে বাঁ প্রান্ত থেকে কাছের পোস্ট ঘেঁষে নেওয়া জোরালো এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন রামোস।

৩৩তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে দলটি। এবার লক্ষ্যভেদ করেন দলের বর্ষীয়ান ডিফেন্ডার পেপে। ফেলিক্সের ক্রস ফ্যাবিয়ান শার হেডে কর্নারের বিনিময়ে বিপদমুক্ত করেন। সেই কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে অসাধারণ এক হেডে বল জালে পাঠান পেপে। প্রথমার্ধে দুই গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় পর্তুগাল।

দ্বিতীয়ার্ধে ছয় মিনিট যেতেই নিজের দ্বিতীয় গোল পান রামোস। ডান প্রান্ত থেকে দিয়াগো দালতের ক্রস থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে আলতো টোকায় বল জালে পাঠান এই বেনফিকা ফরোয়ার্ড। এর চার মিনিট পর স্কোরলাইন ৪-০ করেন গুরেইরো। রামোসের বাড়ানো বল পেয়ে বাঁ প্রান্ত থেকে জোরালো এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন এ ডিফেন্ডার।

৫৮তম মিনিটে ব্যবধান কমায় সুইজারল্যান্ড। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে ডান প্রান্তে ফাঁকায় বল পেয়ে আলতো টোকায় জালে জড়ান আকেনজি। এর নয় মিনিট পর নিজের হ্যাাটট্রিক পূরণ করেন রামোস। ফেলিক্সের বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান তিনি। দারুণ এক চিপে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে হ্যাটট্রিকের উল্লাসে মাতেন এ ফরোয়ার্ড। মিরাস্লাভ ক্লোসার পর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়ে হ্যাটট্রিক করেন তিনি।

ম্যাচের যোগ করা সময়ে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন রাফায়েল লিয়াও। গুরেইরো কাছ থেকে বাঁ প্রান্তে বল পেয়ে জোরালো এক কোণাকোণি শটে বল জালে পাঠান এ মিলান তারকা। ফলে বিশাল জয়েই শেষ আট নিশ্চিত করে দলটি।

তবে ম্যাচে গোল দেওয়ার মতো আরও অনেক সুযোগই ছিল পর্তুগিজদের। ২২তম মিনিটে ওতাভিও জোরালো শট নিতে পারলে গোল পেতে পারতো দলটি। পরের মিনিটে রামোসের শট ঠেকান সুইস গোলরক্ষক সোমের। ৩০তম মিনিটে শাকিরির নেওয়া ফ্রিকিক পর্তুগিজ গোলরক্ষক কস্তা ঝাঁপিয়ে না ঠেকালে গোল পেতে পারতো সুইজারল্যান্ড।

৩৮তম মিনিটে এডিমিলসনের শট গোলরক্ষক কস্তা ঠেকানোর পর আলগা বলে হেড দিয়েছিলেন রিমো ফ্রেইলার। তবে হেডে তেমন জোর না থাকায় গোল মুখ থেকে ঠেকান দিয়াগো দালোত। পাঁচ মিনিট পর অবিশ্বাস্য এক সেভ করেন সোমের। ব্রুনো ফার্নান্দেসের বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন রামোস। তার কোণাকোণি শট দারুণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে ঠেকান সুইস গোলরক্ষক।

৭০তম মিনিটে গুরেইরোর ক্রসে পা ছোঁয়াতে পারলেই গোল পেতে পারতেন ব্রুনো। ৮০তম মিনিটে এমবোলোর ব্যাকভলি অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৮৪তম মিনিটে অবশ্য বল জালে জড়িয়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু অফসাইডে থাকায় গোল মিলেনি। ৮৭তম মিনিটে ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন রোনালদো। তবে শট নিতে দেরি পারেননি।

Comments

The Daily Star  | English

BNP struggles to rein in the rogues

Over the past 11 months, 349 incidents of political violence took place across the country, BNP and its affiliated organisations were linked to 323 of these

9h ago