
বিনয়ী হিসেবে পরিচিত লিওনেল মেসিকে এমন রুদ্রমূর্তিতে আগে কখনও দেখা গেছে? উত্তরটা সম্ভবত 'না'। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর আর উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক ছিলেন তেতে।
দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি থেকে গোল করার পর মেসির ভিন্নধর্মী উদযাপনের লক্ষ্যবস্তু ছিলেন ডাচ কোচিং স্টাফরা। ম্যাচশেষে প্রতিপক্ষ কোচ লুই ফন হালের দিকে এগিয়েও কিছু কথা বলেন তিনি। সেগুলো যে বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল না তা আন্দাজ করে নেওয়া যায়।
প্রশ্ন হলো, মেসি কেন এসব করলেন? জবাব পেতে যেতে হবে একটু পিছনে। কাতার বিশ্বকাপের শুক্রবার রাতের কোয়ার্টার ফাইনালের আগেই তৈরি হয়েছিল লড়াইয়ের আবহ। সংবাদ সম্মেলনে ফন হাল দাবি করেছিলেন, যখন আর্জেন্টিনার পায়ে বল থাকে না, তখন মেসি দলকে সাহায্য করতে পারেন না। এমন বক্তব্যকে সহজভাবে নেননি রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী তারকা। সেটার প্রমাণ পাওয়া যায় লুসাইল স্টেডিয়ামে তার 'যুদ্ধংদেহী' আচরণে। শান্ত স্বভাবের মেসি হয়ে পড়েন রীতিমতো খ্যাপাটে।
নানা নাটকীয়তার পর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মধুর হাসি হেসে সেমিফাইনালে নাম লিখিয়েছে আর্জেন্টিনা। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় ২-২ সমতায়। অরিতিক্ত ৩০ মিনিটে আসেনি কোনো গোল। টাইব্রেকারে গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজের দৃঢ়তায় ৪-২ গোলে জেতে আলবিসেলেস্তেরা। এরপর গণমাধ্যমের কাছে মেসি জানান ফন হালের কথায় অসম্মানিত বোধ করার কথা, 'ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে ফন হালের কথায় আমি অসম্মানিত বোধ করেছি। খেলার সময়ও বেশ কয়েকজন ডাচ ফুটবলার বেশি বেশি কথা বলেছে।'
নিজের সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপ খেলতে থাকা মেসি কাঠগড়ায় তোলেন ডাচ কোচের কৌশলকে। পাশাপাশি ৩৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের মতে, তারাই সেমিতে ওঠার যোগ্য ছিলেন, 'ফন হাল বলে বেড়ান যে, তিনি ভালো ফুটবল খেলান। কিন্তু তারপর প্রতিপক্ষের বক্সে ফরোয়ার্ড রেখে লম্বা লম্বা পাস দেওয়ায়। আমরাই জয়ী হওয়ার যোগ্য ছিলাম এবং সেটাই ঘটেছে।'
মূল ম্যাচের নায়ক মেসি হলেও পেনাল্টি শুটআউটে মূল অবদান রাখেন এমিলিয়ানো। নেদারল্যান্ডসের প্রথম দুই শট নেওয়া ভার্জিল ফন ডাইক ও স্টিভেন বেরগাসকে রুখে দেন তিনি। প্রতিপক্ষ কোচের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন তিনিও, 'আমি ফন হালকে বলতে শুনেছি, "পেনাল্টিতে আমরা এগিয়ে থাকব। যখন আমরা টাইব্রেকারে যাই, আমরা জিতি।" আমার মনে হয়, তার উচিত মুখ বন্ধ রাখা।'
Comments