ইংল্যান্ডকে ছিটকে দিয়ে সেমিফাইনালে ফ্রান্স

ছবি: এএফপি

প্রথমবার পিছিয়ে পড়ার পর পেনাল্টি থেকে ইংল্যান্ডকে সমতায় ফেরালেন হ্যারি কেইন। দ্বিতীয় দফায় আর পারলেন না অধিনায়ক। স্পট-কিক তিনি উড়িয়ে মারলেন ক্রসবারের অনেক উপর দিয়ে। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে পূর্ণ ম্যাচে লিড ধরে রেখে শেষ হাসি হাসল ফ্রান্স। দিদিয়ের দেশমের দল জায়গা করে নিল কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে।

শনিবার রাতে আল বাইত স্টেডিয়ামে আসরের শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে ইংলিশদের ২-১ গোলে হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দুই অর্ধে তাদের পক্ষে একবার করে লক্ষ্যভেদ করেন আহেলিয়া চুয়ামেনি ও অলিভিয়ের জিরু। থ্রি লায়ন্সদের একমাত্র গোলদাতা কেইন। ম্যাচের ৮৪তম মিনিটে স্কোরলাইন ২-২ করার সুযোগ এসেছিল তার সামনে। কিন্তু পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি।

আগামী ১৫ ডিসেম্বর একই ভেন্যুতে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নামবে ফরাসিরা। সেখানে তাদের অপেক্ষায় আছে মরক্কো। আফ্রিকার প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপের শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে তারা।

গতিময় ফুটবলে ভীতি জাগানো শুরুটা দ্বিতীয়ার্ধে ধরে রাখতে পারেনি ফ্রান্স। বরং ইংল্যান্ড হয়ে উঠেছিল মরিয়া। কিন্তু গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যদের সঙ্গী হয় হতাশাই। বল দখলের পাশাপাশি গোলমুখে শট নেওয়ায় তারা এগিয়ে ছিল। তাদের ১৬টি শটের আটটি ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে, ফরাসিরা আটটি শটের মধ্যে পাঁচটি লক্ষ্যে রাখতে পারে।

ম্যাচের শুরুর দিকে আক্রমণে আধিপত্য দেখায় ফ্রান্স। একাদশ মিনিটে জর্ডান পিকফোর্ডের পরীক্ষা নেন অলিভিয়ের জিরু। আঁতোয়ান গ্রিজমানের ক্রসে তার হেড লুফে নেন ইংল্যান্ড গোলরক্ষক।

ছয় মিনিট পর দূরপাল্লার শটে দলকে উল্লাসে মাতান চুয়ামেনি। বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে একজনকে কাটিয়ে ডান দিকে বল বাড়ান কিলিয়ান এমবাপে। এরপর গ্রিজমান খুঁজে নেন চুয়ামেনিকে। সামনে ফাঁকা জায়গা দেখে ডি-বক্সের বাইরে থেকে শট নেন তিনি। ঝাঁপিয়ে পড়া পিকফোর্ডকে ফাঁকি দিয়ে বল জড়ায় জালে।

পিছিয়ে পড়ে দমে না গিয়ে আক্রমণে মনোযোগী হয় ইংলিশরা। ২৬তম মিনিটে ডি-বক্সের প্রান্তে দায়ত উপামেকানোর চ্যালেঞ্জে কেইন পড়ে গেলে পেনাল্টির আবেদন ওঠে। ভিএআরের সাহায্য নেওয়া হলেও কিছু ধরা পড়েনি।

তিন মিনিট পর দূর থেকে নিজের ভাগ্য পরীক্ষা করেন কেইন। তার শট প্রতিপক্ষের একজনের গায়ে লেগে দিক পাল্টে লক্ষ্যেই ছিল। ডাইভ দিয়ে বল আটকে দেন ফরাসি গোলরক্ষক হুগো লরিস।

বিরতির পর ধার বাড়ে ইংলিশদের খেলায়। ৪৭তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে জুড বেলিংহামের হাফ ভলি জালের দিকেই যাচ্ছিল। হাওয়ায় ভেসে কর্নারের বিনিময়ে জাল অক্ষত রাখেন লরিস।

সাত মিনিট পর সফল পেনাল্টিতে গোল শোধ করে দেন কেইন। ডি-বক্সের ভেতরে বুকায়ো সাকাকে চুয়ামেনি ফাউল করায় রেফারি বাজিয়েছিলেন স্পট-কিকের বাঁশি। পরের মিনিটেই পিকফোর্ড দারুণভাবে রক্ষা করেন দলকে। ফাঁকায় থাকা আদ্রিয়েন র‍্যাবিওর নিচু শট তাকে ফাঁকি দিতে পারেনি।

৬০তম মিনিটে সাকার দুর্বল শট ছিল সরাসরি লরিসের দিকে। দুই মিনিট পর সাকার কাছ থেকেই বল পেয়ে কেইন কাছের পোস্টে শট নেন। এবারও তৎপর ছিলেন ফরাসি অধিনায়ক।

আট মিনিট পর ভাগ্য সহায় হয়নি ইংলিশদের। জর্ডান হেন্ডারসনের ফ্রি-কিকে লাফিয়ে হেড করেন হ্যারি ম্যাগুইয়ার। বল পোস্টের বাইরের দিকে লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দুই মিনিট পর বাম প্রান্ত থেকে লুক শ বিপজ্জনক ক্রস করেন ডি-বক্সে। থিও হার্নান্দেজের চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে সাকা বলে পা ছোঁয়ালেও পারেননি লক্ষ্যে রাখতে।

চাপ বাড়ছিল গত রাশিয়া বিশ্বকাপে শিরোপা জেতা দেশমের দলের ওপর। তারা গা ঝাড়া দেয় ৭৭তম মিনিটে। থিওর ক্রসে উসমান দেম্বেলে হেড করার পর বল পান জিরু। তার ভলি দারুণ দক্ষতায় কর্নারের বিনিময়ে রুখে দেন পিকফোর্ড।

ওই কর্নার থেকেই ফের এগিয়ে যায় ফ্রান্স। গ্রিজমানের কিক প্রতিপক্ষ রক্ষণভাগ ফিরিয়ে দেওয়ার পর আবার তিনিই পেয়ে যান। এবার তিনি করেন মাপা ক্রস। লেগে থাকা ম্যাগুইয়ারের চাপ এড়িয়ে দুর্দান্ত হেডে নিশানা ভেদ করেন জিরু।

তিন মিনিট পর আবার পেনাল্টির আবেদন তোলে ইংল্যান্ড। বদলি ম্যাসন মাউন্টকে ডি-বক্সে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন থিও। শুরুতে রেফারি কর্ণপাত না করলেও পরে ভিএআরের দ্বারস্থ হন। আরেকবার বাজে স্পট-কিকের বাঁশি। কিন্তু কেইন হাতছাড়া করেন সুবর্ণ সুযোগ। বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হলে হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়ে ফ্রান্স, আক্ষেপে পোড়ে ইংল্যান্ড।

Comments

The Daily Star  | English
CAAB pilot licence irregularities Bangladesh

Regulator repeatedly ignored red flags

Time after time, the internal safety department of the Civil Aviation Authority of Bangladesh uncovered irregularities in pilot licencing and raised concerns about aviation safety, only to be overridden by the civil aviation’s higher authorities.

9h ago