বিশ্বকাপে কেমন খেলবে বাংলাদেশ?

এবারের বিশ্বকাপের আগে সাকিব-তামিম ডামাডোলে ক্রিকেটটাই কেমন যেন ম্লান।  দলের শক্তি বা দুর্বলতার জায়গাগুলো নিয়ে তেমন কোনো আলোচনাই চোখে পড়ছে না। কোন মাঠে, কোন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দলের সমন্বয় কেমন হতে পারে। এসব নিয়ে তেমন কোনো ভালো বিশ্লেষণ দেখছি না।
Bangladesh Cricket Team
ছবি: ফিরোজ আহমেদ/স্টার

১৯৯২ ক্রিকেট বিশ্বকাপের কিছু টুকরো টুকরো স্মৃতি আছে। কিন্তু সত্যিকার আগ্রহ নিয়ে, খেলাটাকে মোটামুটি বুঝে প্রথম যেবার ভালোভাবে বিশ্বকাপ দেখেছিলাম সেটা ছিলো ১৯৯৬। প্রাণ ভরে উপভোগ করেছিলাম শচিন টেন্ডুলকারের ব্যাটিং, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে কেনিয়ার অঘটন, জয়সুরিয়া-কালুভিথারানার মারমার-কাটকাট সূচনা, গ্যারি কার্স্টেনের ১৮৯, ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে শ্রীলঙ্কার শিরোপা।

সেই বিশ্বকাপটা ছিলো আমার জন্য নেহায়েতই অরিয়েন্টেশন – ক্রিকেটে "কি কি হতে পারে" তার প্রথম পাঠ। তবে খেলাটা ভালোভাবে বুঝতে শুরু করি ১৯৯৯ থেকে, যখন বাংলাদেশ প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যায়।

এবারের বিশ্বকাপের আগে সাকিব-তামিম ডামাডোলে ক্রিকেটটাই কেমন যেন ম্লান।  দলের শক্তি বা দুর্বলতার জায়গাগুলো নিয়ে তেমন কোনো আলোচনাই চোখে পড়ছে না। কোন মাঠে, কোন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দলের সমন্বয় কেমন হতে পারে। এসব নিয়ে তেমন কোনো ভালো বিশ্লেষণ দেখছি না।  সবাই সাকিব-তামিম নাটক নিয়ে ব্যস্ত। আমি অবশ্য ব্যক্তিগতভাবে মনে করি তামিম না থাকাতে বাংলাদেশ দলের তেমন কোনো সমস্যা হবে না। তামিমের ব্যাপারে আমাদের মাঝে এক ধরণের "হ্যাংওভার" কাজ করে, বিশেষ করে ২০১৫ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তামিমের পারফর্মেন্সের কারণে। সে যাই হোক, যে দলটা নিয়ে আমরা ভারতে গেছি, সেটাই যেহেতু চূড়ান্ত, সুতরাং তামিমের জন্য হাহুতাশ না করে এই দলটা নিয়ে এবার একটু নৈর্ব্যক্তিক আলোচনা করার চেষ্টা করা যাক।

Dharamshala Stadium
ছবি: সংগ্রহ

পিচ এবং মাঠ

ফুটবল যেমন গোলের খেলা, ক্রিকেট তেমনই রানের খেলা। যে দল বেশি রান করবে, সেই দলই জিতবে। তাই দল নিয়ে আলোচনার শুরুটা হয়তো ব্যাটিং দিয়ে করা উচিৎ। কিন্তু আমার মনে হয় এবারের বিশ্বকাপে ভারতে যে ধরনের পিচে খেলা হবে, সেটার একটা বড় ভূমিকা থাকবে বাংলাদেশ দলের চূড়ান্ত পারফর্মেন্সের ক্ষেত্রে। কারণ পিচের উপর নির্ভর করবে কত রান হবে। আইপিএল থেকে আমরা বেশ ভালো একটা ধারণা পেয়েছি ভারতে সাদা বলের খেলা কেমন পিচে হয়। এবারের আইপিএলে অনেকগুলো ম্যাচে দু'শোর বেশি স্কোর হয়েছে। বেশিরভাগ মাঠেই আউটফিল্ডও ছিলো ধারাভাষ্যকারদের ভাষায় "লাইটনিং ফাস্ট" বা "ব্যাটার্স ফ্রেন্ড"।

ঐতিহাসিকভাবে এশিয়ায় যে ধরনের পিচ হয়ে থাকে – শুকনো, ঘাসহীন, ধুলোময় ও ফাটাফুটো নিচু বাউন্সের ধীরগতির পিচ – আইপিএলে তেমন পিচ দেখা গেছে হাতেগোনা মাত্র কয়েক ম্যাচে। বেশিরভাগ পিচ এমনভাবে বানানো হয়েছে যেন বল একটা ভালো গতিতে এবং সুবিধাজনক উচ্চতায় ব্যাটে আসে যাতে করে ব্যাটাররা নিশ্চিন্তে (অর্থাৎ বল হুট করে লাফিয়ে ওঠা বা আচমকা নিচু হয়ে যাওয়া বা থেমে-থেমে আসার ভয় ছাড়া) "অন দি আপ" শট খেলতে পারে। এ ধরনের পিচে দ্রুতগতির বোলাররা ভালো লাইন লেংথে বল করতে পারলে সাফল্য পান। অনেক পিচেই নতুন বলে কিছু সুইং বা সিম মুভমেন্টও থাকে। স্পিনাররা অনেক বেশি টার্ন পান না, তাই এ অঞ্চলে স্পিনারদের যে রাজত্ব তা এবারের বিশ্বকাপে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা কম। ওয়ানডেতে ৩০০-৩৫০ রান এখন ডাল-ভাত। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রায় প্রতি ম্যাচেই ৩০০ ছাড়ানো লক্ষ্য দেয় প্রতিপক্ষকে এবং অবলীলায় তাড়াও করে ফেলে। বাংলাদেশের ব্যাটাররা 'অন দি আপ' খেলতে পছন্দ করেন, কিন্তু কাজটা ভালো পারেন না কারণ ভালো ব্যাটিং উইকেটে তারা খুব একটা খেলেন না। আইপিএলের কল্যাণে বিশ্বের সব দেশের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়েরেরই এখন ভারতে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। বাংলাদেশের মূল ব্যাটারদের প্রায় কারোই সেই অভিজ্ঞতা নেই। দেশেও সিলেট ছাড়া সেরকম ভালো পিচ নেই। তাই অন্য দলগুলো যত সহজে ৩০০ ছাড়ানো স্কোর গড়তে পারে, বাংলাদেশ তত সহজে পারে না। আগে বোলিং করে প্রতিপক্ষকে অল্প রানে বেঁধে ফেলাটাই এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে কার্যকর ফর্মুলা। ভালো ব্যাটিং পিচে সেটা প্রতি ম্যাচেই করা সম্ভব হবে না।

Taskin Ahmed

বোলিং

এবারে আসি বাংলাদেশ দলের মূল শক্তির জায়গা বোলিংয়ে। ক্রিকেটে একটা কথা আছে যে টেস্টম্যাচ জিততে হলে প্রতিপক্ষকে দু'বার অলআউট করার মতো বোলিং থাকতে হবে। এশিয়ার বাইরে এই কাজটা করতে হলে দরকার অন্তত ২-৩ জন দীর্ঘকায় (অন্তত ৬ ফিট বা তার কাছাকাছি উচ্চতার) দ্রুতগতির বোলার যারা: (১) ১৪০ কিলোমিটারের কাছাকাছি গতিতে লাইন-লেংথ ঠিক রেখে বোলিং করতে পারেন, (২) কমবেশি সুইং বা সিম মুভমেন্ট আদায় করতে পারেন, এবং (৩) বাউন্সার মারতে পারেন। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ দলের একটা বড় সুবিধা হলো এরকম ৩ জন বোলার আমাদের আছে: তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ। ইবাদত ফিট থাকলে এই তালিকায় নিশ্চিতভাবে সেও যুক্ত হতো। মুস্তাফিজের গতি খুব বেশি না, সেরা ছন্দেও নেই, কিন্তু ডেথ বোলিংয়ে এখনো বেশ ভালো। তানজিম সাকিব একেবারেই নতুন, যদিও তার গতি ও নিয়ন্ত্রণও ভালো বলেই মনে হচ্ছে। 'সাদা বিদ্যুৎ' অ্যালান ডোনাল্ডের তত্ত্বাবধানে প্রতিদিনই তাদের বোলিংয়ে উন্নতি দেখা যাচ্ছে। আমার বিশেষ করে ভালো লাগছে শরিফুলকে – ওভার দা উইকেট থেকে ডানহাতি ব্যাটারের ভেতরের দিকে বল সুইং করানোটা শিখে গেছে শরিফুল। নতুন বলে এটা দারুণ অ্যাসেট বাংলাদেশের জন্য।

এবারে আসি ওয়ানডের কথায়। একটা ৫০ ওভারের ইনিংসকে যদি ৫টা দশ ওভারের অধ্যায় হিসেবে চিন্তা করি এবং এরকম অন্তত ৩ জন বোলার যদি দলে থাকে, তাহলে প্রতি অধ্যায়েই ১৪০ কিমি গতিতে কয়েক ওভার বল করার মতো অন্তত একজন বোলার পাওয়া যাবে। পিচ যত ভালোই হোক এবং ব্যাটার যত ভালো ফর্মেই থাকুক না কেন, ১৪০ কিমি গতির বোলিংয়ের বিরুদ্ধে একটানা ব্যাট চালিয়ে যাওয়া সহজ না। দুই পাওয়ারপ্লের মাঝের ৩০ ওভারে লম্বা জুটি তৈরি হতে না দেয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ভারতে এবার যে ধরণের পিচে খেলা হবে বলে মনে হচ্ছে, তাতে মাঝের ওভারগুলোতে গতিময় আক্রমণাত্মক বোলিংয়ের অপশন না থাকলে রান আটকানো বা উইকেট নেয়া কঠিন হবে। তাছাড়া, নতুন ফিল্ড রেস্ট্রিকশনের নিয়মে ১১ থেকে ৪০ ওভারের মধ্যে ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে কেবল ৪ জন ফিল্ডার রাখা যায়। তাই একটানা স্পিনারদের দিয়ে বোলিং করানোটা – তারা যত ভালোই হোক না কেন – এখন কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এসময়টাতে প্রয়োজন স্পিন এবং পেসের ব্যালেন্সড মিশ্রণ। সেই মিশ্রণটা বাংলাদেশ দলে ভালোই আছে। সাকিব নির্দ্বিধায় বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পিনার। নাসুম এবং শেখ মেহেদীও সাদা বলে যথেষ্ট কার্যকর। আর মিরাজের শক্তির জায়গা হলো নিয়ন্ত্রণ – ক্রমাগত এক জায়গায় বল করে যেতে পারে সে।

ফিল্ডিং

গত ২-৩ বছরে বাংলাদেশ ফিল্ডিংয়েও দারুণ উন্নতি করেছে। এবারের বিশ্বকাপের দলে যারা অপেক্ষাকৃত তরুণ তারা প্রায় সবাই খুব ভালো ফিল্ডার, বিশেষ করে বলতে হয় মিরাজ, হৃদয় এবং শান্তর কথা। প্রতি ম্যাচেই এরা মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়ে ১০-১২ রান বাঁচিয়ে দেন। তাছাড়াও, দলের বেশিরভাগ সদস্য বয়সে তরুণ হওয়ায় দ্রুত দৌড়ে মাঠে বড় জায়গা কাভার করতে পারেন। এতে করে অনেক সময় বাউন্ডারিগুলো ৩ রানে, ৩ গুলোকে ২-এ এবং ২ গুলোকে ১-কে নামিয়ে আনা যায়। এছাড়াও বাউন্ডারি ক্যাচিং এবং স্লিপ ক্যাচিংয়েও দৃশ্যমান উন্নতি দেখা যাচ্ছে। এগুলো এক সময় বাংলাদেশের বড় দুর্বলতা ছিলো। স্লিপে ৫টা ক্যাচ গেলে ৪টাই ড্রপ হয়ে যেতো। স্লিপ ক্যাচিংয়ে উন্নতি না হলে ফাস্ট বোলিংয়ে উন্নতির পূর্ণাঙ্গ সুফল পাওয়া যায় না। আমাদের ফাস্ট বোলাররা যে এখন নিয়মিত উইকেট নিচ্ছেন, ম্যাচ উইনিং স্পেল করছেন, তার পেছনে স্লিপ এবং আউটফিল্ড ক্যাচিংয়ের একটা বড় ভূমিকা আছে।

Tanzid Hasan Tamim & Litton Das
ছবি: আইসিসি

ব্যাটিং

বাংলাদেশ যদি শেষ পর্যন্ত এবারের বিশ্বকাপে হতাশাজনক পারফর্মেন্স করে, তাহলে আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে সেটা ব্যাটিংয়ের জন্যই হবে। এই মুহূর্তে টপ অর্ডার (১-৩) এবং লোয়ার অর্ডারের (৮-১১) অবদান প্রায় শূন্য। লিটন ২০২১-২২ এ দারুণ দুটো মৌসুম কাটিয়েছেন। সেসময় ছবির মতো ব্যাটিং করেছেন। বড় ইনিংস খেললে তো কথাই নেই, ছোট ইনিংস খেললেও সেটা ইমপ্যাক্টফুল হয়েছে। কিন্তু সব ব্যাটারের পক্ষে তো আর একটানা ৪-৫ বছর ধরে ছবির মতো ব্যাটিং করা সম্ভব না – সবাই তো আর বিরাট কোহলি বা বাবর আজম নন। 'ল অফ অ্যাভারেজ'-এর নিয়ম অনুযায়ী সব ভালোর পর খারাপ সময় আসবেই। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, লিটনের ক্ষেত্রে সেই খারাপ সময়টা ঠিক বিশ্বকাপের আগেই এসে গেলো। লিটনের ফর্ম ভালো থাকলে হয়তো তামিমকে নিয়ে এত হাহুতাশ হতো না। তানজিদ তামিমের টেকনিক বেশ গোছানো, হাতে সব ধরণের শটই আছে, পজিটিভ ইন্টেন্টও আছে। তাই বলা যেতে পারে যে ভবিষ্যতে ভালো ব্যাটার হয়ে ওঠার সমস্ত রসদই তার মধ্যে আছে। কিন্তু যেহেতু সে একদমই তরুণ এবং অনভিজ্ঞ, তাই তার কাছ থেকে এই বিশ্বকাপে অনেকগুলো বড় ইনিংস আশা করাটা ঠিক হবে না।

ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আশার আলো শান্ত। ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে আছেন। একসময় অফস্টাম্পের বাইরে খুবই নড়বড়ে ছিলেন। সেই সমস্যা এখন অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছেন। ফাস্ট বোলিং বা স্পিন, দুই ধরনের বোলিংয়ের বিপক্ষেই সাবলীল মনে হচ্ছে কারণ ফুটওয়ার্ক চমৎকার হচ্ছে। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের অন্তত ৪-৫ জন সেট ব্যাটার পুল করে ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানায় ক্যাচ দিয়েছেন। শান্ত তার পুল শটগুলো থেকে বাউন্ডারি চাইছেন, ছক্কা না। একারণে তার পুল শটগুলো মাটিতে থাকছে এবং গ্যাপে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, নিজের উইকেটের মূল্য বুঝতে শিখেছেন। আমার মতে ওয়ান-ডাউন ব্যাটারের মধ্যে লিডারশীপ কোয়ালিটি থাকা উচিৎ কারণ তার ভূমিকা হলো ইনিংসটা ধরে রাখা। শান্তর মাঝে এই গুণটা আছে বলেই মনে হচ্ছে। বাংলাদেশ দলকে যদি ৩০০ ছাড়ানো স্কোর গড়তে হয়, তাহলে শান্তকে অবশ্যই একটা লম্বা ইনিংস খেলতে হবে। শান্ত তিনে, সাকিব চারে, হৃদয় পাঁচে, মুশফিক ছয়ে, মাহমুদুল্লাহ সাতে এবং মিরাজ আটে – এটাই বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের "কোর" বা মূল শক্তির জায়গা। এদের মধ্যে অন্তত ৩ জন যদি বড় স্কোর পান, তাহলে বাংলাদেশের রান ৩০০'র কাছাকাছি যেতে পারবে। আশার কথা হলো, মিডল এবং লোয়ার মিডল অর্ডার কমবেশি ফর্মে আছে। তবে প্রতি ম্যাচেই তো আর মিডল অর্ডার ভালো করবে না। তাই আমার ধারণা, 'ল অফ অ্যাভারেজ'-এর নিয়মে বাংলাদেশের ব্যাটিং সর্বোচ্চ ৩-৪ ম্যাচে ভালো হবে। সেই ম্যাচগুলোতে যদি বোলাররা ক্লিক করেন, তাহলে বাংলাদেশ জিততে পারবে।

সম্ভাব্য টিম কম্বিনেশন

অবস্থা#১: ভালো ব্যাটিং উইকেট, ট্রু বাউন্স, প্রতিপক্ষ দলে বাঁহাতি ব্যাটার কম

কম্বিনেশন: লিটন, তানজিদ, শান্ত, সাকিব, হৃদয়, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ, তানজিম, তাসকিন, শরিফুল, মাহমুদ

অবস্থা#২: ভালো ব্যাটিং উইকেট, ট্রু বাউন্স, প্রতিপক্ষ দলে কয়েকজন বাঁহাতি ব্যাটার আছেন

কম্বিনেশন: লিটন, মিরাজ, শান্ত, সাকিব, হৃদয়, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ, মেহেদী, তাসকিন, শরিফুল, মাহমুদ

অবস্থা#৩: স্লো উইকেট, টার্ন আছে, প্রতিপক্ষ দলে কয়েকজন বাঁহাতি ব্যাটার আছেন

কম্বিনেশন: লিটন, মিরাজ, শান্ত, সাকিব, হৃদয়, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ, মেহেদী, শরিফুল, মাহমুদ, মোস্তাফিজ

অবস্থা#৪: স্লো উইকেট, টার্ন আছে, প্রতিপক্ষ দলে বাঁহাতি ব্যাটার কম

কম্বিনেশন: লিটন, তানজিদ, শান্ত, সাকিব, হৃদয়, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ, মেহেদী, নাসুম, শরিফুল,মোস্তাফিজ

পরিশেষ

মাঠে যিনি অধিনায়কত্ব করেন, ক্রিকেটে তাঁর বিরাট ভূমিকা আছে। অন্য আর কোনো খেলায় সম্ভবত অধিনায়কের এত ভূমিকা নেই। সাকিবের ক্রিকেট মস্তিষ্ক নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বহু বছর ধরে ব্যাটে-বলে দলের সেরা পারফর্মার। আমার কাছে মনে হয় নিজে ভালো খেললে অন্যদের কাছ থেকে ১১০-১২০% বের করে আনা সহজ। তাছাড়া, মাঠে চাপ নেয়ার একটা বিষয়ও আছে যেটা কিনা সাকিব অন্যদের থেকে অনেক ভালো পারে কারণ বহু বছর ধরে নানা দেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের সাথে চাপের মধ্যে পারফর্ম করে করে সাকিবের স্নায়ূ ভীষণ শক্ত হয়ে গেছে। সেই হিসেবে, বাংলাদেশ দল সেরা অধিনায়ক নিয়েই যাচ্ছে। শান্তকেও মনে হয় ভবিষ্যতে অধিনায়কত্ব করার ব্যাপারে আগ্রহী। অনেক বছর আগে থেকেই তাকে জাতীয় দলের পরবর্তী নেতা হিসেবে গ্রুম করা হচ্ছে। সেই হিসেবে, বাংলাদেশ দল সেরা সহঅধিনায়ক নিয়েই যাচ্ছে। লিটন কখনোই তেমন খুশিমনে অধিনায়কত্ব নেয়নি। সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেলে হয়তো সে আরেকটু মুক্তভাবে খেলতে পারবে, যা আখেরে দলের জন্যই ভালো হবে।

লেখক,  কমিউনিকেশন বিশেষজ্ঞ

Comments