আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

ভারত ম্যাচের ভেন্যু পুনেই যখন বাংলাদেশের আরেক প্রতিপক্ষ

অতীত বলছে, পুনেতে রানের বন্যা বয়ে যাওয়ার সুযোগ দিবে পিচ, এমন সম্ভাবনাই প্রবল। সেক্ষেত্রে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভারতের সঙ্গে ‘প্রতিপক্ষ’ ম্যাচের ভেন্যু পুনে— দুটিকেই সামলাতে হবে বাংলাদেশকে!

ভারত ম্যাচের ভেন্যু পুনেই যখন বাংলাদেশের আরেক প্রতিপক্ষ

বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল
ছবি: একুশ তাপাদার

ধর্মশালার যে আউটফিল্ড, সেটা ক্রিকেটারদের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল ভয়ের কারণ। বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে আউটফিল্ড নিয়ে হয় প্রচুর সমালোচনা। সেখানে খেলেও চোটমুক্ত থাকতে পারায় ম্যাচশেষে ইংল্যান্ডের স্যাম কারান জানিয়েছিলেন স্বস্তির কথা। বাজে আউটফিল্ডের কারণে ওই ভেন্যুকে হয়তো বিশ্বকাপের দলগুলোর জন্য একরকমের 'প্রতিপক্ষ' বলা যেতে পারে। কিন্ত আলাদা করে পুনের মাঠ কেন বাংলাদেশের 'প্রতিপক্ষ'?

পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম সম্পর্কে কিছু তথ্যে নজর দেওয়া যাক। এই মাঠের চেয়ে হাই-স্কোরিং ভেন্যু পৃথিবীতে কমই আছে! অন্তত পাঁচ ওয়ানডে খেলা হয়েছে বিশ্বের যেসব ভেন্যুতে, তার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান রেট পুনেতে। সেখানে সাত ম্যাচে ওভারপ্রতি রান এসেছে ৬.০৯ করে। ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে রান রেট সর্বোচ্চ— ৬.৩১।

বুঝতেই পারছেন, কতটা দ্রুত রান ওঠে পুনের মাঠে। তুলনামূলক ছোট বাউন্ডারির সঙ্গে ব্যাটিং-স্বর্গ উইকেট মিলিয়ে ব্যাটাররা পার করেন উপভোগ্য সময়। অন্তত পাঁচ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হওয়া বিশ্বের সকল ভেন্যুর মধ্যে পুনেতে ব্যাটাররা রান তুলেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটে। পুনের ৯৭.৪৮ স্ট্রাইক রেট শীর্ষে থাকা ইন্দোরের (১০০.২৫ স্ট্রাইক রেট) চেয়ে সামান্য কম।

হোলকার স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচ নেই। ভারতের মাটিতে এবারের আসরে তাই পুনেকেই সবচেয়ে হাই-স্কোরিং ভেন্যু বলা যায়। সেখানে সবশেষ ওয়ানডে হয়েছিল ২০২১ সালে। ভারত-ইংল্যান্ডের ওই সিরিজে স্রেফ রানের স্রোত বয়ে যায়!

কেন ভেন্যু হিসেবে পুনে বাংলাদেশের 'প্রতিপক্ষ', এবার সে প্রসঙ্গে আসা যাক। কিছুটা অনুমান করতে পারছেন হয়তো। হ্যাঁ, ব্যাটিং উইকেটে বাংলাদেশের অনভ্যস্ততার নানান দিক থেকে!

রানপ্রসবা যে মাঠে স্কোরবোর্ডে তিনশ তোলা হাতের মোয়া, সেখানে খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু এই সময়ের ক্রিকেটে এসেও নিয়মিত তিনশ রান করতে অভ্যস্ত নয় তারা। তাছাড়া, এত ভালো ব্যাটিং উইকেটে বাংলাদেশ দল খেলে না নিয়মিত। তাই মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপার এসে যায়। ধারাবাহিকভাবে এত ভালো ব্যাটিং পিচে না খেলা বাংলাদেশের জন্য পুনে তাই চ্যালেঞ্জ।

পুনেতে শেষ তিন ওয়ানডের ছয় ইনিংসের মধ্যে পাঁচটিতেই রান হয়েছে ৩১৫-এর বেশি। সব মিলিয়ে হওয়া সাত ম্যাচে পাঁচবার প্রথমে ব্যাট করা দল তিনশ ছাড়িয়েছে। আর সেই লক্ষ্য তাড়ায় তিনবার পরে ব্যাট করা দলও তিনশ রান তুলেছে। তারা সফল হয়েছে দুবার, একবার ব্যর্থ।

বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ— ভালো ব্যাটিং উইকেটেও বড় রান করতে তাদের দশা বেহাল হয়ে যায়। সেটা চট্টগ্রামের ব্যাটিং-সহায়ক পিচ হোক কিংবা রাওয়ালপিন্ডি, ধর্মশালা। সবখানেই সাম্প্রতিককালে প্রতিপক্ষ তিনশর বেশি রানের স্কোর যেখানে গড়েছে, বাংলাদেশ সেখানে ব্যর্থ হয়েছে। ফ্ল্যাট পিচে আগে নেমে বড় স্কোর গড়েই যেন প্রতিপক্ষ দলগুলো বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়!

মরার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো বাংলাদেশের ব্যাটিং সম্প্রতি ডুব দিয়ে আছে ব্যর্থতার সাগরে। ব্যাট হাতে মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারছে না তারা। অলআউট হওয়ার পুরনো ব্যাধিই নতুন করে ফিরেছে।

হাই-স্কোরিং ভেন্যু বাংলাদেশের বাড়তি চ্যালেঞ্জ শুধু ব্যাটিংয়ের কারণেও নয়। বোলিংয়েও বিপক্ষ দলের ব্যাটারদের আটকাতে সংগ্রাম করতে হয় বাংলাদেশের বোলারদের। তাছাড়া, হাই-স্কোরিং ম্যাচের চাপ থাকে অন্যরকম। সেরকম চাপের মধ্য দিয়ে ধারাবাহিকভাবে যায় না বাংলাদেশ। হাই-স্কোরিং ম্যাচ হলেই তাই বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা কমে যায় অনেক।

অতীত বলছে, পুনেতে রানের বন্যা বয়ে যাওয়ার সুযোগ দিবে পিচ, এমন সম্ভাবনাই প্রবল। সেক্ষেত্রে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভারতের সঙ্গে 'প্রতিপক্ষ' ম্যাচের ভেন্যু পুনে— দুটিকেই সামলাতে হবে বাংলাদেশকে!

Comments

The Daily Star  | English

Central bank at odds with BPO over Nagad’s future

The discord became apparent after Faiz Ahmed Taiyeb, special assistant to the chief adviser with authority over the Ministry of Posts, Telecommunications and IT, sent a letter to the BB governor on May 12 and posted the letter to his Facebook account recently

6h ago