শ্রীলঙ্কাকে বড় লক্ষ্যই ছুঁড়ে দিয়েছে ভারত
ভারতের তিন ব্যাটার -শুবমান গিল, বিরাট কোহলি এবং শ্রেয়াস আইয়ার পেতে পারতেন সেঞ্চুরি। সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত হতাশ হতে হয়েছে তাদের। তবে কাজের কাজটা ঠিকই করে দিয়েছেন তারা। এই তিন ব্যাটারের ফিফটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বড় পুঁজিই দাঁড় করিয়েছে স্বাগতিকরা।
বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আইসিসি বিশ্বকাপে নিজেদের সপ্তম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৫৭ রান করেছে ভারত। অর্থাৎ জিততে হলে বিশ্বকাপে রান তাড়ার নতুন রেকর্ড গড়তে হবে শ্রীলঙ্কাকে।
এদিন টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় শ্রীলঙ্কা। দিলশান মাদুশাঙ্কার করা ইনিংসের প্রথম বলেই চার মেরে শুরু করেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। কিন্তু পরের বলেই পাল্টা আঘাত হানেন মাদুশাঙ্কা। বোল্ড করে দেন ভারতীয় অধিনায়ককে। তাতে ভালো সূচনাও পায় লঙ্কানরা। কিন্তু নিজেদের ভুলেই তার সদ্ব্যবহার করতে পারেনি তারা।
অধিনায়কের বিদায়ের পর আরেক ওপেনার শুবমান গিলকে নিয়ে দলের হাল ধরেন বিরাট কোহলি। মাদুশাঙ্কার করা পঞ্চম ওভারে টানা দুই বলে বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খোলেন গিল। পঞ্চম বলে সোজা মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু লোপ্পা ক্যাচ মিস করে বসেন মাদুশাঙ্কা। গিল তখন ব্যাটিং করছিলেন ৮ রানে।
আর দুশমান্থা চামিরার করা পরের ওভারের প্রথম ওভারে জীবন পান কোহলি। ফ্লিক করতে গেলে তিনিও বোলারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু সে সুযোগ লুফে নিতে পারেননি চামিরা। ফলে তিন বলের ব্যবধানে জীবন পান ভারতের দুই ব্যাটারই। আর জীবন পেয়ে দারুণ ব্যাটিং শৈলী দেখান তারা। গড়েন ১৮৯ রানের দারুণ এক জুটি। মূলত এই জুটিতেই বড় পুঁজির ভিত পেয়ে যায় ভারত।
গিলকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন সেই মাদুশাঙ্কাই। তার স্লোয়ার বাউন্সে বল আপার কাট করতে গেলে উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসের গ্লাভসে ধরা পড়েন এই ওপেনার। ফলে ৮ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন গিল। ৯২ বলে ১১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৯২ রান করেন এই ওপেনার।
গিলের মতো কোহলিকেও হতাশ করেন মাদুশাঙ্কা। যেভাবে ব্যাটিং করছিলেন তাতে মনে হয়েছিল শচীন টেন্ডুলকারের ৪৯তম সেঞ্চুরি রেকর্ড শচীনের মাঠেই ছুঁয়ে ফেলবেন কোহলি। তবে ব্যক্তিগত ৮৮ রানে মাদুশাঙ্কার কাটারে শর্ট কভারে নিসাঙ্কার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। ৯৪ বলে ১১টি চারের সাহায্যে সাজান নিজের ইনিংস।
তবে এরমধ্যেই দুটি কীর্তি গড়েন কোহলি। বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ক্রিকেটার কুমার সাঙ্গাকারা ও বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নন-ওপেনার হিসেবে সর্বাধিক ১২টি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলার রেকর্ড ভেঙে দেন তিনি। এদিন লঙ্কানদের বিপক্ষে ফিফটি তুলে নেওয়ায় কোহলির ফিফটি সংখ্যা দাঁড়ালো ১৩'তে। নতুন এই কীর্তি গড়তে কোহলির প্রয়োজন হয়েছে ৩৩ ইনিংস।
এছাড়া চলতি বছরে হাজারও এদিন পূরণ করেছেন কোহলি। তাতে পেছনে ফেলে দেন শচীন টেন্ডুলকারকে। এ নিয়ে আটবার এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে হাজার রান করলেন কোহলি। অর্থাৎ এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে সবচেয়ে বেশিবার হাজার রান করা খেলোয়াড় এখন তিনি। এর আগে ২০১৯ সালের ক্যালেন্ডার ইয়ারে হাজার রান করে শচীনের সাতবারের রেকর্ড ছুঁয়েছিলেন তিনি।
কোহলির বিদায়ের পর লোকেশ রাহুলের সঙ্গে ৬০ রানের জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন শ্রেয়াস আইয়ার। ব্যক্তিগত ২১ রানে চামিরার দ্বিতীয় স্বীকার হন রাহুল। এরপর শ্রেয়াসকে খুব বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি সূর্যকুমার যাদব। তবে রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে ৫৭ রানের আরও একটি দারুণ জুটি গড়ে মাদুশাঙ্কার পঞ্চম শিকার হন শ্রেয়াস। ৫৬ বলের বিধ্বংসী ইনিংসে ৩টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৮৮ রান করেন এই ব্যাটার। শেষ দিকে ২৪ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন জাদেজা।
শ্রীলঙ্কার হয়ে এদিন ১০ ওভার বল করে ৮০ রানের খরচায় ৫টি উইকেট নিয়েছেন মাদুশাঙ্কা।
Comments