নবায়নযোগ্য শক্তির সন্ধানে গভীরতম গর্ত খুঁড়বে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি মেশিনের মাধ্যমে বিশ্বের গভীরতম গর্ত খনন করে পৃথিবীর জন্য পর্যাপ্ত নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের চেষ্টা করছে বলে জানানো হয়েছে ইনডিপেনডেন্টডটকমডট ইউকের এক প্রতিবেদনে।
নবায়নযোগ্য শক্তির সন্ধানে বিশ্বের গভীরতম গর্ত খুঁড়বে যুক্তরাষ্ট্র
ছবি: কোয়ায়েস এনার্জি

যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি মেশিনের মাধ্যমে বিশ্বের গভীরতম গর্ত খনন করে পৃথিবীর জন্য পর্যাপ্ত নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের চেষ্টা করছে বলে জানানো হয়েছে ইনডিপেনডেন্টডটকমডট ইউকের এক প্রতিবেদনে।

বিশ্বের শক্তির ঘাটতি পূরণে মাটির নিচে থাকা তাপশক্তির পর্যাপ্ত সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কোয়েস এনার্জি।

২০ কিলোমিটার মাটির নিচে পৌঁছানোর রেকর্ড গড়তে ইতোমধ্যে ৬৩ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে কোয়েস এনার্জি। যা এখন পর্যন্ত খোঁড়া গভীর কোনো গর্তের প্রায় দ্বিগুন। যেখানে তাপমাত্রা ৫০০ সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছেছে।

কোয়ায়েস এনার্জি এই প্রকল্পটিকে 'বিকল্প নয়, প্রয়োজনীয়তা' হিসেবে উল্লেখ করেছে। সেখান থেকে যে শক্তি পাওয়া যাবে তা জীবাশ্ম জ্বালানির মতো শক্তিশালী এবং সৌর, বায়ু বা হাইড্রোর মতো পরিষ্কার বলে জানানো হয়েছে।

বিশ্বের গভীরতম গর্ত খননকারী যন্ত্রটির নির্মাতাদের মতে, প্রকল্পটি সফল হলে তা সম্ভাব্যভাবে পর্যাপ্ত নবায়নযোগ্য শক্তির দরজা খুলে দিতে পারে যা পুরো গ্রহের জন্য শক্তির যোগান দিতে পারবে।

সম্প্রতি টেডএক্স বোস্টনে কোয়েস এনার্জির সহপ্রতিষ্ঠাতা ম্যাট হাউড বলেন, 'আমাদের পুরো গ্রহের বার্ষিক শক্তির যে চাহিদা রয়েছে তার তুলনায় ভূগর্ভে সঞ্চিত তাপের মোট শক্তির পরিমাণ এক বিলিয়ন গুণ বেশি। এই শক্তির এক ভগ্নাংশ পরিমাণ অর্জন করা সম্ভব হলে সেটি আমাদের অদূর ভবিষ্যতের শক্তির চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট হবে।'

বর্তমানে বিশ্বের গভীরতম গর্তের রেকর্ডটি ধরে রেখেছে আর্কটিক সার্কেলের কোলা বোরহোল, যার গভীরতা ১২ দশমিক ২ কিলোমিটার। ইউএসএসআর বা সোভিয়েত ইউনিয়নের এটি ড্রিল করতে ২ দশকেরও বেশি সময় লেগেছিল। তবে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই প্রকল্পটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। 

কোয়েস এনার্জি প্রথমে পৃথিবীপৃষ্ঠের কাছাকাছি থাকা নরম শিলাগুলোকে খনন করে। পরবর্তীতে তারা প্রচলিত ড্রিল বিটগুলোকে মিলিমিটার তরঙ্গ শক্তি দ্বারা প্রতিস্থাপিত করে। যা এটির মুখোমুখি হওয়া কঠিন শিলাগুলোকে গলিয়ে ফেলে এবং বাষ্পীভূত করে।

এই কৌশলটি ১৫ বছর আগে এমআইটির গবেষকরা তৈরি করেছিলেন। কৌশলটি অবশেষে ল্যাব থেকে বের হয়ে এখন প্রয়োগের জন্য প্রস্তুত।

তবে রেকর্ড গভীরতায় পৌঁছানোর আগে বেশ কিছু বাধা এখনো রয়ে গেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি চ্যালেঞ্জ হলো, শিলা বাষ্প হয়ে গেলে বোরহোল বা মাটির গভীর সংকীর্ণ গর্ত থেকে ছাই অপসারণের কাজটি। 

হাউড বলেন, 'আমাদের বর্তমান পরিকল্পনা হলো আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মাঠপর্যায়ে প্রথম গর্তগুলো ড্রিল করা। আরও গভীরতায় ড্রিল করার জন্য প্রযুক্তির অগ্রগতি চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সেই সঙ্গে আমরা অগভীর পরিবেশে আমাদের প্রথম বাণিজ্যিক জিওথার্মাল প্রকল্পগুলোও অন্বেষণ করতে থাকব।'

কোয়েস এনার্জির দাবি, প্রকল্পটি যদি সফল হয় তবে পৃথিবীর যেকোনো দেশের শক্তির দিক দিয়ে স্বাধীন হয়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রযুক্তিটি বাণিজ্যিকীকরণের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে ৬৩ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি সংগ্রহ করেছে।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিপেন্ডেন্ট

গ্রন্থনা: আহমেদ বিন কাদের অনি

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago