চ্যাটজিপিটি ছাড়াও যেসব এআই সফটওয়্যার আনছে ওপেনএআই

ওপেনএআই-এর এই প্রযুক্তিটি বিভিন্ন মহলে বিতর্কের জন্ম দেয়। তার কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ছবি তৈরি করতে গিয়ে এই টুলটি কপিরাইটযুক্ত ও আসল শিল্পীদের আঁকা ছবিও ব্যবহার করছে।  
চ্যাটজিপিটি ছাড়াও যেসব এআই সফটওয়্যার আনছে ওপেনএআই
ছবি: সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত চ্যাটবট হিসেবে চ্যাটজিপিটির ব্যবহার শুরু হওয়ার পর খুব অল্প সময়ের মধ্যে সেটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ওপেন এআই নামের একটি প্রতিষ্ঠান চ্যাটজিপি উদ্ভাবন করেছে। যাদের চ্যাটজিপিটি ছাড়াও রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি পণ্য।   

কয়েক মাস আগে ওপেনএআই তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ছবি বা আর্ট তৈরির সফটওয়্যার ডাল-ই সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১৫ লাখ ব্যবহারকারী এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করেন। 

ওপেনএআই-এর এই প্রযুক্তিটি বিভিন্ন মহলে বিতর্কের জন্ম দেয়। তার কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ছবি তৈরি করতে গিয়ে এই টুলটি কপিরাইটযুক্ত ও আসল শিল্পীদের আঁকা ছবিও ব্যবহার করছে।  

তবে বর্তমানে চ্যাটজিপিটি হচ্ছে ওপেনএআই-এর বাজির ঘোড়া। এই চ্যাটবটটির ব্যাপক সাফল্যে ওপেনএআই এখন সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে। একনজরে ওপেনআইএর আরও কিছু এআই পণ্য সম্পর্কে জেনে নেই-

ডাল-ই

চ্যাটজিপিটি উন্মুক্ত করার মাত্র কয়েকমাস আগে ওপেনএআই তাদের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আর্ট জেনারেটর ডাল-ই ব্যবহারের জন্য 'ওয়েটলিস্ট' ব্যবস্থা তুলে দিয়েছে। অর্থাৎ, আগে এই সফটওয়্যারটি ব্যবহারের জন্য যে আপেক্ষমাণ তালিকা ছিল, সেটি এখন আর নেই। যে কেউ যেকোনো সময় এটি ব্যবহার করতে পারবেন। কী ধরনের ছবি তৈরি করতে চান, সেটি শুধু লিখে দিলেই এআই টুলটি নিখাঁতভাবে মুহূর্তের মধ্য ছবিটি তৈরি করে দেবে। যেকোনো অবাস্তব ছবিও এটি মুহুর্তেই তৈরি করে দিতে সক্ষম। ধরুন আপনি ডাল-ই-কে 'হাতি আকাশে উড়ছে আর নিচে নীল পানির নদী প্রবাহিত হচ্ছে' এমন একটি ছবি তৈরি করতে বললেন। আমরা সবাই জানি বাস্তবে এমন কোনো মুহূর্তের অস্তিত্ব নেই। কিন্তু ডাল-ই মুহূর্তের মধ্যেই আপনার নির্দেশনা অনুসারে ছবিটি তৈরি করে দেবে। 

ছবি: সংগৃহীত

'হাতি আকাশে উড়ছে আর নিচে নীল পানির নদী প্রবাহিত হচ্ছে' এমন ছবি তৈরির নির্দেশ দেওয়ার পর ডাল-ই এই ছবিগুলো তৈরি করেছে। ছবি: সংগৃহীত

হুইসপার

হুইসপার হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় 'স্পিচ রিকগনিশন মডেল', যার সাহায্যে কোনো বক্তব্যকে টেক্সটে রূপান্তর করা যায়। পাশাপাশি এটি সহজেই কোন ভাষায় বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে সেটি বুঝতে পারে এবং বক্তব্যের টেক্সটকে ইংরেজিতে অনুবাদও করতে পারে। 

ওপেনএআই এর তথ্য অনুসারে এই মডেলটিকে ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ৬ লাখ ৮০ হাজার ঘণ্টার বহু ভাষা ও কাজের ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ওপেনএআই এই টুলটির সক্ষমতার একটি উদাহরণ তাদের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করেছে যেখানে একটি কে-পপ গানের ৩০ সেকেন্ডের খুব দ্রুত বলা একটি লিরিককে টেক্সটে রূপান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে এই টুলটি ৯৬টি ভাষা বুঝতে সক্ষম। খুব কড়া অ্যাকসেন্টের উচ্চারণও এটি বুঝতে পারে। 

কোডেক্স

ন্যাচারাল ল্যাংগুয়েজকে কোডে রূপান্তর করার এআই টুল হচ্ছে কোডেক্স। ওপেনআই-এর তথ্য অনুসারে কোডেক্স পাইথন ল্যাংগুয়েজে কাজ করতে সবচেয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ, তবে এটি এক ডজনেরও বেশি প্রোগ্রামং ভাষায় কাজ করতে পারে। 

ব্যবহারকারীর যেকোনো নির্দেশকে কোডিংয়ের ভাষায় বর্ণনা করে দেবে এই মডেল। ওপেনএআই বলছে, কোডেক্স হচ্ছে একটি 'জেনারেল-পারপাস প্রোগ্রামিং মডেল', অর্থাৎ, এটি বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন নির্দেশের বিপরীতে কোড তৈরি করতে পারবে। তার মানে হচ্ছে কোডেক্সের সাহায্যে যেকোনো প্রোগ্রামিং বিষয়ক কাজ করা সম্ভব। 

এই টুলটি জিপিটি-৩ মডেলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এবং ইন্টারনেটে উন্মুক্ত সোর্স থেকে সংগৃহীত শত শত কোটি কোডিং লাইনের সাহায্যে এটিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। 

সূত্র: ওপেনএআই, বিজনেস ইনসাইডার

গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল

 

Comments