ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ব্ল্যাকবেরি

দীর্ঘ সময় পর মুনাফার মুখ দেখেছে ব্ল্যাকবেরি। তবে এখন আর ফোন নয়, বরং গ্রাহকদের সাইবার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সেবা দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।
যুক্তরাষ্ট্রে ব্ল্যাকবেরির কার্যালয়। ফাইল ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাষ্ট্রে ব্ল্যাকবেরির কার্যালয়। ফাইল ছবি: রয়টার্স

সম্প্রতি তথ্য প্রযুক্তি জগতের এককালের সাড়া জাগানো প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকবেরি তাদের সর্বশেষ ত্রৈমাসিক আর্থিক বিবরণ প্রকাশ করেছে। দীর্ঘদিন লোকসানে থেকে অবশেষে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। 

মোবাইল ইন্টারনেটের প্রথম যুগে সুরক্ষিত ইমেইল সুবিধা এনে দিয়েছিল ব্ল্যাকবেরি মোবাইল ডিভাইস, যা বেশ জনপ্রিয়তা পায়।  তবে নতুন নতুন ডিভাইস, অপারেটিং সিস্টেম ও দ্রুতগতির মোবাইল ডাটার আবির্ভাবে ব্ল্যাকবেরির জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে।

এক পর্যায়ে মোবাইল ডিভাইস নির্মাণ বন্ধ করে দিয়ে অন্যান্য সেবায় মনোযোগ দেয় ব্ল্যাকবেরি। 

রয়টার্স জানিয়েছে, দীর্ঘ সময় পর মুনাফার মুখ দেখেছে ব্ল্যাকবেরি। তবে এখন আর ফোন নয়, বরং গ্রাহকদের সাইবার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সেবা দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। 

ক্রমবর্ধমান অনলাইন হুমকির প্রেক্ষাপটে সাইবার নিরাপত্তা সেবার চাহিদা বেড়েছে। এ বিষয়টিকে ব্ল্যাকবেরির সাম্প্রতিক সাফল্যের নেপথ্যের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিশ্লেষকরা।

গত এক বছরে সার্বিকভাবে আইটি খাতে প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ কমিয়ে আনলেও সাইবার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ব্যয় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন দেশের সরকার হ্যাকারদের বিরুদ্ধে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে এই খাতে বাড়ছে বিনিয়োগ।

গত কয়েক মাসে এমজিএম রিসোর্টস ইন্টারন্যাশনাল এবং সিজার্স এন্টারটেইনমেন্টের মতো বড় ক্যাসিনো প্রতিষ্ঠানগুলো সাইবার হামলার শিকার হয়েছে। যার ফলে অন্যান্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও সাইবার নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতে বাধ্য হয়েছে।

এক সময় সারা বিশ্বে দাপুটে পদচারণা ছিল এসব ব্ল্যাকবেরি ডিভাইসের। ছবি: সংগৃহীত
এক সময় সারা বিশ্বে দাপুটে পদচারণা ছিল এসব ব্ল্যাকবেরি ডিভাইসের। ছবি: সংগৃহীত

ডিসেম্বরের শুরুতে ব্ল্যাকবেরি তাদের ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি) ব্যবসায়ের জন্য আইপিও পরিকল্পনা বাতিল করেছে।

তবে আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ব্যবসাকে আরও গতিশীল করতে শিগগির কানাডীয় প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকবেরি আইওটি ও সাইবার নিরাপত্তাকে আলাদা বিভাগ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। এতদিন দুটি ব্যবসা একই বিভাগের অধীনে ছিল।

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জন জিম্যাটেও বলেছেন, 'আমাদের ব্যবসাগুলোর ওপর আলাদা করে নজর দেওয়া হবে এবং প্রয়োজন সামঞ্জস্য আনার উদ্যোগ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি চতুর্থ প্রান্তিক শেষে আমাদের ব্যবসা পরিচালনার খরচ আরও কমিয়ে আনতে পারব'।

ব্ল্যাকবেরিকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির কর্পোরেট কাঠামো সহজ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে প্রতিটি ব্যবসায়িক ইউনিট স্বাধীনভাবে এবং লাভজনকভাবে চলতে পারে।

চতুর্থ প্রান্তিকে ১৫ থেকে ১৬ কোটি ডলার আয়ের আশা করছে ব্ল্যাকবেরি।

সূত্র: রয়টার্স

গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল

Comments