পদোন্নতিতে পরীক্ষা-কোটা প্রসঙ্গ: প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া

সচিবালয়। ছবি: সংগৃহীত

উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কর্মকর্তাকে সুযোগের সুপারিশ করবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।

এ তথ্য জানার পর প্রশাসন ক্যাডারের জুনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সংস্কার কমিশনের এমন উদ্যোগ প্রশাসন ক্যাডারকে দুর্বল করবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

দেশে ২৬টি ক্যাডার সার্ভিস আছে। বর্তমানে উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডার ৭৫ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্যাডারের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা পদোন্নতি পান।

গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে জানান, পদোন্নতির উল্লিখিত হার ৫০:৫০ করার প্রস্তাব করবে কমিশন।

তার এ মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রাতে রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে জরুরি বৈঠক ডাকে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। এতে প্রশাসন ক্যাডারের বিভিন্ন ব্যাচের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মাহবুবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে পদোন্নতি সংক্রান্ত ঘোষণা গণমাধ্যমে জানার পর প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা মর্মাহত হয়েছেন। মাঠ পর্যায়ের জুনিয়র কর্মকর্তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। তাই বিষয়টি নিয়ে করণীয় ঠিক করতে আমরা বৈঠকে বসেছিলাম। শিগগির এ বিষয়ে বিস্তারিত গণমাধ্যমে জানানো হবে।'

বৈঠকে উপস্থিত তিন কর্মকর্তার সঙ্গে গতকাল মধ্যরাতে কথা হয়েছে দ্য ডেইলি স্টারের। তাদের একজন জানিয়েছেন, 'প্রশাসন ক্যাডারকে দুর্বল করার জন্য অনেক আগে থেকেই ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এটা হওয়া উচিত নয়। যদি হয়, তাহলে রাষ্ট্র দুর্বল হবে।'

আরেক কর্মকর্তা বলেন, 'সংস্কার কমিশন প্রকৃত সংস্কারে হাত না দিয়ে ক্যাডার বৈষম্য দূর করার মিশনে নেমেছেন বলে মনে হচ্ছে। এতে কার্যত সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা হবে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।'

তিনি বলেন, '৭৫:২৫ আদালতে ফয়সালা হয়েছে। এ বিষয়ে সংস্কার কমিশন হস্তক্ষেপ করতে পারে না।'

সরকারি চাকরিতে বর্তমানে বিদ্যমান ২৬টি ক্যাডারের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া অন্য ক্যাডারগুলোর দাবি, উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি শতভাগ পরীক্ষার মাধ্যমে হওয়া উচিত।

তাদের যুক্তি, উপসচিব বা তদূর্ধ্ব পদগুলো সরকারের পদ। এখানে সব ক্যাডারের প্রতিযোগিতার সমান অধিকার আছে।

অন্যদিকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা মনে করেন, উপসচিবসহ তদূর্ধ্ব সব পদ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদ। এখানে ২৫ শতাংশ অন্যান্য ক্যাডারকে দেওয়ার মাধ্যমে তাদেরকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এখন যদি অর্ধেক পদই অন্য ক্যাডারদের জন্য সংরক্ষণ করা হয়, তাহলে সেটা তারা মানবেন না।

উপসচিব ও যুগ্মসচিব পদে পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতির বিষয়েও অনীহা প্রশাসন ক্যাডারের জুনিয়র কর্মকর্তাদের।

তারা বলছেন, মাঠ প্রশাসনে কর্মরত জুনিয়র কর্মকর্তারা রাত-দিন কাজ করেন, ঠিকমতো পরিবারকে সময় দিতে পারেন না। প্রতিবার পদোন্নতির জন্য পরীক্ষা দিতে হলে পড়াশোনার সময় কোথায়?

তবে পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতির ক্ষেত্রে আপত্তি নেই অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের।

এ বিষয়ে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা বলেন, অন্য ক্যাডারের বেশিরভাগ কর্মকর্তা অফিস টাইমে কাজ শেষ করেন। কিন্তু, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সেই সুযোগ নেই।

Comments

The Daily Star  | English
NSC shop rent scam in Dhaka stadiums

Shop rent Tk 3 lakh, but govt gets just Tk 22,000

A probe has found massive irregularities in the rental of shops at nine markets of the National Sports Council (NSC), including a case where the government receives as little as Tk 22,000 in monthly rent while as much as Tk 3 lakh is being collected from the tenant. 

19h ago